কলকাতা, 23 মে: বাংলাদেশের সাংসদ আনোয়ারুল আজিম খুনকাণ্ডে নয়া তথ্য এল তদন্তকারীদের হাতে ৷ গোয়ান্দা সূত্রে খবর, সাংসদকে হত্যা করার জন্য প্রায় 5 কোটি টাকার সুপারি দেওয়া হয়েছে ৷ সাংসদরেই এক বন্ধু এই টাকা দিয়েছিল বলেও জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা ৷ বৃহস্পতিবার এমনটাই জানিয়েছেন সিআইডি-র এক শীর্ষ আধিকারিক ৷
বাংলাদেশের সাংসদ খুনের তদন্তভার ইতিমধ্যেই সিআইডি হাতে নিয়েছে। বৃহস্পতিবার সিআইডি-র এক আধিকারিক সংবাদ সংস্থা পিটিআই-কে বলেন, “এটি একটি সুপরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড ছিল। বিপুল পরিমাণ অর্থ অর্থাৎ প্রায় 5 কোটি টাকা বাংলাদেশ সাংসদের এক পুরনো বন্ধু তাঁকে হত্যা করার জন্য দিয়েছিল ৷” ওই আধিকারিক আরও জানিয়েছেন, আওয়ামী লিগ সাংসদের ওই বন্ধু আমেরিকার নাগরিক ৷ কলকাতায় তাঁর একটি ফ্ল্যাটও আছে। এর আগে বুধবার সিআইডি-র আইজি অখিলেশ চতুর্বেদী জানিয়েছিলেন, তাঁর দেহ এখনও উদ্ধার করা যয়নি ৷ তবে নিউটাউনের যে ফ্ল্যাটে সাংসদ ছিলেন, সেখানে পুলিশ রক্তের দাগ পেয়েছে ৷ ফরেনসিক দল সন্দেহজনক যাবতীয় বিষয় পরীক্ষা করছে।
আরও পড়ুন: নিউটাউনে উদ্ধার বাংলাদেশের সাংসদ আনোয়ারুল আজিমের দেহ, মৃত্যুর কারণ ঘিরে রহস্য
এদিন সকালে সিআইডি-র আইজি অখিলেশ চতুর্বেদী জানান, নিউটাউনের যে আবাসনে সাংসদ আনোয়ারুল ছিলেন, জানা গিয়েছে সেই ফ্ল্যাটটির মালিক একজন সরকারি কর্মচারী। তিনি আবার আখতারুজ্জামান নামে এক ব্যক্তিকে ফ্ল্যাটটি ভাড়া দেন। অখিলেশ চতুর্বেদী বলেন, "আখতারুজ্জামান আমেরিকার নাগরিক। কিন্তু আখতারুজ্জামানের নামে ভাড়া নেওয়া ফ্ল্যাটে কীভাবে বাংলাদেশের সংসদ সদস্য থাকলেন, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই নানা প্রশ্ন উঠেছে।"
তবে পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, খুনের পর সাংসদের দেহ নিউটাউনের ফ্ল্যাটেই টুকরো করে কাটা হয়। পরে সেই দেহাংশ যাতে পচে না যায় তার জন্য সেগুলি ফ্রিজে রাখা হয়েছিল। পরে সেগুলি অন্যত্র পাচার করা হয়ে বলেও জানাচ্ছে পুলিশ ৷ ব্যাগে করে খুব সম্ভাবত সেগুলি অন্যত্র পাচার করা হয় বলে অনুমান তাদের। সিআইডি গোয়েন্দাদের অনুমান, খুব সম্ভবত নিউটাউনের ফ্ল্যাট থেকে যে ফ্রিজ মিলেছে তার মধ্যেই রাখা ছিল দেহাংশগুলি। সেই ফ্রিজে দুটি জলের বোতল ছাড়া আর কিছুই মেলেনি বলেও জানাচ্ছেন গোয়েন্দারা ৷
পাশাপাশি, এই বিষয় বাংলাদেশ পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের সঙ্গে কথা বলে এই রাজ্যের গোয়েন্দারা জানতে পারেন, ঘটনার দিন বরানগর থেকে নিউটাউন আসার আগে ওই সাংসদ একাধিকবার ক্যাব পরিবর্তন করেন ৷ পরে তিনি নিউটাউনের ফ্ল্যাটে ওঠেন। মাঝ রাস্তা থেকে ওই ক্যাবে এক মহিলাও ওঠেন বলেও সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে। কিন্তু কে ওই মহিলা, তা এখনও জানা যায়নি বলেই গোয়েন্দারা জানাচ্ছেন ৷ এই ঘটনায় বাংলাদেশ পুলিশের হাতে তিন জন গ্রেফতার হলেও এখনও বেশ কয়েকজন পলাতক রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। তাদের খোঁজ চালাচ্ছেন রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দারা।
আরও পড়ুন:সাংসদ খুনে বাংলাদেশে গ্রেফতার 3; পরিকল্পিত খুন, দাবি হাসিনার মন্ত্রীর