বোলপুর, 22 ফেব্রুয়ারি:বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বাড়ি ৷ ধীরে ধীরেভেঙেও ফেলা হচ্ছে বাড়িটিকে ৷ কোনোক্রমে বাড়ির গেটে দাদামশাইয়ের লেখা 'আবাস' নামটুকু বেঁচে থাকুক ৷ আক্ষেপের সুরে এমনটাই আর্জি জানালেন অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নাতনি ধীরা ঠাকুর মজুমদার ।
অবন ঠাকুরের ছোট ছেলে মানিন্দ্রনাথ ঠাকুরের মেয়ে তিনি ৷ তবে শান্তিনিকেতনের বাড়িটি উত্তরাধিকার সূত্র পেয়েছিলেন অবন ঠাকুরের আরেক ছেলে অলোকেন্দ্রনাথ ঠাকুর । এরপর তাঁর ছেলে অমিতেন্দ্রনাথ ঠাকুর ৷ সেখান থেকে বাড়ি উত্তরাধিকার সূত্রে আসে অয়নেন্দ্রনাথ ঠাকুরের থাকে ৷ তিনি বাড়িটি বিক্রি করে দিয়েছেন ৷ যা নিয়ে আক্ষেপ প্রকাশ করতে শোনা গেল অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নাতনি ধীরা ঠাকুর মজুমদারকে ৷ ইটিভি ভারতকে ফোনে তিনি বলেন, "যে বিক্রি করেছেন সে দীর্ঘদিন আমেরিকায় থাকতেন, এই বাড়ির মূল্যই বোঝে না ।" এমনকি, বাড়িটিতে আসা-যাওয়া নিয়ে স্মৃতিচারণও করলেন ধীরা ৷
প্রসঙ্গত, শান্তিনিকেতনে ভেঙে ফেলা হচ্ছে প্রখ্যাত শিল্পী অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বাড়ি ৷ যা নিয়ে কয়েকদিন ধরেই হইচই হচ্ছে ৷ এই ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও অমর্ত্য সেনের পরিবারের সদস্যরাও ৷ তারপরেই নড়েচড়ে বসে বোলপুর পুরসভা ৷ বর্তমানে বাড়ি ভাঙার কাছ বন্ধ করে গেটে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে পুরসভার তরফে ৷
প্রখ্যাত শিল্পী তথা লেখক অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর । যিনি কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাইপো ৷ বিশ্বভারতীর প্রতিষ্ঠাতা হিসাবে প্রথম আচার্য ছিলেন গুরুদেব ৷ 1941 সালে কবিপ্রয়াণের পর 1942 সালে বিশ্বভারতীর দ্বিতীয় আচার্য হয়েছিলেন অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর । সেই সময় শান্তিনিকেতনে তাঁর ছেলে অলোকেন্দ্রনাথ ঠাকুর একটি বাড়ি করেছিলেন । এই বাড়ির নাম 'আবাস' । বাড়িটির নামকরণ করেছিলেন স্বয়ং অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর । যিনি শান্তিনিকেতনে অবন ঠাকুর নামে খ্যাত ৷ তাঁর নামানুসারেই এই এলাকার নাম হয়েছে 'অবনপল্লি' । তবে এই ঐতিহ্যবাহী স্মৃতিবিজড়িত বাড়িটি ভেঙে ফেলা হচ্ছে । অর্ধেকের বেশি অংশ ইতিমধ্যে ভেঙে ফেলাও হয়েছে ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্লট করে একাধিক ব্যক্তিকে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে অবন ঠাকুরের বাড়িটি । অর্থাৎ, জমি হাঙরদের হাতে পড়েছে শান্তিনিকেতনের স্মৃতিবিজড়িত ওই বাড়িটি । তবে এই বাড়ি বিক্রির বিষয়ে সম্পূর্ণ অন্ধকারে ছিলেন শিল্পী অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নাতনি ধীরা ঠাকুর মজুমদার । বর্তমানে তিনি কলকাতায় থাকেন ৷ সংবাদমাধ্যমে তিনি জানতে পারেন ঐতিহ্যবাহী বাড়িটি বিক্রি হয়ে গিয়েছে ।