দুর্গাপুর, 7 জুলাই: বেঙ্গালুরুতে নার্সিং নিয়ে পড়াশোনা করছিলেন দুর্গাপুরের কাঁকসা উত্তরপাড়ার মেয়ে দিয়া মণ্ডল ৷ তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়েছে শনিবার । বেঙ্গালুরু পুলিশ তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করেছে ৷ তাদের প্রাথমিক অনুমান, দিয়া আত্মহত্যা করেছেন । তবে এমন দাবি মেনে নিতে পারছেন না দিয়ার পরিবারের সদস্যরা ৷ তাই মেয়ের মৃত্যুর সঠিক তদন্তের দাবিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে কাতর আর্জি জানিয়েছে পরিবার ৷
বেঙ্গালুরুতে দুর্গাপুরের বাসিন্দা নার্সিং পড়ুয়ার রহস্যমৃত্যু ৷ (ইটিভি ভারত) অভাবের সংসারে দু’বছর আগে মেয়েকে কষ্ট করে বেঙ্গালুরুর বেসরকারি নার্সিং কলেজে পড়াশোনা করতে পাঠিয়েছিল পরিবার ৷ জানা গিয়েছে, শনিবার সন্ধ্যায় দিয়া মণ্ডলের মায়ের কাছে ফোন আসে ৷ ফোনে বলা হয়, দিয়ার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়েছে ৷ দাবি করা হয়, দিয়া আত্মহত্যা করেছেন ৷ কিন্তু, এ খবর মানতে পারছেন না দিয়ার মা ৷ মৃত্যুর খবর পাওয়ার কিছুক্ষণ আগেই, দিয়ার সঙ্গে তাঁর মায়ের ফোনে কথা হয় ৷ তাঁর বক্তব্য, দিয়ার সঙ্গে ফোনে কথা বলার সময় কোনও অস্বাভাবিকতা লক্ষ্য করেননি তিনি ৷
এর কিছুক্ষণের মধ্যেই মেয়ের মৃত্যুর খবর আসে। স্বাভাবিকভাবে এই সংবাদ মেনে নিতে পারছেন না পরিবারের সদস্যরা ৷ তাঁদের বক্তব্য, এর পিছনে অন্য কোনও রহস্য রয়েছে ৷ উল্লেখ্য, এই ঘটনায় রাহুল নামে পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রামের বাসিন্দা এক তরুণের নাম উঠে আসছে ৷ জানা গিয়েছে, ওই তরুণ দিয়ার সঙ্গে বেঙ্গালুরুর ওই কলেজেই পড়াশোনা করতেন ৷ দিয়া বাড়িতে জানিয়েছিলেন, সময় মতো সেমেস্টার ফি জমা দেওয়া নিয়ে, রাহুল তাঁর উপর চাপ তৈরি করতেন ৷ অভিযোগ, সময়ে ফি জমা না-করলে দিয়া পরীক্ষায় বসতে পারবে না ৷ এমন কথা বলে তাঁর উপর চাপ তৈরি করতেন রাহুল ৷
ফলে প্রশ্ন উঠেছে সেই মানসিক চাপেই কি দিয়া আত্মহত্যা করেছেন ? তবে, তা মানতে নারাজ দিয়ার মা ৷ তিনি দাবি করেছেন, দিয়া মানসিকভাবে যথেষ্ঠ দৃঢ় ৷ তিনি পরিবারের বাকিদের আশ্বস্ত করতেন ৷ দিয়ার বাবা দিল্লির হোটেল চাকরি করেন ৷ মেয়ের মৃত্যুর খবরে তিনি সেখান থেকে বেঙ্গালুরু পৌঁছেছেন ৷ কিন্তু, সুদূর বাংলা থেকে বেঙ্গালুরুতে মেয়ের রহস্যজনক মৃত্যু সম্পর্কে কিছুই জানতে পারছেন না তাঁর মা এবং পরিবারের বাকি সদস্যরা ৷ বেঙ্গালুরু পুলিশের দেওয়া তথ্যের বাইরে তাঁরা কিছুই জানেন না ৷
এই পরিস্থিতিতে, মেয়ের রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় রাজ্য সরকার তথা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে সাহায্য চেয়েছেন দিয়ার মা ৷ মেয়ের মৃত্যুর সঠিক কারণ জানতে রাজ্য প্রশাসনের সাহায্যের আর্জি জানিয়েছেন তিনি ৷ উল্লেখ্য, দুর্গাপুরের বাসিন্দা দিয়া নার্সিংয়ের পাশাপাশি, যোগ ব্যায়াম এবং তিরন্দাজিতে পারদর্শী ছিলেন ৷ ফলে একজন ক্রীড়াবিদ হিসেবে এত সহজে ভেঙে পড়ার মেয়ে তিনি নন, বলেই দাবি আত্মীয়দেরও ৷ জানা গিয়েছে, বেঙ্গালুরু পুলিশ দিয়ার দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে ৷ তাঁর বাবা সেখানে পৌঁছালে, ময়নাতদন্ত শুরু হবে ৷