আসানসোল, 24 ফেব্রুয়ারি: পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান থেকে 9 পর্যটক গুজরাতে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হন। ঘটনায় 5 জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতরা প্রত্যেকেই নিকট আত্মীয়। তাঁদের মধ্যে আসানসোলের এক মহিলা রয়েছেন। তাঁর নাম শুক্লা চট্টোপাধ্যায় (56)। স্বামী মানবেন্দ্র চট্টোপাধ্যায় আশঙ্কাজনক অবস্থায় গুজরাতের একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে ভর্তি। তবে, গুজরাতে মায়ের দেহ আনতে গিয়ে 'হুমকি' ফোনে 40 লক্ষ চাওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ ছেলের ৷
অভিযোগ, মা এবং অন্য আত্মীয়দের দেহ আনতে গিয়ে অথৈ জলে পড়েছেন শুক্লার ছেলে আবির্ভাব চট্টোপাধ্যায়। দেহগুলির জন্য সামান্য বরফটুকু পাননি তিনি। এমনকী নানাভাবে তাঁকে পর্যুদস্ত করা হচ্ছে । ফোন করে তাঁর কাছে অহেতুক টাকা চাওয়া হচ্ছে ৷ মায়ের দেহ আনতে গিয়ে হুমকি ফোনের শিকার হচ্ছেন ছেলে। শুধু তাই নয়, তাঁর কাছে 40 লক্ষ টাকা চাওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ।
গুজরাতে দেহ আনতে গিয়ে লক্ষাধিক টাকা চাওয়ার অভিযোগ (ইটিভি ভারত) সোমবার সকালে ইটিভি ভারতের প্রতিনিধি মৃতার বাড়িতে পৌঁছন। প্রতিবেশীরা তখন ভিড় জমান বাড়িতে। সেই সময়ে কাকু মলয় চট্টোপাধ্যায়ের ফোনে গুজরাত থেকে ফোন করেন আবির্ভাব। তিনি বলেন, "কোনও সহায়তা পাচ্ছি না। এমনকী দেহগুলি রাখার জন্য বরফও পাচ্ছি না। কী করব কিছুই মাথায় আসছে না। অন্যদিকে, থানার নাম করে আমার কাছে 'থ্রেট কল' আসছে ও 40 লক্ষ টাকা চাওয়া হচ্ছে।" সেই ফোনেই ইটিভি ভারতের প্রতিনিধিও আবির্ভাবের সঙ্গে কথা বলেন। একই কথা জানান তিনি ৷
তবে প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, এই ফোন কল কোনও প্রতারক চক্রের ৷ ডিজিটাল অ্যারেস্টের ভয় দেখিয়ে টাকা লোপাট করার উদ্দেশে তাঁকে প্যাঁচে ফেলার চেষ্টা করা হচ্ছে। পরিবারের লোক বিষয়টি নিয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হবেন বলে জানিয়েছে। মলয় চট্টোপাধ্যায়ও বলেন "নানাভাবে আমার ভাইপোকে হেনস্থা করা হচ্ছে। অহেতুক টাকা চাওয়া হচ্ছে তার কাছে। আমরা খুব দুশ্চিন্তায় আছি।"
বাঙালি পর্যটকের মৃত্যু (ইটিভি ভারত) উল্লেখ্য, 9 জনের একটি পর্যটক দল গুজরাতে বেড়াতে গিয়েছিলেন। এঁরা সকলেই পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমানের বাসিন্দা। গত 16 ফেব্রুয়ারি আসানসোল থেকে ট্রেন ধরে তাঁরা রওনা দেন। আগামী বুধবার তাঁদের ফিরে আসার কথা ছিল। কিন্তু, রবিবার গুজরাতের গির জঙ্গল থেকে ফেরার সময় আমেদাবাদ-গুজরাত জাতীয় সড়কে সুরেন্দ্রনগর থানা এলাকায় একটি ডাম্পারের পিছনে ধাক্কা মারে পর্যটকদের গাড়ি।
মৃতদেহ নিয়ে অথৈ জলে পড়েছেন মৃতার ছেলে আবির্ভাব (ইটিভি ভারত) এই ঘটনায় চালক-সহ 6 জনের মৃত্যু হয়। বাকি 5 জনই বাঙালি পর্যটক। তাঁর মধ্যে রয়েছেন আসানসোলের গৃহবধূ শুক্লা চট্টোপাধ্যায় (56)। তাঁর স্বামী অবসরপ্রাপ্ত ইসিএল আধিকারিক মানবেন্দ্র চট্টোপাধ্যায় আশঙ্কাজনক অবস্থায় গুজরাতের একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে চিকিৎসাধীন। জানা গিয়েছে, মানবেন্দ্র ও শুক্লার দুই ছেলে। এক ছেলে অভিষেক চট্টোপাধ্যায় আমেরিকায় কর্মরত। আরেক ছেলে আবির্ভাব চট্টোপাধ্যায় কলকাতায় থাকেন। দুর্ঘটনার খবর শুনেই তড়িঘড়ি পৌঁছেছেন গুজরাতের সুরেন্দ্রনগরে। কিন্তু, সেখান থেকে দেহগুলি আনতে গিয়ে অথৈ জলে পড়েছেন আবির্ভাব ৷