কলকাতা, 11 নভেম্বর: শিয়ালদা থেকে আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় এবার বাংলাদেশ ও ঝাড়খণ্ডের যোগ পেলেন কলকাতা পুলিশের এসটিএফের গোয়েন্দারা । আরও তথ্যের জন্য মহম্মদ ইজরায়েল খান নামে ধৃত ওই ব্যক্তিকে কলকাতা পুলিশের এসটিএফ জেরা করছে ।
এসটিএফ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত ব্যক্তি কলকাতার রাজাবাজারের পাটোয়ার বাগান লেনে পরিবার নিয়ে থাকতেন ৷ তবে তাঁর আসল বাড়ি হল ঝাড়খণ্ডের চাতরা জেলার ঘাংড়ির হান্টারগঞ্জ এলাকায় । তদন্তে নেমে তাই এবার কলকাতা পুলিশের এসটিএফের গোয়েন্দারা ঝাড়খণ্ড পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে ।
তদন্তকারী আধিকারিকরা জানতে পেরেছেন, মহম্মদ ইজরায়েল খান এর আগে একাধিকবার ঝাড়খণ্ডে যাতায়াত করেছেন । এছাড়াও তিনি একাধিকবার বাংলাদেশেও গিয়েছিলেন । সেখান থেকেই তদন্তকারীদের অনুমান, ওই ব্যক্তি বাংলাদেশে গিয়েও আগ্নেয়াস্ত্র পাচার করেছেন । তবে এই বিষয়ে কলকাতা পুলিশের এসটিএফের তরফে বাংলাদেশ পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে কি না, তা খোলসা করেনি লালবাজার ৷
এই নিয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কলকাতা পুলিশের এসটিএফের এক আধিকারিক বলেন, "আমরা এই ধরনের কোনও ঘটনা ঘটলে সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়ে থাকি । প্রয়োজনে অন্য দেশের পুলিশের সঙ্গেও আমরা কথা বলি ।"
জানা গিয়েছে, আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় ধৃত ব্যক্তিকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে কলকাতা পুলিশের এসটিএফের গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, 2014 সালে উত্তর কলকাতার সিঁথি এলাকার একটি দোকানে ঢুকে হাতে রিভলভার নিয়ে ডাকাতি করেছিলেন তিনি । এরপর শনিবারের ঘটনায় তাঁর কাছ থেকে মোট পাঁচটি দামি আগ্নেয়াস্ত্র এবং 90 রাউন্ড কার্তুজ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে ।
ওই রাতে সাড়ে ন’টা নাগাদ আচমকাই সাদা পোশাকের পুলিশকে দেখে উত্তেজনা ছড়ায় শিয়ালদার বৈঠকখানা বাজারে সুরেন্দ্রনাথ কলেজের আশেপাশের এলাকায় । পরে জানা যায়, একটি ঘরের সামনে একাধিক আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে পাচারের ছক করা হয়েছিল ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস ফোর্সের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক ইটিভি ভারতকে বলেন, "আমরা গোপন সূত্রে খবর পাই যে কলকাতার সুরেন্দ্রনাথ কলেজের সামনে একটি গোডাউনের সামনে একাধিক আগ্নেয়াস্ত্র পাচার করা হবে । সেইমতো আমরা সেখানে সাদা পোশাকে হাজির হয়ে যাই । এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন এই সন্দেহে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে । পাশাপাশি বাকিদের খোঁজ চালানো হচ্ছে ।"
এসটিএফের তরফে মনে করা হচ্ছে, বাইরের রাজ্য থেকে বাংলায় এই আগ্নেয়াস্ত্রগুলি নিয়ে আসা হয়েছে । এর সঙ্গে বিহার মুঙ্গেরের যোগ থাকতে পারে বলে জানা গিয়েছে । লালবাজার সূত্রে খবর, সামনে বেশ কয়েকটি জায়গায় উপনির্বাচন রয়েছে । সেই উপনির্বাচনে গন্ডগোল ছড়ানোর জন্যই এই আগ্নেয়াস্ত্রগুলি মজুদ করে রাখা হয়েছিল । সঠিক সময় এলে এইগুলি অন্যত্র চালান করে দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছিল ।
তবে কলকাতার বুকে আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারের ঘটনা এই প্রথম নয় ৷ এর আগেও বাবুঘাট বাসস্ট্যান্ড রোড, রাজাবাজার, একবালপুর, তিলজলা-সহ একাধিক এলাকায় তল্লাশি চালিয়ে আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করেছিল লালবাজার ।