মেদিনীপুর, 16 জানুয়ারি: বিতর্ক এবং চিকিৎসার গাফিলতির অভিযোগ পিছু ছাড়ছে না মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের। প্রসূতি মৃত্যুর পর এবার শিশু মৃত্যু! বৃহস্পতিবার সকালে মৃত্যু হয়েছে অসুস্থ প্রসূতি রেখা সাউয়ের 8 দিনের শিশুপুত্রের, যা নিয়ে নতুন করে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে মেদিনীপুর কলেজ হাসপাতালে। পরিবারের দাবি, সিবিআই তদন্ত হোক ৷
মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে গত বুধবার মাম্পি সিং (23), নাসরিন খাতুন (19), মিনারা বিবি (31), রেখা সাউ (23) ও মামনি রুইদাস সন্তান প্রসব করেন ৷ এর মধ্যে মামনি রুইদাসের মৃত্যু হয়েছে গত শুক্রবার। অন্যদিকে মাম্পি সিং, নাসরিন খাতুন ও মিনারা বিবিকে কলকাতা এসএসকেএমে ভর্তি করা হয়েছে৷ কিন্তু, রেখা সাউয়ের অবস্থা গুরুতর না-হওয়ায় তাঁকে ও তাঁর নবজাতককে মেদিনীপুর মেডিক্যালে রেখেই চিকিৎসা চলতে থাকে ৷ আজ, বৃহস্পতিবার সকাল 9টা নাগাদ রেখা সাউয়ের সন্তানের মৃত্যু হয়েছে ৷
স্যালাইন-কাণ্ডে এবার নবজাতকের মৃত্যু (ইটিভি ভারত) মৃত নবজাতকের বাবা বলেন, "মেদিনীপুর মেডিক্যালে সিআইডি তদন্ত জারি থাকলেও আমরা সিবিআই তদন্তের দাবি জানাচ্ছি ৷ কী হচ্ছে হাসপাতালে, তা জানা দরকার ৷"
যদিও এনিয়ে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের প্রিন্সিপাল মৌসুমী নন্দী জানান, সিবিআর Birth asphyxia-র কারণে মৃত্যু হয়েছে রেখা সাউয়ের শিশুর। সিবিআর Birth asphyxia-র ফলে একটি শিশুর মস্তিষ্ক এবং অন্যান্য অঙ্গগুলি জন্মের ঠিক পরে পর্যাপ্ত অক্সিজেন এবং পুষ্টি পায় না। অক্সিজেন এবং পুষ্টি ছাড়া, কোশ সঠিকভাবে কাজ করতে পারে না। বর্জ্য পদার্থ (অ্যাসিড) কোষে জমা হয় এবং তাতে মৃত্যু হয়। সাত দিন ধরে এই শিশুটি ট্রিটমেন্টে ছিল শিশুদের স্পেশাল ওয়ার্ডের ভেন্টিলেটরে। আজ সকাল 9.10 মিনিটে মৃত্যু হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত বুধবারই সন্তান প্রসবের পর মেদিনীপুর মেডিক্যালে পাঁচ প্রসূতি অসুস্থ হয়ে পড়েন । পাঁচ প্রসূতি 5 শিশুর জন্ম দেন। কিন্তু, তার মধ্যে গত শুক্রবার সকালে মৃত্যু হয় মামনি রুইদাসের। অন্যান্য প্রসূতির সন্তান সুস্থ থাকলেও রেখা সাউয়ের শিশুপুত্র প্রথম থেকেই অসুস্থ ছিল। গত মঙ্গলবার মৃত প্রসূতি মামনি রুইদাসের পাঁচদিনের পুত্রসন্তান অসুস্থ হলে তাকে নিয়ে আসা হয় মেদিনীপুর মেডিক্যালে ৷ গতকাল বিকেলে ওই শিশুকে ফের ছুটি দেওয়া হয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে ৷ বর্তমানে মৃত মামনি রুইদাসের সন্তান সুস্থ ৷ এদিকে, আজ রেখা সাউয়ের শিশু পুত্রের মৃত্যু হয় ৷
প্রসূতি মৃত্যুর পরই মামনির পরিবারের তরফে লিখিত অভিযোগ করা হয় ৷ তাতে উল্লেখ করা হয় চিকিৎসার অবহেলা ও মেয়াদোত্তীর্ণ স্যালাইন দেওয়ার কারণেই মৃত্যু হয়েছে তাঁর ৷ এরপরই নড়ে চড়ে বসে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর ৷ তড়িঘড়ি 13 জনের একটি দল কারণ খতিয়ে দেখতে মেদিনীপুর মেডিক্যালে পৌঁছন ৷ মঙ্গলবার সরকারের তরফে স্যালাইন কাণ্ডে গাফিলতি হয়েছে এমনটা উল্লেখ করে রাজ্যের মুখ্য়সচিব মনোজ পন্থ সিআইডি তদন্তের নির্দেশ দেন ৷