বহরমপুর, 21 মার্চ: রবিনহুড ৷ মুর্শিদাবাদের মাটিতে অধীররঞ্জন চৌধুরীর এটাই পরিচয় ৷ তাঁর বিরুদ্ধে যেমন বিস্তর অভিযোগ রয়েছে, তেমনই জেলার অনেক মানুষই তাঁকে ‘মসীহা’ মনে করেন ৷ আর এই পরিচয়ই হয়তো তাঁকে বারবার ভোটের লড়াইয়ে বিজয়ী করে দেয় ৷ যে আসনে একসময় কাউকে দাঁত ফোটাতে দিত না বামেরা, সেই বহরমপুর লোকসভা আসনে পর পর পাঁচবার জয়ের নজির গড়েছেন অধীর ৷ বাম গিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের রমরমা শুরু হওয়ার পরও তাঁকে হারানো সম্ভব হয়নি ৷
সামনে আরও একটা লোকসভা নির্বাচন ৷ এবার লড়াই অন্যবারের তুলনায় কিছুটা হলেও কঠিন ৷ এবারই প্রথম বহরমপুর লোকসভা আসনের মধ্যে থাকা সাতটি বিধানসভার কোথাও কংগ্রেসের কোনও বিধায়ক নেই ৷ ছ’টিতে তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়করা রয়েছেন ৷ বহরমপুরে জিতেছেন বিজেপির প্রার্থী ৷ তার উপর ভোটের ময়দানে বিজেপির চিকিৎসক প্রার্থী নির্মল সাহা ও তৃণমূল কংগ্রেসের তারকা ক্রিকেটার প্রার্থীর ইউসুফ পাঠানে বিরুদ্ধে লড়তে হবে অধীর চৌধুরীকে ৷
জিততে পারলে বহরমপুর লোকসভা আসনে জয়ের ডাবল হ্যাটট্রিক করবেন এই কংগ্রেস নেতা ৷ আর হারলে মুর্শিদাবাদ তথা বঙ্গে কংগ্রেসের রাজনীতির ‘ডাকাবুকো’ এই নেতার রাজনৈতিক কেরিয়ারে ধাক্কা অবশ্যই লাগবে ৷ ফলে এই ভোটে জিততে উন্নয়নের রিপোর্ট কার্ডই একমাত্র হাতিয়ার হতে পারে অধীররঞ্জন চৌধুরীর ৷
সেটা বিলক্ষণ জানেন অভিজ্ঞ এই রাজনীতিবিদ ৷ সেই কারণেই তিনি শুরুতেই জানিয়ে রেখেছেন, তাঁর সাংসদ তহবিলের টাকা খরচে মুর্শিদাবাদ জেলা প্রশাসন বাধা দিয়েছে ৷ তাঁর অভিযোগ, তৃণমূল নেতাদের কথায় জেলাশাসক উন্নয়নে বাধা সৃষ্টি করেছেন । জেলাশাসক বাধা দেওয়ায় তিনি 12 কোটি টাকা খরচ করতে পারেননি । অধীর চৌধুরী আরও জানিয়েছেন যে নন রিফান্ডেবল ফান্ডের এই টাকা সাংসদ কোটাতেই জমা থাকবে । কোথায় কোথায় খরচ করতে চেয়েছিলেন, নির্বাচনী প্রচারে তার অ্যাপ্রুভাল লেটার পকেটে নিয়েই ঘুরবেন তিনি ৷
এর পরও তাঁর কিছু কিছু কাজের খতিয়ান পাওয়া গিয়েছে ৷ সেগুলি হল- 80টি পানীয় জলের কল বসানো হয়েছে ৷ যদিও সাংসদের লক্ষ্য ছিল 100টি পানীয় জলের কল বসানো ৷ কিন্তু প্রশাসনের বাধায়, তা সম্ভব হয়নি ৷ এছাড়া সাতটি আর্সেনিক মুক্ত পানীয় জল প্রকল্প হয়েছে ৷ বহরমপুর স্টেডিয়াম মাঠে মহিলাদের শৌচাগার তৈরি হয়েছে ও পানীয় জলের ব্যবস্থা হয়েছে ৷ ভরতপুর ও বড়ঞাতে কমিউনিটি হল হয়েছে ৷
শুধু সাংসদ কোটার টাকা খরচই নয়, বহরমপুরের জন্য অধীর চৌধুরী আরও অনেক কিছু করেছেন বলে দাবি এলাকার বাসিন্দাদের ৷ সমিত মণ্ডল, স্থানীয় বাসিন্দা তথা অধ্যাপক, তিনি বলেন, ‘‘মুর্শিদাবাদের উন্নয়নে অধীর চৌধুরী অনেক কিছু করেছেন ৷ নবগ্রামে মিলিটারি ক্যান্টনমেন্ট নিয়ে এসেছে ৷ রেলওয়ের অনেক ফ্লাইওভার তৈরি করেছেন ৷ ইন্দিরা গান্ধি ওপেন ইউনিভার্সিটির রিজিওনাল সেন্টার এখানে এনেছেন ৷ আলিগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টাডি সেন্টার নিয়ে এসেছেন ৷’’