কলকাতা, 6 অগস্ট:প্রথম বাংলাদেশ, আমার শেষ বাংলাদেশ, জীবন বাংলাদেশ, আমার মরণ বাংলাদেশ...৷ ওপার বাংলার প্রতিটি মানুষের রন্ধ্রে রন্ধ্রে অনুরণিত হয় মনিরুজ্জামান মনিরের লেখা এই গান ৷ সেই সোনার বাংলাই আজ রক্তাক্ত, অগ্নিগর্ভ ৷ গণ অভ্যুত্থানে ভূপতিত টানা 15 বছরের শেখ হাসিনার সরকার ৷ ছাত্র আন্দোলনে পড়েছে রাজনৈতিক আঁচ ৷ পুরনো রাগ সুদে-আসলে মিটিয়ে নিতে আর আখের গোছাতে সক্রিয় আরও অনেক শক্তি ৷ ক্ষমতায় যারাই আসুক, এই বাংলাদেশের সাক্ষী হতে চাননি অতি বড় বাংলাদেশিও ৷ গত কয়েক ঘণ্টার হিংসা ও লুটতরাজে আতঙ্ক দানা বেঁধেছে স্থানীয়দের মধ্যে ৷
চাকরিতে সংরক্ষণ নিয়ে গত কয়েকদিনের ছাত্র আন্দোলনে আগুন জ্বলছে প্রতিবেশী দেশে ৷ সেই আগুনে ঘি ঢেলেছে পুলিশের বিরুদ্ধে নির্বিচারে গুলিচালনার অভিযোগ ৷ রবিবার পর্যন্ত দফায় দফায় সংঘর্ষে 300 জনের মৃত্যুমিছিলের সাক্ষী হয়েছে বাংলাদেশ ৷ আর কোটা আন্দোলনের সবচেয়ে ভয়াবহ রূপ গোটা বিশ্ব প্রত্যক্ষ করেছে সোমবার ৷ দেশ ছাড়তে বাধ্য হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৷ তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবনের দখল নেন আন্দোলনকারীরা ৷ তবে তারপর থেকেই একের পর এক হিংসার ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়েছে ৷ চলছে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ৷ নিশানা করা হচ্ছে আওয়ামি লিগের নেতাদের ৷ উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ত্রস্ত স্থানীয় বাসিন্দারা ৷ ইটিভি ভারতের কাছে তাঁরা জানালেন নিজেদের উদ্বেগের কথা ৷
ওপার বাংলার গৃহবধূ লিপি দে বললেন, "খুব চিন্তায় দিন কাটাচ্ছি ৷ আমার দেশে এসব কী হচ্ছে ৷ চারিদিকে আতঙ্কের পরিবেশ ৷ বাচ্চারা স্কুলে যেতে ভয় পাচ্ছে ৷ স্কুলগুলি আজ খোলা রাখা হলেও কোনও অভিভাবক তাঁদের সন্তানদের স্কুলে পাঠাননি ৷ কবে আবার নিশ্চিন্তে রাস্তায় বেরোতে পারব ?"
ময়মনসিংহের বাসিন্দা উত্তম দে পেশায় স্বর্ণ ব্যবসায়ী ৷ তিনি জানালেন, "যখন তখন এদিকে সেদিকে হামলা চলছে ৷ নেতাদের বাড়িতে আগুন দিয়ে দেওয়া হচ্ছে ৷ জয়নাল আবেদিন, মুজিবর রহমান-সহ বিভিন্ন বিশিষ্ট মানুষের মূর্তি ভাঙা হচ্ছে ৷ ভেঙে ফেলা হচ্ছে অন্যান্য স্থাপনা ও ভাস্কর্য ৷ তার উপর আমরা এখানে সংখ্যালঘু ৷ বেশ ভয় লাগছে ৷ দোকান বন্ধ রেখেছি ৷ অন্যান্য দোকানপাটও বন্ধ ৷ জানি না সবকিছু কবে স্বাভাবিক হবে ৷"