নৈহাটি, 26 নভেম্বর: বিধানসভা উপনির্বাচনের ফল ঘোষণা হয়েছে শনিবার ৷ তৃণমূল প্রার্থী সনৎ দে'র কাছে 49 হাজার 277 ভোটে পরাজিত হয়েছে বিজেপি প্রার্থী রূপক মিত্র ৷ এরপর মঙ্গলবার বিকেলে নৈহাটি পৌঁছে বড়মার মন্দিরে পুজো দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ পাশাপাশি বড়মা'র নামে ঘাটের নামকরণ-সহ একগুচ্ছ জনস্বার্থ প্রকল্পের কথা ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী ৷
তাঁর সঙ্গে ছিলেন নৈহাটির প্রাক্তন বিধায়ক তথা ব্যারাকপুরের সাংসদ পার্থ ভৌমিক, নৈহাটির নবনির্বাচিত বিধায়ক সনৎ দে, জগদ্দলের বিধায়ক সোমনাথ শ্যাম, নৈহাটির পুরপ্রধান অশোক চট্টোপাধ্যায়, পরিচালক তথা ব্যারাকপুরের বিধায়ক রাজ চক্রবর্তী এবং অন্যরা ।
নৈহাটিতে বড়মার মন্দিরে পুজো দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (ইটিভি ভারত) নৈহাটি তথা রাজ্যের অন্যতম প্রসিদ্ধ কালী মন্দির হিসেবে পরিচিত নৈহাটির বড়মায়ের মন্দির ৷ চলতি বছর মায়ের 101তম উদযাপন হয়েছে ৷ গত বছর কালীপুজোর পরদিন তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক তথা সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বড়মার মন্দিরে পুজো দিতে এসেছিলেন ৷ বছর ঘুরে এদিন নৈহাটি বিধানসভায় উপনির্বাচনে জয়ের পরপরই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বড়মা'র মন্দিরে পুজো দিলেন ৷ এদিন বিকেল সওয়া তিনটে নাগাদ তৃণমূল সুপ্রিমো বড়মার মন্দিরে ঢুকে নিজের হাতে মা'কে নতুন বস্ত্র নিবেদন করেন ৷ মুখ্যমন্ত্রী বড়মাকে অঞ্জলি দেন ৷ প্রায় 30 মিনিট তিনি মন্দিরে ছিলেন ৷
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনকল্যাণমুখী ঘোষণা
পুজো দিয়ে বেরনোর পর মন্দির চত্বরে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "ফেরিঘাটটা বড়মা'র নামে করে দিতে বলেছি ৷ এখানে একটা পুলিশ ফাঁড়ি হবে ৷ একটা হাই-মাস্ট লাইট হবে ৷ বড়মা'র যে ঘাট দিয়ে সবাই পারাপার করে, সেই ঘাটে সংস্কার হবে ৷ এর জন্য আমি রাজ্যসভার সাংসদ তহবিল থেকে 10 লক্ষ টাকা দেব ৷"
নৈহাটিতে বড়মার মন্দিরে দেবীর আরাধনায় তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (ছবি সৌজন্য: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ফেসবুক) তিনি আরও বলেন, "নৈহাটি ও ভাটপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যবস্থার আধুনিকীকরণের জন্য সেখানে দু'টি ওপিডি হবে ৷" ব্যারাকপুরের সাংসদ পার্থ ভৌমিক মোট 4 কোটি টাকা বরাদ্দ করেছেন ৷ এর জন্য তিনি তৃণমূল সাংসদকে ধন্যবাদ জানান ৷ বক্তব্য শেষ করতে গিয়ে তৃণমূল নেত্রী বলেন, "বড়মা, বড়মা-ই যেন থাকেন ৷"
2019 সালে লোকসভা নির্বাচনের পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নৈহাটিতে সভা করতে এসেছিলেন ৷ ওই সভায় আসার সময় ভাটপাড়ায় মুখ্যমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে বিজেপি সমর্থকরা 'জয় শ্রীরাম' ধ্বনি দিয়েছিলেন ৷ তৃণমূলের বেশ কয়েকটি পার্টি অফিসও দখল করে নিয়েছিলেন গেরুয়া শিবিরের সমর্থকরা, এদিন সেই সব কথা স্মরণ করেন মুখ্যমন্ত্রী ৷
তিনি বলেন, "পাঁচ বছর আগে আমি নৈহাটিতে এসেছিলাম ৷ সেদিন রাস্তায় আমাকে অনেক অকথা-কুকথা শুনতে হয়েছিল ৷ আমাদের পার্টি অফিসগুলো ওরা (গেরুয়া শিবির) দখল করে নিয়েছিল ৷ আমি নিজে হাতে সেই পার্টি অফিসের দেওয়ালে রং করে গিয়েছিলাম ৷ আজ দেখে এলাম, সেই রঙ এখনও রয়েছে ৷ সেদিন আসলে আমি সাহস দিতে চেয়েছিলাম ৷"