দার্জিলিং, 12 নভেম্বর:পাহাড়ের বিভিন্ন জনজাতির উন্নয়ন বোর্ডের কার্যকলাপের উপর রাশ টানলেন মুখ্যমন্ত্রী। মঙ্গলবার রিচমন্ড হিলে পাহাড় সফরের দ্বিতীয় দিনে জিটিএ, দার্জিলিং ও কালিম্পং জেলা প্রশাসন এবং বিভিন্ন উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানদের সঙ্গে প্রশাসনিক বৈঠক সারেন মুখ্যমন্ত্রী।
আর সেই বৈঠকের পরই আগামী এক থেকে দেড় মাসের মধ্যে সমস্ত উন্নয়ন বোর্ড পুনর্গঠন করার পাশাপাশি সেই সব বোর্ডের অডিট, প্রকল্পের অগ্রগতির উপর নজরদারির জন্য মনিটরিং সেল তৈরি করার সিদ্ধান্ত নেন মুখ্যমন্ত্রী। ওই সেলের চেয়ারম্যান করা হবে জিটিএ'র চিফ এক্সিকিউটিভ অনিত থাপা, ভাইস চেয়ারম্যান করা হবে মিরিক পুরসভার প্রশাসক তথা হিল তৃণমূল কংগ্রেসের চেয়ারম্যান এলবি রাইকে। এছাড়াও, মনিটরিং কমিটিতে রাখা হবে দুই জেলার জেলাশাসককে।
পাহাড়ের উন্নয়ন বোর্ডের উপর রাশ টানলেন মমতা (ইটিভি ভারত) এছাড়াও, এদিন মুখ্যমন্ত্রী পাহাড়ের উন্নয়নে একাধিক উদ্যোগের কথা ঘোষণা করেন। পাহাড়ে ট্রাফিকের সমস্যা সমাধানে অত্যাধুনিক পার্কিংয়ের ব্যবস্থার পাশাপাশি একটি মার্কেট কমপ্লেক্স নির্মাণের ছাড়পত্র দিয়েছেন তিনি। যেখানে বিল্ডিংয়ের দুটো তলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর জন্য বরাদ্দ করা হবে। সেইখানে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর তৈরি সামগ্রী সরাসরি বিক্রি করা যাবে। এছাড়াও পাহাড়ে চারটি স্কিল ডেভলপমেন্টের প্রতিষ্ঠান খোলার কথা জানান মুখ্যমন্ত্রী।
যেখানে পাহাড়ের যুবক যুবতীরা তিন মাসের কারিগরি শিক্ষা নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় চাকরির সুযোগ পাবে। পাশাপাশি, পাহাড়ে চা-বাগানের শ্রমিকদের আগামীতে আরও বেশি পাট্টা দেওয়ার কথা জানান মুখ্যমন্ত্রী। জমি চিহ্নিত হলেই সেই কাজও সংশ্লিষ্ট দফতরের তরফে করা হবে বলে তিনি জানান ৷
প্রসঙ্গত, 2017 সালের পাহাড়ে পৃথক রাজ্য গোর্খাল্যান্ডের আন্দোলন স্তিমিত হলে নির্বাচিত জিটিএ বোর্ড না-থাকায় উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন জনজাতির দাবিতে পৃথক পৃথক বোর্ড গঠন করে দেন মুখ্যমন্ত্রী। সব মিলিয়ে মোট 16টি উন্নয়ন বোর্ড গঠন করা হয়। প্রতিবছর ওই বোর্ডগুলিকে দু'কোটি টাকা করে বরাদ্দ করা হত। কিন্তু পরবর্তীতে ওই সব বোর্ডের কাজ নিয়ে দুর্নীতির বিস্তর অভিযোগ উঠতে শুরু করে। সরাসরি ওই দুর্নীতি নিয়ে জিটিএ'র তৎকালীন প্রশাসক ও বর্তমান চিফ এক্সিকিউটিভ অনিত থাপা-সহ জেলা প্রশাসনের কাছে ভূরি ভূরি অভিযোগ প্রকাশ্যে আসতে শুরু করে। আর এদিনের বৈঠকে সেসব নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী আর তার পরেই ওই বোর্ডগুলিকে জিটিএ ও জেলা প্রশাসনের প্রস্তাব অনুযায়ী পুনর্গঠন করার পাশাপাশি মনিটরিং সেল তৈরির সিদ্ধান্ত নেন মুখ্যমন্ত্রী।
- এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "বোর্ডগুলির কাজের সুবিধার জন্য সেগুলিকে এক থেকে দেড় মাসের মধ্যে পুনর্গঠন করা হবে। একটি মনিটরিং সেল করা হবে কাজের সুবিধার জন্য। অনিত যেহেতু জিটিএ'র নির্বাচিত প্রতিনিধি তাই তাকে ওই সেলের চেয়ারম্যান করা হবে আর এলবি রাই হবে ভাইস চেয়ারম্যান।"
- অনিত থাপা বলেন, "দিদি পাহাড়ে আসলে কিছু নিতে নয়, দিতেই আসেন। তিনি পাহাড়ের উন্নয়নই চান। সেটা এখন পাহাড়বাসী ধীরে ধীরে বুঝতে পারছে। আমরা সরকারের সঙ্গে মিলে আগামীতে আরও উন্নয়নের কাজ করব। আমরা বরাবর রাজ্য সরকারের সঙ্গে রয়েছি। দিদি পাহাড়কে খুব ভালোবাসেন। এভাবেই রাজ্য ও দিদির সহযোগিতায় পাহাড় উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যাবে বলে আমরা আশাবাদী।"