পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

দিনে একশো কাপ চা লাগতো বিরূপাক্ষের, ক্য়ান্টিনে বিল বাকি প্রায় 24 হাজার টাকা ! - Birupaksha Biswas

Birupaksha Biswas: দিনে প্রায় একশো কাপ চা লাগত চিকিৎসক বিরূপাক্ষ বিশ্বাসের ৷ বিল বাবদ তাঁর বাকি 23800 টাকা ৷ এমনকী পুলিশকেও মারতে যেতেন তিনি ৷ এমনটাই দাবি বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের এক ক্যান্টিন মালিকের ৷

Birupaksha Biswas
চিকিৎসক বিরূপাক্ষ বিশ্বাসের বিল বাকি প্রায় 24 হাজার টাকা (নিজস্ব ছবি)

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Sep 5, 2024, 8:52 PM IST

বর্ধমান, 5 সেপ্টেম্বর: দিনে প্রায় গড়ে চা লাগতো একশো কাপ ৷ লাগতো প্যাকেট প্যাকেট দামি সিগারেট । বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের একটি ক্যান্টিনে চা সিগারেট খাবারের বিল বাবদ চিকিৎসক বিরূপাক্ষ বিশ্বাসের বাকি রয়েছে 23 হাজার 800 টাকা । অভিযোগ, ক্যান্টিন মালিক সেই বিল মিটিয়ে দেওয়ার জন্য বারবার ফোন করেছেন ৷ কিন্তু আর ফোন ধরেন না তিনি । অগত্যা আইনের দ্বারস্থ হওয়ার কথা ভাবছেন ক্যান্টিন মালিক । এমনকী অভিযোগ, তাঁর এতটাই দাপট ছিল যে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে পুলিশকে পর্যন্ত মারতে যেতেন তিনি ।

দিনে একশো কাপ চা লাগতো বিরূপাক্ষের, ক্য়ান্টিনে বিল বাকি প্রায় 24 হাজার টাকা ! (ইটিভি ভারত)

ক্যান্টিন মালিক শেখ মাখন বলেন, "আমার ক্যান্টিনে বিরূপাক্ষ বিশ্বাস দিনের পর দিন খাওয়া দাওয়া করে গেলেও বিল মেটায়নি । এখানে পিজি হস্টেলে থাকতেন তিনি । অনেক সময় ব্যস্ত থাকলে আসতেন না, তাঁর খাবার লোক মারফত পাঠিয়ে দিতাম । দামি দামি সিগারেট খেতেন । সারাদিনে প্রায় একশো কাপ চা খেতেন । একাধিক জলের বোতল তাঁকে পাঠাতে হতো । এইভাবে খাওয়াদাওয়া বাবদ বিল হয়েছে 23 হাজার 800 টাকা ।"

ক্যান্টিন মালিকের দেওয়া হোয়াটস অ্যাপ চ্যাট (নিজস্ব ছবি)

তাঁর কথায়, "এখন সব কিছু জানতে পারার পরে আশেপাশের ছেলেদের জানিয়েছি । তারাও বিষয়টি দেখার আশ্বাস দিচ্ছে । এখন বিরূপাক্ষকে দিনের পর দিন ফোন করলেও ফোন রিসিভ করছে না । যেহেতু সে আমার নাম্বার চেনে ফোন ধরছে না । সেইজন্য নতুন করে একটা সিম নিয়েছি । যাতে অচেনা নম্বর থেকে ফোন রিসিভ করলে তাঁকে যাতে ধরতে পারি । কিন্তু আমার নাম শুনলেই ফোন কেটে দিচ্ছে । তাঁকে এটাও বলেছি একবারে সব টাকা দিতে হবে না । কখনও পাঁচ হাজার কিংবা কখনও দশ হাজার টাকা করে দিয়ে ধার শোধ করুক । এর আগে টাকা চাইলেই অজুহাত খাড়া করত । হয় মাইনে হয়নি, কিংবা আজ বা কাল মাইনে হলে টাকা দেবে ইত্যাদি অজুহাতে টাকা দেয়নি ।"

দিনের পর দিন বিল বাকি রাখলেও তাঁকে খাবার পাঠাতেন কেন?

শেখ মাখনের দাবি, "ভয়ে তাঁকে খাবার পাঠাতাম । এইভাবে খাবার দিয়ে দু 'আড়াই বছর কেটে গিয়েছে । কিছুদিন আগে একবার দেখা হয়েছিল তখনও অজুহাত দিয়ে এড়িয়ে যান । তিনি তো ফোনের মাধ্যমেও টাকা দিতে পারেন । কিন্তু দেননি । যাকে তাকে চমকানো পুলিশকে মারতে যাওয়া নিজের চোখে দেখেছি । গাড়ি পার্কিং নিয়ে ঝামেলায় পুলিশকে মারতে যাচ্ছিল । দিনের পর দিন দামি সিগারেট, চা ও খাবার খেলেও টাকা চাইলেই পরে দেব বলে কেটে পড়তেন । আজ ওঁর প্রভাব আর ক্ষমতা আছে বলেই তো টাকা না দিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন । তৃণমূল কংগ্রেসের ঘনিষ্ঠ । আমরা এখানে ছোট ব্যবসা করি । ওদের সঙ্গে কী পেরে উঠব । তাই চুপ করে থাকি ।"

আন্দোলনকারী চিকিৎসক গৌরাঙ্গ প্রামাণিক বলেন, "এমন কোনও অভিযোগ নেই যে বিরূপক্ষ বিশ্বাস ও অভীক দে'র নামে উঠতে পারে না ৷ ক্যান্টিনে এসে জমিদারের মতো মাছ-মাংস থেকে দামি সিগারেট খেকেন বিরূপাক্ষ ৷ কিন্তু কখনই বিল মেটানোর প্রয়োজন মনে করেননি ৷ কয়েক হাজার টাকা বিল বাকি আছে ৷ গোটা কলেজকে নিজেদের সম্পত্তি মনে করেছিলেন ৷ তবে অত্যাচার ও অপশাসনের পতন আছে ৷ বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ তা করে দিখিয়েছে ৷"

জানা গিয়েছে, বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে ও হাসপাতালের সিনিয়র প্যাথলজিস্ট ডাঃ বিরূপাক্ষ বিশ্বাসকে দক্ষিণ 24 পরগনার কাকদ্বীপ এসডিএইচ অ্য়ান্ড এমএসএসএইচ-এ স্থানান্তরিত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে । তাছাড়া আরজি কর-কাণ্ডে ঘটনার দিন লাল জামার পাশাপাশি নীল জামা পরা কারা সেখানে উপস্থিত ছিলেন তা নিয়ে নতুন করে জট পাকিয়েছে ।

আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের সন্দেহ করা ঘটনার দিন নীল জামা পড়ে আরজি কর মেডিক্যালে উপস্থিত ছিলেন বর্ধমান মেডিক্যালের চিকিৎসক বিরূপাক্ষ বিশ্বাস । প্রশ্ন ওঠে বর্ধমান মেডিক্যালের চিকিৎসক হয়ে তিনি আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে কেন গিয়েছিলেন ? এই প্রশ্ন তোলেন আরজি করে আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তাররা ।

ABOUT THE AUTHOR

...view details