রাজনৈতিক সৌজন্যবোধের উদাহরণ দুর্গাপুরে দুর্গাপুর, 1 মে: কবিগুরুর কথায়, দিবে আর নেবে, মিলাবে মিলিবে, যাবে না ফিরে...। রাজ্যে লোকসভা নির্বাচনের আবহে তপ্ত বাগবিতণ্ডায় রাজনীতিবিদরা শালীনতার সীমা লঙ্ঘন করে যাচ্ছেন কখনও কখনও । রাজনৈতিক ময়দানে লড়াই করতে করতে সেই লড়াই পৌঁছে যাচ্ছে ব্যক্তিগত জীবনেও । কদর্য ভাষার ব্যবহার এবং বারবার বিতর্কে শিরোনামে থাকাটাকেও অনেকে তার পক্ষের প্রচার বলে মনে করছেন । সেই প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে রাজনৈতিক সৌজন্যবোধ ও মানবিক শিষ্টাচারের দৃষ্টান্ত দেখা গেল শহর দুর্গাপুরে ।
গত সোমবার দুর্গাপুরের সেপকো টাউনশিপের বাসিন্দা ভারতের জাতীয় কংগ্রেসের পশ্চিম বর্ধমান জেলার সভাপতি দেবেশ চক্রবর্তীর মাতৃবিয়োগ হয় । এই ঘটনার পর 24 ঘণ্টা যেতে না যেতেই প্রথমে মঙ্গলবার রাতে তাঁর বাড়িতে যান তৃণমূল কংগ্রেসের পশ্চিম বর্ধমান জেলার সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী । দীর্ঘক্ষণ দেবেশ চক্রবর্তীর সঙ্গে কথা বলেন তিনি । এরপরে বুধবারে সাত সকালেই দেবেশের বাড়িতে এসে হাজির হলেন বর্ধমান- দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষ ৷ তাঁর সঙ্গে ছিলেন দুর্গাপুর পশ্চিম কেন্দ্রের বিজেপি বিধায়ক লক্ষ্মণ ঘোড়ুই-সহ অন্যান্য বিজেপি নেতৃবৃন্দ ।
বিজেপি ও কংগ্রেস নেতাদের কথায়, রাজনৈতিক লড়াই হোক । তবে সেই লড়াই সীমাবদ্ধ থাকুক নীতির লড়াই পর্যন্ত । ইস্যু ভিত্তিক লড়াই হোক, কিন্তু সেই লড়াই যখন শালীনতার সীমা লঙ্ঘন করে যায় তখন রাজনীতি সম্পর্কে আমজনতার ধারণাটাই বদলে যায় । দেবেশ চক্রবর্তী বলেন, "এটাই তো পশ্চিমবঙ্গের কৃষ্টি এবং সংস্কৃতি । দেশজুড়ে যখন এক রাজনৈতিক বিদ্বেষ, হিংসা হানাহানি প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে আমার মাতৃ বিয়োগের কথা শুনে গতকাল এসেছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি তথা পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী এবং আজকে এসেছিলেন বিজেপির প্রাক্তন প্রদেশ সভাপতি এবং বর্তমান প্রার্থী দিলীপবাবু । এই রাজনৈতিক সৌজন্যবোধ থাকা প্রয়োজন ।"
এ দিকে দিলীপ ঘোষ বলেন, "আমি সাধারণ মানুষের পাশাপাশি রাজনৈতিক নেতাদের পাশেও থাকার চেষ্টা করি ৷ দেবেশ চক্রবর্তী অন্যদলের হলেও তিনি এখানকার একজন বিশিষ্ট ব্যক্তি ৷ যখন শুনলাম তাঁর মাতৃবিয়োগ হয়েছে এলাম দেখা করে গেলাম ওঁনার পরিবারের সঙ্গে ৷ খড়গপুরে তৃণমূলের চেয়ারম্যানের মাতৃবিয়োগেও তাঁর বাড়িতেও আমি গিয়েছিলাম ৷ আর এই সৌজন্যবোধ থাকা দরকার ৷ আমরা সমাজে বাস করি ৷ সুখে দুঃখে একে ওপরের পাশে না থাকলে কীসের সমাজ ৷ আগে সমাজ, দেশ তারপর রাজনীতি ৷"
আরও পড়ুন:
- হামলার জবাব পালটা হামলা, তৃণমূলকে হুঁশিয়ারি দিলীপের
- বিজেপি সাংসদদের ‘ভেড়া’ সম্বোধন করে নয়া বিতর্কে ফিরহাদ
- ভোট প্রচারে ‘শুয়োর’ মন্তব্য বিতর্ক! বেলাগাম দিলীপকে জবাব দিতে গিয়ে বেফাঁস তৃণমূলও