কলকাতা, 15 সেপ্টেম্বর:উৎপত্তি চিনে । তবে সেদেশের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার পরবর্তী সময় উত্তরবঙ্গের রাজবংশী সম্প্রদায়ের হাত ধরে নতুন রূপে ফিরে এসেছিল চিত্রকলা মাশান । রেশমের থাঙ্কর কাপড়ের বদলে উত্তরবঙ্গের জলাভূমিতে উৎপন্ন সহজলভ্য শোলা হয়ে ওঠে এই শিল্পের মাধ্যম । বর্তমানে উত্তরবঙ্গের রাজবংশী মালাকার জাতি এই চিত্রকলার একমাত্র ধারক বাহক । এবার সেই শিল্প ফুটে উঠবে বাংলার সব থেকে বড় উৎসব দুর্গাপুজোয় ।
উৎসবে ফেরার বার্তা দিয়ে এই শিল্প তুলে ধরার কথা ঘোষণা করেছে দক্ষিণের খ্যাতনামা বকুল বাগান সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটি ৷ তাদের পুজো মণ্ডপে এবার এই শিল্প তুলে ধরবেন শিল্পী অদিতি । সহযোগিতায় সঞ্জীব ঘোষ । শিল্পের সঙ্গে সঙ্গতি রেখেই আবহসঙ্গীত তৈরি করছেন অর্পণ ঠাকুর চক্রবর্তী । প্রতিমার রূপদান করবেন হ্যালি গোস্বামী ।
দক্ষিণ কলকাতার খ্যাতনামা পুজো বকুল বাগান সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটির 2010 সালে শিল্পী ছিলেন বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । এবছর এই মণ্ডপ সৃজনে শিল্পী অদিতি । শনিবার সাংবাদিক সম্মেলনে বকুল বাগান সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটির সভাপতি দেবযানী মুখোপাধ্যায় এক প্রশ্নের উত্তরে জানান, "আমাদের উৎসবে ফিরতে হবে । আমাদের পুজোকে ঘিরে এলাকার বহু প্রান্তিক মানুষের আর্থিক উপার্জন জড়িত । আমরা আরজি কর হাসপাতালের ঘটনাকে কোনও ভাবেই সমর্থন করি না । চাই অভিযুক্তদের শাস্তি । প্রকৃত বিচার আসুক । উৎসব হোক । বিষণ্ণতা কাটুক ।"
এদিন শিল্পী অদিতি বলেন, "মাশান আসলে একজন দেবতা । যার পুজো হত শ্মশানে । বেশিরভাগ লোকশিল্পের আধার সামাজিক মানুষের জীবনচর্চা । এখানেই আসে ভয় ও ভক্তি । শ্মশান মানুষকে চিরকাল ভয়ের আবহ দেয় ৷ সেই ভয় থেকে বাঁচতে তারা শক্তির আরাধনায় ব্রতী হন । অসুররূপী সামাজিক ব্যাধি, মানুষের নৃশংসতা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে মুক্ত হয়ে মানুষ যেন মানুষের পাশে দাঁড়ান । চারদিকে এত অসন্তোষ অপরাধ ঘটে চলেছে, সেই মানসিক অশান্তির হাত থেকে মুক্তি পেতেই মা দুর্গার পুজো ।"