আপাতত অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট দায়িত্ব সামলাবেন রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের বেলুড়মঠ, 27 মার্চ: বুধবার রাত 9 টায় বেলুড় মঠের গঙ্গার পাড়ে স্বামী স্মরণানন্দের শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে ৷ এমনটাই জানানো হয়েছে বেলুড়মঠের পক্ষ থেকে ৷ বুধবার দুপুরে রামকৃষ্ণ মিশন ও মঠের তরফে তাঁর শেষযাত্রার সূচি প্রকাশ করা হয়েছে ৷ বুধবার রাত 8 টা 15 মিনিটে সাংস্কৃতিক ভবন থেকে পুরনো মঠ চত্বরের আমগাছ তলায় শ্রীমৎ স্বামী স্মরণানন্দের মরদেহ সন্ন্যাসীরা কাঁধে করে নিয়ে আসবে ৷ সেখানে তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানানো হবে ৷
মঠ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এরপর স্বামী ব্রহ্মানন্দের মন্দিরের সামনে নিয়ে যাওয়া হবে ৷ তারপরে স্বামী স্মরণানন্দকে শ্রীশ্রী মা সারদার মন্দিরের সামনে নিয়ে রাখা হবে ৷ সেখান থেকে স্নান করিয়ে নতুন বস্ত্র-সহ সন্ন্যাসীর সমস্ত উপকরণ দিয়ে, আরতি করা হবে ৷ তারপরে স্বামী বিবেকানন্দের সমাধিস্থল ঘুরে তাঁর দেহ মহারাজের বাসস্থানে নিয়ে আসা হবে ৷ কিছুক্ষণ সেখানে রাখার পরে গঙ্গার তীরে শুরু হবে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া ৷
রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের সাধারণ সম্পাদক স্বামী সুবীরানন্দ জানান, সেখানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন প্রাক্তন মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ সন্ধ্যায় তিনি বেলুড়মঠে এসে রাজ্য সরকারের তরফে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করবেন ৷ রাত 8টা নাগাদ শ্রদ্ধা জানাতে আসবেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ৷ আর আগামী 7 এপ্রিল স্বামী স্মরণানন্দের ভান্ডারা অনুষ্ঠান পালিত হবে ৷ ওইদিন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস উপস্থিত থাকার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছেন ৷
আজ সকাল থেকে স্বামী স্মরণানন্দ মহারাজকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে বেলুড় মঠে ভিড় করেন ভক্তরা ৷ বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বরাও এদিন সকালে বেলুড়মঠের সাংস্কৃতিক ভবনে উপস্থিত হন ৷ হাওড়ার বালির বিধায়ক ডাক্তার রানা চট্টোপাধ্যায় শ্রদ্ধার্ঘ্য জানাতে বেলুড় মঠে আসেন ৷ রাজ্যের খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ দফতরের মন্ত্রী অরূপ রায় বেলুড়মঠে আসেন স্বামী স্মরণানন্দ মহারাজকে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ করতে ৷ মঙ্গলবার রাত 8টা 14 মিনিটে তিনি পরোলোক গমন করেন ৷
গত 29 ফেব্রুয়ারি দক্ষিণ কলকাতার রামকৃষ্ণ মিশন সেবা প্রতিষ্ঠানে তাঁকে ভরতি করানো হয় ৷ ওই হাসপাতালের সাত তলার 50 নম্বর কেবিনে ছিলেন তিনি ৷ 3 মার্চ রাতে আচমকা শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় প্রেসিডেন্ট মহারাজকে ভেন্টিলেশনে দেওয়া হয় ৷ তারপর থেকে টানা 23 দিন তিনি ভেন্টিলেশন সাপোর্টেই ছিলেন ৷ তাঁর শারীরিক অবস্থার খোঁজ নিতে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি 5 মার্চ হাসপাতালে আসেন ৷ মুখ্যমন্ত্রীও এসেছিলেন হাসপাতালে ৷
1929 সালে তামিলনাড়ুর তাঞ্জাভুর জেলার আন্দামি গ্রামে স্বামী স্মরণানন্দ জন্মগ্রহণ করেন । 1997 সালে রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের সাধারণ সম্পাদক হয়েছিলেন ৷ এরপর 2017 সালে স্বামী আত্মস্থানন্দের প্রয়াণের পর, ওই বছরের 17 জুলাই মঠ ও মিশনের অধ্যক্ষ নির্বাচিত হন স্বামী স্মরণানন্দ ৷ মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল 95 বছর ৷
আরও পড়ুন:
- রামকৃষ্ণলোকে স্বামী স্মরণানন্দ, শোকজ্ঞাপন মোদি-মমতার
- কলকাতাই এসেই স্বামী স্মরণানন্দকে দেখতে হাসপাতালে মোদি
- মোদির পর মমতা, স্বামী স্মরণানন্দ জি মহারাজকে দেখতে হাসপাতালে মুখ্যমন্ত্রী