মালদা, 2 ডিসেম্বর: ছবি অনেক আগেই উধাও হয়ে গিয়েছিল ৷ এবার মুখ্যমন্ত্রীর পছন্দের নীল-সাদা রংও মুছে ফেলল বিজেপি নিয়ন্ত্রিত পুরাতন মালদার ভাবুক গ্রাম পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ ৷ পঞ্চায়েত অফিসের রং এখন গেরুয়া ৷
এই নিয়ে তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা ৷ যদিও এই ঘটনা নিয়ে এখনও পর্যন্ত সংবাদমাধ্যমের সামনে কিছু বলতে রাজি হননি বিডিও ৷
বোর্ড বদলাতেই পঞ্চায়েত ভবনের রং বদল মালদায়, শুনুন দু'পক্ষের বক্তব্য (ইটিভি ভারত) 2023 সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনের ফলাফলে ভাবুক গ্রাম পঞ্চায়েত দখল করেছে পদ্মশিবির ৷ 19 আসনের এই পঞ্চায়েতে বিজেপি 11টি ও তৃণমূল সাতটি আসন পায় ৷ একটি আসন যায় নির্দলের দখলে ৷ তার আগের পঞ্চায়েত নির্বাচনেও এই পঞ্চায়েত বিজেপির দখলে ছিল ৷ কিন্তু তখনও পঞ্চায়েত ভবনের রং বদল হয়নি ৷ নীল-সাদাই ছিল ৷ সপ্তাহখানেক আগে এলাকার মানুষজন দেখেন, ভবনের রং গেরুয়া হয়ে গিয়েছে ৷
ভাবুক পঞ্চায়েতে বর্তমানে গেরুয়া রং (ইটিভি ভারত) কেন এই রং বদল ? এই বিষয়ে পঞ্চায়েত প্রধান প্রভুনাথ দুবে ক্যামেরার সামনে কিছু বলতে অস্বীকার করলেও তিনি জানান, ভবনের রং কী হবে পুরনো রং পাল্টানো যাবে কি না, এসব নিয়ে আমাদের কাছে সরকারের তরফে কোনও গাইডলাইন দেওয়া হয়নি ৷ পঞ্চায়েত ভবনের রং পুরনো হয়ে গিয়েছিল ৷ তাই আমরা নতুন করে গেরুয়া রং করেছি ৷ সরকারের তরফে রং পরিবর্তনের নির্দেশ এলে আমরা তা পালন করব ৷"
তেইশের ভোটে ভাবুক গ্রাম পঞ্চায়েতের দখল নেওয়ার পরই ভবনের ভিতরে থাকা মুখ্যমন্ত্রীর ছবি সরিয়ে ফেলে বিজেপির বোর্ড ৷ তা নিয়ে অবশ্য বিরোধী তৃণমূলের তরফে কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি ৷ এবারও ভবনের রং পরিবর্তন নিয়ে ঘাসফুলের জনপ্রতিনিধিরা কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি ৷
তবে ভাবুক অঞ্চল তৃণমূলের সভাপতি দিলীপ হেমব্রমের কথায়, "কিছুদিন আগেও ভাবুক গ্রাম পঞ্চায়েত ভবনের রং নীল-সাদাই ছিল ৷ রাজ্যের সমস্ত সরকারি প্রতিষ্ঠান, স্কুল-কলেজের রংও নীল-সাদা ৷ কিন্তু এখন গেরুয়া রং করে পঞ্চায়েত ভবনকে বিজেপির পার্টি অফিস করে দেওয়া হয়েছে ৷ আমরা এই ঘটনাকে ধিক্কার জানাচ্ছি ৷ দ্রুত পঞ্চায়েত ভবনের রং নীল-সাদা করার দাবি জানাচ্ছি ৷ আপাতত আমি পঞ্চায়েতের সেক্রেটারি এবং এক্সিকিউটিভ অফিসারকে বিষয়টি জানিয়েছি ৷ তাঁরা মৌখিকভাবে জানিয়েছেন, বিষয়টি দেখছেন ৷ দ্রুত ভবনের রং নীল-সাদা না করা হলে আমরা বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাব ৷ আর বিজেপির যদি নীল-সাদা রং করতে অসুবিধে থাকে, তবে রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের টাকা নেওয়া বন্ধ করে দিক ৷ ওরা কেন্দ্রের টাকা দিয়েই উন্নয়নের কাজ করুক ৷"
ভাবুক পঞ্চায়েতের আগের নীল সাদা রং করা অবস্থার ছবি (ইটিভি ভারত) যদিও বিজেপির মণ্ডল সভাপতি নকুল সরকারের দাবি, "গ্রাম পঞ্চায়েত স্বশাসিত সংস্থা ৷ এখানে শাসক বোর্ড ভবনের রং যে কোনও করতে পারে ৷ ভাবুক গ্রাম পঞ্চায়েত আগেও বিজেপির ছিল, এখনও আছে ৷ রং নিয়ে কিছু হয় না ৷ মানুষের কাজ করাই বড় বিষয় ৷ সেটা বিজেপি পরিচালিত পঞ্চায়েত বোর্ড করে যাচ্ছে ৷ বিজেপি রংয়ের রাজনীতি করে না ৷ সেটা তৃণমূলের কালচার ৷ তাই ওদের অভিযোগ ভিত্তিহীন ৷ আসলে ভাবুক অঞ্চলে তৃণমূলের পায়ের নীচে মাটি নেই ৷ গত লোকসভা নির্বাচনে এই পঞ্চায়েতের প্রতিটি বুথে বিজেপি লিড পেয়েছে ৷ এসব কারণেই তৃণমূল ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলছে ৷"
পঞ্চায়েত ভবনের গায়ে লাগা ফলক বলছে, রং বদলের পর তার উদ্বোধন করেছেন পুরাতন মালদার বিডিও সেঁজুতি পাল মাইতি ৷ কিন্তু এনিয়ে তাঁকে প্রশ্ন করা হলে তিনি সাফ জানিয়ে দেন, এই বিষয়ে তিনি কোনও মন্তব্য করবেন না ৷