পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

বাংলাদেশি মায়ের শেষযাত্রায় সামিল ভারতীয় কন্যারা

মা থাকেন বাংলাদেশে ৷ মেয়েরা ভারতের বাসিন্দা ৷ মায়ের মৃত্যুতে বিএসএফ-বিজিবির সৌজন্যে শেষযাত্রায় সামিল হলেন মেয়েরা ৷

By ETV Bharat Bangla Team

Published : 4 hours ago

INDIA BANGLADESH BORDER
বাংলাদেশি মায়ের শেষযাত্রায় সামিল ভারতীয় কন্যারা (নিজস্ব চিত্র)

কলকাতা, 15 অক্টোবর: মায়ের মৃত্যু প্রতিটি সন্তানকে শোকস্তব্ধ করে দেয় ৷ মাকে শেষবার দেখার আকুলতা তৈরি হয়, যদি সন্তান দূরে থাকেন ৷ কখনও সেই ইচ্ছেপূরণ হয় ৷ আবার কখনও সন্তানদের দূর থেকেই শেষ শ্রদ্ধা জানাতে হয় ৷ মা ও সন্তানদের বসবাস দু’টি ভিন্ন দেশে হলে এই ধরনের ঘটনা আকছারই ঘটতে দেখা যায় ৷

সেই ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা ছিল সায়রা বানুর মৃত্যুতেও ৷ কারণ, তিনি বাংলাদেশের বাসিন্দা ৷ আর তাঁর মেয়েরা থাকেন ভারতে ৷ ফলে শেষবারের জন্য মেয়েরা কীভাবে মাকে দেখবেন, তা নিয়ে সন্দিহান ছিলেন ৷ কিন্তু শেষপর্যন্ত কাঁটাতারের বন্ধন সরিয়ে রেখে মায়ের শেষযাত্রায় সামিল হতে পেরেছেন সায়রা বানুর মেয়েরা ৷

কাঁটাতারের এই বাধা টপকানো সহজ নয় ৷ কিন্তু এবার তা সম্ভব হয়েছে দুই দেশের দুই সীমান্তরক্ষী বাহিনী, বিএসএফ ও বিজিবির সৌজন্যে ৷ সারা বছর যাঁরা সীমান্তে অতন্দ্র প্রহরায় থাকেন শুধুমাত্র চোরাচালান, অনুপ্রবেশ বা অন্য যেকোনও ধরনের অপরাধমূলক কাজ আটকানোর জন্য, মঙ্গলবার তাঁদের এই মানবিক রূপ দেখে বিস্মিত ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকার বাসিন্দারা ৷

বিএসএফ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত সায়রা বানুর বাড়ি বাংলাদেশের ঝিনাইদহ জেলার গোপালপুর গ্রামে ৷ তাঁর মেয়েরা থাকেন ভারতের নদিয়ার মধুপুর এবং হরিহরপুর গ্রামে ৷ মঙ্গলবার তিনি প্রয়াত হন ৷ মেয়েদের কাছে মায়ের মৃত্যুর খবরও চলে আসে ৷ কিন্তু এদেশ থেকে ওদেশে যাওয়া তো সহজ নয়, তাহলে কীভাবে মাকে শেষবার দেখবেন ?

এই প্রশ্ন যখন ঘুরপাক খাচ্ছে সায়রা বানুর মেয়েদের মনে, সেই সময় বাংলাদেশে থাকা পরিবারের তরফে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বা বিজিবি-র সঙ্গে কথা বলা হয় ৷ বিজিবি যোগাযোগ করে সীমান্তে বিএসএফের 68তম ব্যাটালিয়নের আওতাধীন মধুপুর বর্ডার ফাঁড়ির সঙ্গে ৷ সেখানকার কোম্পানি কমান্ডারকে সবটা জানানো হয় ৷

সেই খবর পেয়ে উদ্যোগী হয় বিএসএফ ৷ মেয়েরা যাতে শেষবার অন্তত মাকে দেখতে পান, সেই ব্যবস্থা করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হয় ৷ তার পর বাংলাদেশের দিক থেকে জিরো লাইনে নিয়ে আসা হয় সায়রা বানুর দেহ ৷ মধুপুর ফাঁড়ির কাছে জিরো লাইনে গিয়ে মেয়েরা শেষবারের জন্য দেখেন মাকে ৷ শেষ বিদায় জানিয়ে আবার ফিরে আসেন গ্রামে ৷

এই উদ্যোগ নেওয়ার জন্য বিএসএফের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন সায়রা বানুর মেয়েরা ৷ যদিও বিএসএফের দক্ষিণবঙ্গের জনসংযোগ আধিকারিক এনকে পাণ্ডের কথায় স্পষ্ট যে সীমান্তের রক্ষীরা শুধুমাত্র নিজেদের কর্তব্যই পালন করেছেন ৷ তিনি বলেন, "বিএসএফ জওয়ানরা শুধু দিনরাত সীমান্ত পাহারা দেয় না, আন্তর্জাতিক সীমান্তে বসবাসকারী মানুষের মানবিক ও সামাজিক চাহিদা পূর্তি করতে সর্বদা প্রস্তুত থাকে ।" তিনি সায়রা বানুর শেষ দর্শনে বক্তব্যও রাখেন ৷

ABOUT THE AUTHOR

...view details