আলিপুরদুয়ার, 27 সেপ্টেম্বর: এখানে লক্ষ্মী-গণেশ থাকেন ডান দিকে। আর কার্তিক-সরস্বতী থাকেন মায়ের বাঁ-দিকে। বাড়ির বড় ছেলে শত্রু বলি দেন। প্রাচীন বনেদি বাড়ির দুর্গাপুজোর মধ্যে অন্যতম আলিপুরদুয়ারের গঙ্গোপাধ্যায়ের বাড়ির পুজো। এই পুজো এবার 365 বছরে পদার্পণ করল।
তবে এই পুজো শুরু হয়েছিল বাংলাদেশের ফরিদপুর জেলার মাদারিপুর মহকুমার অন্তর্গত মহিষার গ্রামে। বাংলাদেশ থেকে আনা প্রতিমার কাঠামোতে আজও আলিপুরদুয়ারে পূজিত হন মা। বংশ পরম্পরায় কুমোররা তৈরি করে আসছেন এই দুর্গা প্রতিমা।
শত্রু-বলিতেই সম্পূর্ণ হয় গঙ্গোপাধ্যায় বাড়ির পুজো (ইটিভি ভারত) পুজোর সূচনা- প্রথম পুজো শুরু হয়েছিল ফরিদপুরেই। উমাচরণ গঙ্গোপাধ্যায় শুরু করেছিলেন পুজো। বাংলাদেশের ফরিদপুর থেকে 1911 সালে আলিপুরদুয়ারে চলে আসে গঙ্গোপাধ্যায় পরিবার। তারপর আলিপুরদুয়ারের দিলীপ গঙ্গোপাধ্যায় শুরু করেছিলেন এই পুজো। তখন থেকে এখানেই হয়ে আসছে পুজোর আয়োজন। বর্তমানে বাড়ির বড় ছেলে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় পুজোর দায়িত্ব নিয়েছেন।
বাংলাদেশ থেকে আনা প্রতিমার কাঠামোতে আজও আলিপুরদুয়ারে পূজিত হন মা (নিজস্ব ছবি) পুজোর বিশেষ নিয়ম-এখানে দেবীর মূর্তিতে খানিকটা পার্থক্য রয়েছে। কার্তিক ও সরস্বতী থাকে দেবীর ডানদিকে। লক্ষ্মী ও গণেশ থাকে বাঁ-দিকে। এছাড়াও নবমীতে চালবাটা দিয়ে মানুষ তৈরি করে শত্রু বলি প্রথা আজও চালু রয়েছে।
পুজোর অন্যতম আয়োজক সুব্রত গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, "পুজোয় প্রতিদিন খিচুড়ি ভোগ দেওয়া হয় মাকে। থাকে পায়েস, লুচি। এছাড়াও মাছের একটি পদ দেবীর ভোগে দেওয়া হয়। পুজো শুরু হয় প্রথমা থেকেই। বিদেশের পরিজনরা চলে আসেন পঞ্চমীতে। আমাদের দুর্গাপুজো মানেই একটা রি-ইউনিয়ন। বহুদিন ধরে এই পুজো চলে আসছে একটা কাঠামোর মধ্যেই প্রতিমা তৈরি হয়ে আসছে। 1911 সাল থেকে আলিপুরদুয়ারে আমরা প্রতিবছর পুজো করি। বাড়ির বড় ছেলে হিসেবে চালের মণ্ড দিয়ে শত্রু বলি হয়।"
গঙ্গোপাধ্যায় পরিবারে তৈরি হচ্ছে মা (নিজস্ব ছবি) বাড়ির অন্যতম সদস্য দিলীপ গঙ্গোপাধ্যায় জানান, পুজোর কাজ পরিচালনার জন্য সব দায়িত্ব বন্টন হয়ে গিয়েছে। ধীরে ধীরে বাজারঘাট শুরু হবে ৷ হরচরণ গঙ্গোপাধ্যায় 1660 সালে এই পুজো শুরু করেছিলেন। বাড়ির বড় ছেলে পেশায় আইনজীবী সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় জানান, এবারের পুজো 365তম বর্ষে। আমাদের পুজো বাংলাদেশের। পূর্বপুরুষরা যে ধারা বহন করে পুজো করতেন সেটাই বহন করার চেষ্টা করি আমরা। আগে একান্নবর্তী পরিবার ছিল ৷ এখন সবাই কর্মসূত্রে বাইরে থাকেন ৷