বারাসত, 9 জুন: বাংলাদেশি সাংসদ আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যাকাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত ধৃত সিয়াম হোসেনকে শনিবার পেশ করা হয় বারাসত জেলা আদালতে । তদন্তকারীদের তরফে এ দিন 14 দিনের সিআইডি হেফাজত চেয়ে আবেদন জানানো হয় আদালতের ভারপ্রাপ্ত মুখ্য বিচারকের এজলাসে । বিচারক সঙ্গীতা লেট সিআইডি'র সেই আবেদন মঞ্জুর করেছেন । অর্থাৎ, 14 দিনের সিআইডি হেফাজতে থাকাকালীন ধৃতকে জেরা করে প্রতিবেশী দেশের সাংসদ খুনের মামলার তথ্য পেতে সব রকম চেষ্টা করবেন তদন্তকারীরা । ফলে এই সময়ে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে বহু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মিলতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে সিআইডি সূত্রে । তাতে গতি আসবে তদন্তে ।
ধৃত সিয়ামের 14 দিনের সিআইডি হেফাজত (ইটিভি ভারত) আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত সিয়াম হোসেনের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির 364 (হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণ), 302 (অপরাধমূলক নরহত্যা।), 201 (তথ্য প্রমাণ লোপাট) এবং আইপিসি-র 34 (সংঘবদ্ধভাবে অপরাধমূলক কাজ সংঘটিত করা)-এমনই সব জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু হয়েছে ।
এই বিষয়ে বারাসত আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর মন্দাক্রান্তা মুখোপাধ্যায় বলেন, "খুনের পুনর্নির্মাণ, সাংসদ আনারের দেহের টুকরোর সন্ধান ছাড়াও নৃশংস এই হত্যায় কী কী অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছিল, সেগুলি উদ্ধার করা প্রয়োজন । অন্যদিকে, সাংসদ খুনের তদন্তে গতি আনাটাও গুরুত্বপূর্ণ । সেই কারণে ধৃত সিয়ামকে 14 দিনের সিআইডি হেফাজত চেয়ে আবেদন জানানো হয়েছিল । আদালত সেই আবেদন মঞ্জুর করেছে ।" পরবর্তীতে ধৃত সিয়ামের বিরুদ্ধে 120-বি (অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র)-ধারাও যুক্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটার ।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার রাতে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী বনগাঁ থেকে সাংসদ আনোয়ারুল আজিম আনার খুনের অন্যতম অভিযুক্ত সিয়াম হোসেনকে পাকড়াও করে সিআইডি । সেদিন রাতেই এক প্রেস বিবৃতিতে একথা জানানো হয় সিআইডি'র তরফে । সিআইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত সিয়াম হোসেনের বাড়ি বাংলাদেশের ভোলা জেলার বুরহাদউদ্দিন গ্রামে । 33 বছর বয়সি সিয়াম এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন । আত্মগোপন করেছিলেন বনগাঁ সীমান্তে । তাঁর সেই আত্মগোপনের খবর পেয়ে সেখানে হানা দেয় সিআইডি'র তদন্তকারী দল । তাতেই সাফল্য মেলে । আওয়ামী লিগ সাংসদ হত্যাকাণ্ডে সিয়ামকে নিয়ে এখনও পর্যন্ত দু'জনকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি ।
এর আগে এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে জিহাদ হাওলাদার নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছিল সিআইডি । তাঁকে জেরা করেই সিয়ামের খুনে জড়িত থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হন তদন্তকারীরা । এরপরই সাংসদ আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যা মামলায় সিয়ামকে গ্রেফতার করতে উঠে পড়ে লাগে সিআইডি'র আধিকারিকরা ।