মালদা, 7 ডিসেম্বর: টেস্ট পরীক্ষায় খারাপ নম্বর পাওয়ায় বকাঝকা করেন বাবা-মা ৷ সেই অভিমানে চরম পদক্ষেপ নিয়ে ফেলল 15 বছরের মাধ্যমিকের ছাত্রী ৷ ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার নাবালিকার ঘর থেকে ৷ পুরাতন মালদার ঘটনা ৷
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতের নাম অঙ্কিতা নন্দী ৷ শুক্রবারই স্কুলে মাধ্যমিক টেস্টের ফল প্রকাশ হয়েছিল তার ৷ অংক আর ইংরেজিতে নম্বর খুবই কম পেয়েছিল অঙ্কিতা ৷ অন্য বিষয়গুলিতেও নম্বর খুব ভালো নয় ৷ তাই টেস্ট উত্তীর্ণর তালিকায় তার নাম ছিল না ৷
শিক্ষিকারা তাকে বলেছিলেন, শনিবার সে যেন অভিভাবককে নিয়ে স্কুলে আসে ৷ বাড়ি ফেরার পর সে বাবা-মাকে বিষয়টি জানায় ৷ সন্তান পরীক্ষায় খারাপ ফল করলে যে কোনও বাবা-মা’ই খানিকটা বকাঝকা করেন ৷ অঙ্কিতার ক্ষেত্রেও সেটাই ঘটেছিল ৷ বাবা জানিয়ে দিয়েছিলেন, মেয়ের এই ফল নিয়ে তিনি শিক্ষিকাদের সামনে মুখ দেখাতে পারবেন না ৷ তিনি স্কুলে যাবেন না ৷ অভিমান হয়েছিল মেয়ের ৷ সেই অভিমান থেকে চরম সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে ৷
যখন বাড়ির লোকজন টের পান, তখন না ফেরার দেশে পাড়ি দিয়েছে অঙ্কিতা ৷ বাড়ির লোকজন তবু তাকে তড়িঘড়ি মালদা মেডিক্যালে নিয়ে যান ৷ কিন্তু চিকিৎসকরা জানিয়ে দেন, বেশ কিছুক্ষণ আগেই মৃত্যু হয়েছে তার ৷ খবর পেয়ে স্থানীয় থানার পুলিশ দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য মালদা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠিয়েছে ৷
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অঙ্কিতার বাবা উত্তম নন্দী বেকারি ব্যবসায়ী ৷ তিনি মালদা জেলা শিবসেনার অন্যতম নেতা ৷ মা পায়েল নন্দী বাড়ির দায়িত্ব সামলান ৷ অঙ্কিতার একটি বোন আছে ৷ ক্লাস থ্রিতে পড়ে সে ৷ বাড়িতে দুই বোনের আলাদা ঘর রয়েছে ৷ মালদা শহরের কৃষ্ণমোহন বালিকা বিদ্যালয়ে দশম শ্রেণির ছাত্রী ছিল অঙ্কিতা ৷ কিছুদিন পরেই মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসার কথা ছিল তার ৷ কিন্তু জীবনের সবচেয়ে বড় বোর্ডের পরীক্ষা দেওয়া হল না অঙ্কিতার ৷
মেয়ের এহেন মৃত্যুতে কথা বলার অবস্থায় ছিলেন না উত্তম কিংবা পায়েল নন্দী ৷ জ্যেঠু সুব্রত নন্দীর কথায়, "মাধ্যমিকের টেস্ট পরীক্ষায় খারাপ ফল হওয়ার জন্য শুক্রবার বাড়িতে ওকে বকাঝকা করা হয়েছিল ৷ এটা খুব স্বাভাবিক ঘটনা ৷ তারপর সব ঠিকও হয়ে যায় ৷ আজ সকালে ঘুম থেকে উঠেছে, হরলিক্স তৈরি করে খেয়েছে ৷ তারপর সকাল 7টা 50 মিনিট নাগাদ এই ঘটনা ঘটিয়ে ফেলে ৷ পরীক্ষার ফল খারাপ হওয়ার জন্যই ভাইঝি চরম সিদ্ধান্ত নেয় ৷"
মালদা থানার এক আধিকারিক জানিয়েছেন, এই ঘটনায় একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে ৷ মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মালদা মেডিক্যালে পাঠানো হয়েছে ৷