মালদা, 5 ডিসেম্বর: এখন শুধু দুই ছেলের ফেরার অপেক্ষা ৷ তাঁরা দিল্লি থেকে ফিরলেই জন্মদিনের আয়োজনে মেতে উঠবে 104 বছর বয়সি বৃদ্ধ রসিকচন্দ্র মণ্ডলের পরিবার ৷ কিন্তু নির্দিষ্ট দিনে সেই আয়োজন করা যাবে কি না, তা নিয়ে ধন্ধে পরিবারের সকলে ৷ কারণ, যে দুই ছেলে দিল্লিতে শ্রমিকের কাজে রয়েছেন, তাঁরা 26 ডিসেম্বরের আগে বাড়ি ফিরতে পারবেন কি না, এখনও নিশ্চিত নয় ৷
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে মঙ্গলবার মালদা জেলা সংশোধনাগার থেকে অন্তর্বর্তী জামিন পেয়েছেন খুনের আসামি রসিকচন্দ্র মণ্ডল ৷ জমি বিবাদের জেরে গুলি করে ছোট ভাই সুরেশকে খুন করার অভিযোগ উঠেছিল তাঁর বিরুদ্ধে ৷ 1988 সালের সেই ঘটনায় জেলে যান তিনি ৷ 1994 সালে বিচারক তাঁকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা দেন ৷ সেই সময় তাঁর বয়স ছিল 68 বছর ৷ পরবর্তীতে বয়সজনিত কারণ এবং অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে একাধিকবার তিনি জামিনের আবেদন জানান ৷ মধ্যে কয়েক বছরের জন্য প্যারোলে মুক্তিও পান ৷
কিন্তু প্যারোলের মেয়াদ শেষ হতেই পুলিশ তাঁকে ফের সংশোধনাগারে পাঠায় ৷ 2018 সালে নিম্ন আদালত তাঁর জামিনের আবেদন খারিজ করে দিলে তিনি কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন ৷ কিন্তু সেখানেও তাঁর আবেদন খারিজ হয়ে যায় ৷ শেষ পর্যন্ত 2020 সালে 99 বছর বয়সি রসিক মণ্ডল শীর্ষ আদালতে মুক্তির আবেদন জানান ৷ সেই আবেদনের ভিত্তিতে 2021 সালের মে মাসে সুপ্রিম কোর্ট এই মামলার স্ট্যাটাস রিপোর্ট চেয়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে একটি নোটিশ পাঠায় ৷ গত শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না ও বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের ডিভিশন বেঞ্চ 104 বছর বয়সি রসিকবাবুকে অন্তবর্তী জামিন/প্যারোলে মুক্তির নির্দেশ দেয় ৷
কাগজপত্রের কাজ শেষ করে সোমবারই রসিকবাবুকে সংশোধনাগার থেকে মুক্তি দেওয়ার কথা ছিল মালদা জেলা সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষের ৷ কিন্তু সেই কাজ মেটাতে মঙ্গলবার বিকেল হয়ে যায় ৷ অবশেষে মঙ্গলবার সন্ধের মুখে রসিক মণ্ডল সংশোধনাগার থেকে ছাড়া হয় ৷ তাঁকে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যেতে উপস্থিত ছিলেন ছোট ছেলে উত্তম মণ্ডল, দুই নাতি অপূর্ব ও প্রবীর ৷