আসানসোল, 15 সেপ্টেম্বর: গ্রাম বাংলায় দুর্গাপুজো ঘিরে কত রকমেরই না নিয়ম আচার, কত অলৌকিক গল্পকথা, কত ইতিহাস ও পৌরাণিক উপাখ্যান । তেমনই আসানসোলের গাড়ুই গ্রামে দুর্গাপুজো একেবারেই ব্যতিক্রমী । প্রায় 500 বছরের প্রাচীন এই পুজো হয় 15 দিন ধরে । জিতাষ্টমীর পরের দিন নবমীতে মঙ্গলঘট প্রতিষ্ঠা দিয়ে শুরু হয় বোধন ৷ সেইদিন থেকে পুজো চলে দশমী পর্যন্ত । শুধু তাই নয়, সন্ধিক্ষণের সময়ে মা নিজের উপস্থিতি জানান দিয়ে যান । কখনও মায়ের হাত থেকে ফুল পড়ে যায়, কখনও বা আবার হাত থেকে পড়ে যায় অস্ত্র ।
আসানসোল পৌরনিগমের 20 নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত এই গাড়ুই গ্রাম । 19 নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে অবস্থিত প্রাচীন এই গ্রামে প্রায় 500 বছরের পুরনো পারিবারিক দুর্গাপুজো এটি । চট্টোপাধ্যায়, মুখোপাধ্যায় এবং বন্দ্যোপাধ্যায় এই তিন পরিবারের রয়েছে এই পুজোয় । প্রথমে যদিও একটি পুজো ছিল । পরবর্তীকালে পরিবার বিস্তৃত হওয়ায় মুখোপাধ্যায় এবং বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারের আরও দুটি আলাদা পুজো তৈরি হয়েছে । কিন্তু মূল এই প্রাচীন পুজোকে ঘিরেই মানুষের উন্মাদনা বেশি । এখনও এই মূল ও প্রাচীন পুজোর নবপত্রিকাকে স্নান করিয়ে নিয়ে আসার সময় সেই পালকিই আগে আসে ।
অন্য দুটো পুজোর নবপত্রিকা তারপরে আনা হয় । শুধু তাই নয়, সন্ধিক্ষণ থেকে বলিদান বা অন্যান্য সমস্ত কিছু নিয়মকানুন এই প্রাচীন মন্দিরে আগে হয়, তারপর গ্রামের অন্য দুটি মন্দিরে সেই নিয়ম মানা হয় । পারিবারিক সদস্য ও মন্দিরের পুরোহিত বিপত্তারণ চট্টোপাধ্যায় ও ধীরেন চট্টোপাধ্যায় বলেন, "প্রায় 500 বছরের পুরোনো এই পুজো । মন্দিরে অষ্টধাতুর মূর্তি রয়েছে । তা নিত্যপুজো হয় । যদিও পুজোয় দেবী দুর্গার মৃন্ময়ী মূর্তিও বানানো হয় । জিতা অষ্টমীর পরের দিন নবমী তিথি পড়লেই গাড়ুই গ্রামের এই প্রাচীন মন্দিরে দুর্গাপুজো শুরু হয়ে যায় । পুকুর থেকে নিয়ে আসা হয় মঙ্গলঘট । স্থাপন করা হয় মন্দিরের ভিতর ।"