কলকাতা, 5 ডিসেম্বর: তিলোত্তমা কলকাতার প্রসঙ্গ উঠলেই চোখের সামনে বেশ কয়েকটি ছবি ভেসে ওঠে ৷ তার মধ্যে অন্যতম হল হলুদ ট্যাক্সি ৷ কলকাতার একাধিক পরিচিতির একটি এই হলুদ ট্যাক্সি ৷ টলিউড থেকে বলিউড, রুপোলি পর্দায় বারেবারে উঠে এসেছে হলুদ ট্যাক্সির দৃশ্য ৷ ট্রামের মতোই হিন্দুস্থান মোটরসের তৈরি অ্যাম্বাসেডর হলুদ ট্যাক্সি এখন অবলুপ্তির পথে ৷
হলুদ ট্যাক্সির এই অবলুপ্তি প্রসঙ্গে শহরের বিভিন্ন পেশার বিশিষ্টদের নিয়ে আলোচনা সভার আয়োজন করেছিলেন গীতিকার, লেখক, কবি ও আবৃত্তিকার ঝর্ণা ভট্টাচার্য ৷ 'হারানো সুরে হলুদ ট্যাক্সি' আলোচনা সভায় বক্তাদের তালিকায় ছিলেন, আইপিএস শান্তি দাস, আইনজীবী জয়ন্তনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়, পরিচালক-অভিনেতা এবং লেখক দেবপ্রতীম দাশগুপ্ত, সিপিআইএম নেতা শতরূপ ঘোষ, প্রাক্তন ভারতীয় ফুটবলার রহিম নবি-সহ বিশিষ্টরা ৷
আলোচনা সভায় আইপিএস শান্তি দাস বলেন, "আমি পেশাগতভাবে খুব একটা আবেগপ্রবণ বা রোম্যান্টিক মেজাজের নই ৷ তবে, আমার জন্ম কলকাতা শহরে ৷ আমার বেড়ে ওঠা ওড়িশায় হলেও, বাঙালি ও কলকাতার মেয়ে হিসেবে আমার কাছে হলুদ ট্যাক্সির একটা আলাদা মাহাত্ম্য আছে ৷ ছোটবেলায় গরমের ছুটি আর ক্রিসমাসে কলকাতায় আসতাম ৷ তখন হাওড়া স্টেশনে নেমে উত্তর কলকাতার বাড়িতে যাওয়ার জন্য হলুদ ট্যাক্সিতে চড়তাম ৷ ঘুরতে বেরলেও হলুদ ট্যাক্সি ৷ তাই এর অবলুপ্তি, অবশ্যই কলকাতার অন্যতম পরিচিতির বিনাশ ৷"
কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী জয়ন্তনারায়ণ চট্টোপাধ্যায় বলেন, "ছোট থেকে বড় হয়ে ওঠা এবং আইনি পেশায় যুক্ত হওয়া, সব কিছুর মধ্যে কোথাও না-কোথায় হলুদ ট্যাক্সি জড়িত ছিল আমার জীবনে ৷ হলুদ ট্যাক্সিকে হেরিটেজ ঘোষিত করে দিতে হবে, এমন দিন আসা উচিত হয়নি ৷ কারণ, আজও কলকাতার কোনও নাগরিককে জিজ্ঞেস করলে কেউ বলবে না, সখে হলুদ ট্যাক্সিতে উঠছেন ৷ আজও হলুদ ট্যাক্সির কদর ততটাই রয়েছে ৷"