মালদা, 16 ডিসেম্বর: উচ্চশিক্ষার জগতে উত্তরবঙ্গকে নতুন দিশা দেখাতে চলেছে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় ৷ উত্তরবঙ্গের প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে পিএইচডি ও ফ্যাকাল্টিদের তথ্যপঞ্জি প্রকাশ করতে চলেছে এই বিশ্ববিদ্যালয় ৷ উত্তরবঙ্গের অন্য কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন তথ্যপঞ্জি নেই বলেই দাবি গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ৷
এর ফলে প্রথম থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কতজন পিএইচডি করেছেন তা জানা যাবে। কতজন ফ্যাকাল্টি ছিলেন তাঁদের সম্পর্কেও বিস্তারতি তথ্য জানা যাবে ৷ বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দিয়েই এই ব্যাপারে উদ্যোগ নিয়েছেন উপাচার্য পবিত্র চট্টোপাধ্যায় ৷ সেই কাজ অনেকটা এগিয়ে গিয়েছে বলে বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে খবর ৷ উপাচার্যের এহেন সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাচ্ছেন শিক্ষাবিদরা ৷ খুশি পড়ুয়ারাও ৷
গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়
2008 সালে পথ চলা শুরু করে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় ৷ গত 16 বছরে এখান থেকে অনেকে পিএইচডি করেছেন ৷ ফ্যাকাল্টির সংখ্যাও অনেক ৷ কিন্তু তাঁদের সঠিক সংখ্যা, নাম, কে কোন বিষয়ে পিএইচডি করেছেন, কত সালে করেছেন, কোন অধ্যাপকের অধীনে করেছেন কিংবা ফ্যাকাল্টিরা কী কাজ করেছেন, কোন পেপার পাবলিশ করেছেন, কতগুলি বিভাগীয় সেমিনারে অংশ নিয়েছেন, এসব একলপ্তে পাওয়া দুষ্করই নয়, কার্যত অসম্ভব ৷ কাজে যোগ দিয়েই এই বিষয়টি নিয়ে চিন্তাভাবনা শুরু করেন বর্তমান উপাচার্য ৷
তিনি পিএইচডি ও ফ্যাকাল্টিওয়ারি তথ্যপঞ্জি প্রকাশের উদ্যোগ নেন ৷ তার জন্য একটি কমিটি গঠন করেন ৷ সেই কমিটি কাজও শুরু করে দেন ৷ সেই কাজ অনেকটা এগিয়ে গিয়েছে ৷ কিছুদিনের মধ্যেই এই ডাইরেক্টরি বা তথ্যপঞ্জি প্রকাশ করা হবে বলে জানা গিয়েছে ৷ এই ডাইরেক্টরি থেকে যে কেউ এই দুই বিষয়ে সমস্ত তথ্য পেতে পারবেন ৷
গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় (নিজস্ব ছবি)
উপাচার্য ও শিক্ষাবিদ এবং পড়ুয়ারা কী বলছেন?
উপাচার্যবলেন, "আমাদের মনে হয়েছিল, বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি অ্যাওয়ার্ড হোল্ডারের পাশাপাশি ফ্যাকাল্টিদের একটি ডাইরেক্টরি থাকা প্রয়োজন ৷ তাতে এক মুহূর্তে তাঁদের যাবতীয় তথ্য সামনে আসবে ৷ সেই অনুযায়ী কাজ শুরু হয়েছে ৷ পিএইচডি ও ফ্যাকাল্টিদের যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করতে দু'টি পৃথক কমিটি গঠন করা হয়েছে ৷ কমিটির সদস্যরা কাজ শুরু করে দিয়েছেন ৷ আমরা আরও একটি বিষয়ে উদ্যোগ নিয়েছি ৷ এবার থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউজ লেটার প্রকাশ করা হবে ৷ এই নিউজ লেটারের মাধ্যমে যে কেউ নানা বিষয়ের যাবতীয় তথ্য পেয়ে যাবেন ৷"
জেলার বিশিষ্ট শিক্ষাবিদশক্তিপদ পাত্র বলেন, "এটা খুবই ভালো উদ্যোগ ৷ এর ফলে উৎসুক কেউ যে কোনও মুহূর্তে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি ও ফ্যাকাল্টি সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্য পেয়ে যাবেন ৷ শুধু তাই নয়, এই ডাইরেক্টরি প্রকাশিত হলে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম আরও বেশি দূর পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়বে ৷ অনেক স্কলার এখান থেকে পিএইচডি করতে উৎসাহী হবেন ৷"
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার বিশ্বজিৎ দাসের মতে, "এই ডাইরেক্টরি ভবিষ্যতের পড়ুয়া এবং গবেষকদের কাছে একটি ঐতিহাসিক দলিল হয়ে উঠবে ৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি ও ফ্যাকাল্টি সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য ওই ডাইরেক্টরিতে থাকবে ৷ দক্ষিণবঙ্গের কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন ডাইরেক্টরি থাকলেও উত্তরবঙ্গে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়েই এই ডাইরেক্টরি প্রথম প্রকাশিত হতে যাচ্ছে ৷ উপাচার্যের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাচ্ছি ৷"
উপাচার্যের এহেন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাচ্ছেন তৃতীয় সেমিস্টারের ছাত্রী অনসূয়া চক্রবর্তীও ৷ তিনি বলেন, "আমরা গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া ৷ এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কতজন পিএইচডি করেছেন, কোন কোন বিষয়ে পিএইচডি হয়েছে, ফ্যাকাল্টিরা কোন কোন পেপার পাবলিশ করেছেন, তা জানার কৌতুহল রয়েছে আমাদেরও ৷ এমন একটি ডাইরেক্টরি প্রকাশিত হলে আমরা এক লহমায় সবকিছু পেয়ে যাব ৷"