কলকাতা, 29 জানুয়ারি: সন্দেশখালি গণধর্ষণের মামলার তদন্তে বিশেষ তদন্তকারী দল এসআইটি (SIT) গঠনের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট ৷ বুধবার এই মামলায় বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ নির্দেশ দেন, লালবাজারের হোমিসাইড শাখার অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার বীরেশ্বর চট্টোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে গঠিত এই সিট সন্দেশখালি গণধর্ষণ মামলার তদন্ত করবে ৷
সিটের আরেক সদস্য হলেন বাদুরিয়া বসিরহাট পুলিশ ডিস্ট্রিক্ট-এর এসডিপিও, আইপিএস রাহুল মিশ্র ৷ তিনি বিশেষ তদন্তকারী দলের সদস্য হিসবে নিযুক্ত হবেন ৷ তাঁরা ঠিক করবেন এই সিট-এ আর কাদের রাখা হবে ৷ এক মাস অন্তর তদন্তের অগ্রগতি রিপোর্ট এসিজেএম বসিরহাটে জমা দিতে হবে সিট-কে ৷
সন্দেশখালি গণধর্ষণের মামলায় নিয়ে বলছেন মামলাকারী পক্ষের আইনজীবী (ইটিভি ভারত) যে সমস্ত নমুনা সংগ্রহের প্রয়োজন রয়েছে সেগুলির জন্য ফরেনসিক এক্সপার্টরা যাবেন ঘটনাস্থলে ৷ পুলিশি নিরাপত্তা যদি সরাতে হয়, তাহলে রাজ্যকে বসিরহাটের আদালতে জানাতে হবে ৷ সেই অনুযায়ী এই বিষয়ে বিচারক সিদ্ধান্ত নেবেন ৷ আপাতত নির্যাতিতার পুলিশি নিরাপত্তা বহাল রাখার নির্দেশ হাইকোর্টের ৷
এদিনের শুনানিতে নির্যাতিতার তরফে আইনজীবী সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায় বলেন, "অত্যন্ত গুরুতর অভিযোগ ৷ আবেদনকারী সন্দেশখালিতে যেতে পারছেন না ৷ তাঁর স্বামী একজন সিভিক ভলান্টিয়ার ৷ তাঁকে প্রতিদিন হুমকি দেওয়া হচ্ছে ৷ পুলিশের তদন্তে একেবারেই ভরসা করা সম্ভব নয় ৷ দল বেঁধে টেনে হিঁচড়ে পুকুর পাড়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল তাঁকে ৷ দিলীপ মল্লিক, সৈকত দাসরা দলবদ্ধভাবে এই ঘটনা ঘটিয়েছিলেন ৷ এটা একটা দলবদ্ধ অপরাধ ৷ সিবিআই তদন্তই করতে হবে এমন নয় ৷ কোনও নিরপেক্ষ তদন্ত হোক ৷"
রাজ্যের তরফে অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি) কিশোর দত্ত বলেন, "এটা ধর্ষণ নয় ৷ ধর্ষণের প্রচেষ্টা বলেই মনে হচ্ছে ৷ অভিযোগকারীর যে গোপন বয়ান নেওয়া হয়েছে, সেটা থেকে এটাই মনে হচ্ছে ৷" যাই ঘটে থাকুক, যাতে সর্বোচ্চ তদন্ত হয় তার বিরোধিতা করছে না রাজ্য, আদালতে জানান তিনি ৷
উত্তর 24 পরগনার সন্দেশখালির তৃণমূলের ব্লক সভাপতি দিলীপ মল্লিক, সৈকত দাস ওরফে পিকাই-সহ তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে গত 7 জানুয়ারি হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেন ওই নির্যাতিতা ৷ গত বছর 15 এপ্রিল ঘটনাটি ঘটেছিল ৷ এরপর 16 মে সন্দেশখালি থানায় গণধর্ষণের অভিযোগ করেছিলেন নির্যাতিতা ৷ পুলিশ প্রশাসনের বিরুদ্ধে অভিযোগ, অভিযুক্তদের এখনও গ্রেফতার করা হয়নি ৷
তাঁকে মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে গণধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন নির্যাতিতা ৷ শুধু তাই নয়, নির্যাতিতার আরও অভিযোগ, এখন তাঁকে লাগাতার হুমকি দেওয়া হচ্ছে ৷ অভিযোগ তুলে নেওয়ার জন্য তাঁকে চাপও দেওয়া হচ্ছে ৷ আদালতের কাছে সুরক্ষা ও অভিযুক্তদের শাস্তির দাবিতে মঙ্গলবার হাইকোর্টে মামলা করেন নির্যাতিতা ৷