বৌদ্ধ মন্দিরের আদলে গড়ে উঠছে সরস্বতী পুজোর মণ্ডপ বেহালা, 7 ফেব্রুয়ারি: সরস্বতী পুজো এলেই মনে পড়ে আগের দিন রাত থেকে থার্মোকল, বেতের বেড়া জোগাড় করে পাড়ায় পাড়ায় ছেলেমেয়েদের প্যান্ডেল বাঁধা, ঠাকুর আনার হিড়িক । আর প্যান্ডেলের চারধারে পাড়ার ছেলেমেয়েদের আঁকা টানিয়ে প্রদর্শনী । আগের দিন রাতেই ঠাকুর, দশকর্মার বাজার, ফলফলাদির বাজার সেরে ফেলা । কেন না রাত পোহালেই পুজোর তোড়জোড় । এখন সেই চিত্রটা খানিকটা হলেও বদলেছে । দুর্গাপুজোর পাশাপাশি সরস্বতী পুজোতেও লেগেছে থিমের ছোঁয়া । কোথাও থিম না হলেও প্যান্ডেলে থাকছে রকমারি । বেহালা কিশোর সংঘে প্রতি বছরই কোনও না কোনও নতুন ঢঙে সেজে ওঠে । এ বছরেও অন্যথা হবে না তার । এবার তাদের নতুন ভাবনা 'বৌদ্ধ মন্দির' ।
উদ্যোক্তা সমীরণ দাসের কাছ থেকে জানা গিয়েছে, নির্দিষ্ট কোনও প্যাগোডার অনুকরণে নয়, শিল্পীর একেবারে নিজস্ব ভাবনায় গড়ে উঠছে বেহালা কিশোর সংঘের প্রাক সুবর্ণ জয়ন্তী বর্ষের সরস্বতী পুজোর মণ্ডপ । তিনি বলেন, "সিকিম, ভুটানে বা পৃথিবীর যে কোনও প্রান্তে গেলে আমরা বহু প্যাগোডা দেখি । সেগুলো দেখে আমাদের মনের মধ্যে একটা ছবি তৈরি হয় । সেগুলিকে এক জায়গায় এনেই আমাদের এবারের পুজো মণ্ডপ । জোরকদমে চলছে মণ্ডপ তৈরির কাজ । প্রতিমা তৈরির কাজ শেষ ।"
শিল্পী বিপ্লব রক্ষিত বলেন, "শিক্ষা নিয়ে চারদিকে যে অরাজকতা চলছে সেখানে একটা শান্তির দরকার ৷ আর গৌতম বুদ্ধ হলেন শান্তির প্রতিমূর্তি । তাই বৌদ্ধ মন্দিরের আদলে এবারের থিম । কোনও বৌদ্ধ মন্দিরে ঢুকলে আমরা সোনালি রঙের বুদ্ধমূর্তি দেখি । তাই সোনালি রঙের দেবী স্থাপন করছি এবার । মেন গেটে থাকবে ড্রাগন । রাতে ড্রাগনের মুখ থেকে বেরোবে আগুন । সবটাই আলোর খেলায় । আলোয় ঝলমল করবে আমাদের এবারের পুজো মণ্ডপ ।"
প্রতিমাসজ্জাতে ব্যস্ত শিল্পী বেহালা কিশোর সংঘের পুজো মণ্ডপ তৈরির শেষ সময়ের প্রস্তুতি চলছে । তাদের এবারের পুজোর ট্যাগলাইন 'চার হাতের চমৎকার'। চারজন শিল্পীর সমন্বয়ে বাণী বন্দনার ভাবনা পূর্ণতা লাভ করতে চলেছে এবার । এই চার শিল্পীরা হলেন প্রতিমা শিল্পী বিপ্লব রক্ষিত, মণ্ডপ শিল্পী তরুণ দাস, আলোক সজ্জায় শেখ আসলাম হোসেন (মন্টু) এবং আবহ সঙ্গীতে সৈকত দেব । আগামী 13 ফেব্রুয়ারি পুজোর উদ্বোধন হবে বৌদ্ধ মঠের পুরোহিতদের হাত ধরে বলে জানিয়েছেন উদ্যোক্তারা ।
আরও পড়ুন:
- সরস্বতী পুজোর দিনে বইপুজো করার রীতি কেন ? জানুন বিশেষজ্ঞের মতামত
- তত্ত্বের আড়ালে হারায় মন, সম্প্রীতির বন্ধনে বাঁধা পড়ে ছাত্রছাত্রী নিবাস
- পুরোহিতের আসতে দেরি, কলকাতার এই স্কুলে শিক্ষিকারাই করলেন বাণী বন্দনা