কলকাতা, 1 মে:ময়নায় বিজেপি কর্মীর রহস্যমৃত্যুতে দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্তের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট । বুধবার বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত নির্দেশ দিয়ে বলেন, কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্তের সময় ভিডিয়োগ্রাফি করতে হবে । সাক্ষীদের বয়ান গ্রহণ করতে হবে ভিডিয়োগ্রাফি করে । এখন থেকে তদন্ত প্রক্রিয়ার পুরোটাই ভিডিয়োগ্রাফি করতে হবে বলে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি । বিচারপতি আরও জানিয়েছেন, এসএসকেএম সুপারের তত্ত্বাবধানে দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হবে । আর পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপারের তত্ত্বাবধানে তদন্ত চলবে । 7 মে এই মামলার পরবর্তী শুনানি ।
আদালতের পর্যবেক্ষণ, আদালতে পুলিশের জমা দেওয়া ছবি থেকে, মৃতদেহে কিছু সমস্যা নজরে এসেছে । প্রথম ময়নাতদন্তের রিপোর্টে কিছু জিনিসের অভাব রয়েছে, তাই আদালত মনে করছে দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্তের প্রয়োজন । কেন্দ্রের পক্ষের আইনজীবী জানান, রেলওয়ে হাসপাতালে দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের পরিকাঠামো নেই । অন্যদিকে, কমান্ড হাসপাতালে ফরেন্সিক অফিসারের সমস্যা রয়েছে ।
মামলাকারী আর্জি জানান, ইএসআই-তে পরিকাঠামো আছে । কমান্ড হাসপাতালে দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের ব্যবস্থা আছে । তবে যদি দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের জন্য আদালত এসএসকেএমকে সঠিক মনে করে, তবে একটা কমিটি গঠন করা হোক, যেখানে কেন্দ্রের প্রতিনিধি থাকবে ।
উল্লেখ্য, ময়নায় রহস্যমৃত্যু হয় দীনবন্ধু মিদ্যা নামে এক যুবকের । 24 এপ্রিল থেকে তিনি নিখোঁজ ছিলেন । থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল । 25 এপ্রিল পানের বরোজ থেকে ওই যুবকের ঝুলন্ত দেহ পাওয়া যায় ৷
রাজ্য গতকাল জানিয়েছিল, "ময়নাতদন্তের ভিডিয়োগ্রাফি করা হয়েছে । প্রচুর ভিড় ছিল ঘটনাস্থলে । প্রাথমিক ভাবে একটা লাভ অ্যাঙ্গেল আমরা পাচ্ছি । আরও তদন্ত দরকার । ছেলেটি রাজনীতির সঙ্গে কোনও ভাবে যুক্ত ছিলেন না ।"
বিচারপতি তখন জানতে চান, "দেহ যখন গাছে ঝুলছিল তখন পুলিশ ছবি তুলেছে ? ফোনে ছবি থাকলে মামলার মধ্যে এটা যুক্ত হবে কীভাবে ! এরপর বলবেন ফোন জলে পড়ে ছবি নষ্ট হয়ে গিয়েছে । ছবিতে ঝুলন্ত অবস্থায় হাঁটু মুড়ে গিয়েছে দেখা যাচ্ছে । আমি অবাক হয়ে যাচ্ছি চিকিৎসক এটা আত্মহত্যা নাকি খুন কিছুই বলেননি রিপোর্টে ।" রাজ্য তখন জানায়, সাধারণত পানের বরোজে দেহ ঝুলতে থাকলে দেহ নেমে যায় । তাই হাঁটু মুড়ে গিয়েছে ।
বিচারপতি আজকের শুনানিতে ময়নাতদন্তের ভিডিয়ো ফুটেজ ও কেস ডায়রি হাজির করার নির্দেশ দিয়েছিলেন । পাশাপাশি তিনি জানান, আপাতত দেহ মর্গে সংরক্ষণ করতে হবে ।
এ দিন বিচারপতি রাজ্যের রিপোর্ট দেখার পর বলেন, খুনের তত্ত্ব ওড়ানো যাচ্ছে না । তবে কীভাবে, কী উদ্দেশ্যে খুন হতে পারে সেটা জানা জরুরি ।বিচারপতি জানতে চান, কত জনের নামে অভিযোগ রয়েছে ? মামলাকারীর আইনজীবী জানিয়েছেন, "22 জন সন্দেহের তালিকায় রয়েছেন । তাঁদের নামে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে । এই 22 জনের তরফ থেকে বিজেপি ছাড়ার জন্য তাঁকে চাপ দেওয়া হচ্ছিল ।"
আরও পড়ুন:
- নির্বাচনী আবহে বিজেপি কর্মীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার পানের বরজে, কাঠগড়ায় তৃণমূল
- তান্ত্রিক সন্দেহে বৃদ্ধকে মলমূত্র খাওয়ানোর অভিযোগ, মালদায় উদ্ধার ঝুলন্ত দেহ
- ধর্ষণের পর খুন! গাছ থেকে উদ্ধার দুই নাবালিকার ঝুলন্ত দেহ