জলপাইগুড়ি, 5 অগস্ট: ফিরল বছর দু'য়েক আগের স্মৃতি ৷ চলছে শ্রাবণ মাস ৷ আজ, শ্রাবণের তৃতীয় সোমবার ৷ শিবলিঙ্গে জল ঢালতে রবিবার রাত থেকেই জল্পেশ মন্দিরে উপচে পড়ে ভিড় ৷ প্রসিদ্ধ জল্পেশ মন্দিরে পুণ্যার্থীদের ভিড়ের চাপে ভেঙে যায় ব্যারিকেড। হুড়োহুড়ি ও ধাক্কাধাক্কিতে পুণ্যার্থীদের ভিড়ের চাপে পড়ে টিকিট কাউন্টার বন্ধ করতে বাধ্য হয় জল্পেশ মন্দির কমিটি।
অল্পের জন্য এড়াল বড় দুর্ঘটনা (ইটিভি ভারত) দু'বছর আগে মন্দিরে জল ঢালতে গিয়ে আহত হন এক পুণ্যার্থী। এরপর তিনি মামলা করেছিলেন হাইকোর্টে, জল্পেশ মন্দিরের অব্যবস্থা নিয়ে। এরপর বাইরে থেকে পাইপের মাধ্যমে জল ঢালার ব্যবস্থা করার নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট ৷ পরে জল্পেশ মন্দির কমিটির আবেদনের ভিত্তিতে ফের মন্দিরে প্রবেশ করে জল ঢালার আবেদন শর্তসাপেক্ষে মঞ্জুর করে আদালত। কিন্তু গতকাল, রবিবার রাতে বড় অঘটন হতে আরও একবার বাঁচল জল্পেশ মন্দির কমিটি।
2022 সালের শ্রাবণ মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে লক্ষাধিক পুণ্যার্থীর ভিড় হয় জল্পেশ মন্দিরে। সেদিনও ভিড় সামলাতে দিশেহারা হয় পুলিশ প্রশাসন। মন্দিরে প্রবেশের জন্য ব্যারিকেড ভেঙে ফেলায় হিমশিম খেতে হয় পুলিশ প্রশাসন ও মন্দির কমিটিকে। পুণ্যার্থীদের প্রবেশের সময় পদপিষ্ট হওয়ার মতো ঘটনা ঘটে ৷ এবছরও গতকাল রাতে জল্পেশ মন্দিরে হাজার হাজার পুণ্যার্থীরা পৌঁছন জল্পেশ মন্দিরে বাবা শিবের মাথায় জল ঢালতে। এবার প্রশাসনিক তৎপরতা ছিল চোখে পড়ার মতো। কিন্ত রাত বাড়তেই ভিড় বাড়তে শুরু করে।
- এবারও মন্দির কমিটির অব্যবস্থার কারণে বিপদে পড়েন পুণ্যার্থীরা, এমনটাই অভিযোগ। পুণ্যার্থী অঙ্কুর দাস বলেন, "বাবাকে নিয়ে জল্পেশে গিয়েছিলাম। হুড়োহুড়ি আর ধাক্কাধাক্কিতে বাবা পড়ে যান ৷ পরে লোকজনও পড়ে যান । খুঁজে পাচ্ছিলাম না বাবাকে ৷ অনুসন্ধান অফিসে গেলেও কোনও সমাধান হয়নি ৷ মাইকিং ব্যবস্থা পুরো মন্দির চত্বরে নেই, তাই মাইকিংয়ের পরও কোনও সুরাহা হয়নি ৷ পড়ে যাওয়ার কারণে বেশ কয়েকজন আহত হন ৷ জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি ও ময়নাগুড়ি হাসপাতালে তাঁদের চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয় ৷"
- জলপাইগুড়ি মন্দির কমিটির সম্পাদক গিরিন্দ্রনাথ দেব বলেন, "গতকাল রাতে লক্ষাধিক পুণ্যার্থী উপস্থিত হয় ৷ রাতেই আমাদের টিকিট কাউন্টার বন্ধ করে দিতে বাধ্য হই ৷ জল্পেশ বাবার কৃপায় পদপিষ্ট হওয়ার মতো কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। আমাদের ব্যবস্থাপনায় কোনও ত্রুটি ছিল না ৷ কিন্তু রেকর্ড সংখ্যক পুণ্যার্থী চলে আসায় সমস্যায় পড়তে হয়। গতকাল রাত থেকে সোমবার সকাল পর্যন্ত বিনামূল্যেই পুণ্যার্থীরা জল্পেশ মন্দিরে প্রবেশ করছেন। ব্যারিকেড ভেঙে গিয়েছে ভিড়ের চাপে। পুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবকরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ এনেছেন।
- জলপাইগুড়ির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) সমীর আহমেদ জানান, জল্পেশে প্রচণ্ড ভিড় হয়েছিল। হুড়োহুড়ি শুরু হয় ৷ পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
জল্পেশ মন্দিরে পুণ্যার্থীদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা হাইকোর্টের, বাইরে থেকেই জল ঢালতে হবে শিবের মাথায়