কলকাতা, 20 সেপ্টেম্বর:বাকিবুর রহমান, শঙ্কর আঢ্যরা জামিন পেয়ে যাওয়ার পর রেশন দুর্নীতি মামলার মূল অভিযুক্ত জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের জামিন পাওয়া এখন কি শুধু সময়ের অপেক্ষা ? বিভিন্ন মহলে এমনই প্রশ্ন যখন ঘুরপাক খাচ্ছে, তখন আসরে নামল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট । শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করে দ্রুত মূল মামলা শুনানির আর্জি জানানো হয়েছে ৷
রাজ্যের হাত থেকে রেশন মামলার তদন্ত হাতে পেয়ে প্রায় আট মাস আগে মামলা করেছিল ইডি । বিচারপতি জয় সেনগুপ্তর বেঞ্চে শুরু হয় শুনানি ।ইতিমধ্যে বেঞ্চ পরিবর্তন হয়েছে একাধিকবার । মামলাটি তিন বিচারপতির ঘর ঘুরে গেলেও শুনানি শেষ হয়নি । শুধু রাজ্যের হাতে থাকা তদন্তে স্থগিতাদেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত ।
শুক্রবার ইডি আবেদন জানিয়ে বলে, মূল মামলা শোনা হোক । না-হলে সব অভিযুক্তরা জামিন পেয়ে যাচ্ছেন । এরপর এই তদন্তে তাদের কিছু করণীয় থাকবে না বলে জানিয়েছে ইডি । বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজ আপাতত রাজ্যের হাতে থাকা মামলার তদন্ত স্থগিতাদেশের সময়সীমা 31 ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়িয়েছেন । মামলার পরবর্তী শুনানি হবে 7 অক্টোবর ।
রেশন দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলায় তদন্তের জন্য রাজ্য পুলিশ 2016 সাল থেকে 2022 সাল পর্যন্ত মোট 6টি এফআইআর দায়ের করেছে । কিন্তু সেই এফআইআরের ভিত্তিতে রাজ্য পুলিশ তেমন ভাবে তদন্ত কিছুই করেনি বলে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল ইডি । ইডির বক্তব্য ছিল, রাজ্যের মন্ত্রী ও প্রভাবশালীরা জড়িত থাকায় পুলিশ কিছু করেনি । রেশন দুর্নীতিতে ইডি যেহেতু তদন্ত করছে, সেই জন্য সমস্ত মামলা তাদের হাতেই দেওয়ার দাবি জানিয়েছিল তারা ।
বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের বেঞ্চে মামলা এলে তিনি রাজ্যের রিপোর্ট তলব করে জানতে চান, রাজ্য রেশন দুর্নীতি মামলায় কী কী পদক্ষেপ করেছে । রাজ্য তখন রিপোর্ট দিয়ে জানায়, রাজ্যে রেশন দুর্নীতিতে মোট 87টি অভিযোগ দায়ের হয়েছে । তার মধ্যে 65টি মামলায় ইতিমধ্যে চার্জশিট দেওয়া হয়ে গিয়েছে । দুটি মামলায় ত্রুটি আছে । বাকি 20টি মামলার তদন্ত চলছে বলে ওই রিপোর্টে জানায় রাজ্য । বিচারপতি সেনগুপ্ত রাজ্যের তদন্তের উপর স্থগিতাদেশ জারি করেছিলেন । কিন্তু তারপর মামলা আর এগোয়নি ।
প্রসঙ্গত, গত 27 অগস্ট কলকাতার বিশেষ সিবিআই আদালত থেকে রেশন দুর্নীতি মামলায় অভিযুক্ত বাকিবুর রহমান, শঙ্কর আঢ্য ও বিশ্বজিৎ দাস জামিন পান । তারপরই প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের জামিন পাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে বলে মনে করছেন আইনজীবীরা ।