চন্দননগর, 10 নভেম্বর:প্রাচীন বারোয়ারির মধ্যে চন্দননগর বাগবাজার সর্বজনীন অন্যতম। এবার তাদের 190 বছরের পুজো ৷ চন্দননগরবাসী থেকে সাধারণ দর্শনার্থীদের মধ্যে বাগবাজার জগদ্ধাত্রীর প্রতিমা নিয়ে একটা আলাদা উন্মাদনা থাকে। কিন্তু বাগবাজার সর্বজনীনের জগদ্ধাত্রী প্রতিমার মুখ নিয়ে সোশাল মিডিয়ায় মাধ্যমে বিতর্ক। কারণ, এবছর তাদের প্রতিমার দেহের তুলনায় মুখের মাপ বেশ বড় ৷ পুজো উদ্যোক্তাদের দাবি, সাহসিকতার পরিচয় দিয়ে অন্যরকম প্রতিমা গড়েছেন তারা।
পুজো উদ্যোক্তার বক্তব্য:
এই বিতর্ককে গুরুত্ব দিতে নারাজ পুজো উদ্যোক্তারা। চন্দননগর বাগবাজার সর্বজনীনের এক উদ্যোক্তা শম্ভুনাথ ঘটকের সাফাই, "যুগের সঙ্গে শিল্পীর শিল্পেও পরিবর্তন ঘটে। তাই প্রতিমার কিছুটা পরিবর্তন এসেছে। দাদুর পরিবর্তে এ বছর নাতির হাতে তৈরি হয়েছেন মা। 15 বছর বয়সী স্কুলপড়ুয়া এই বিশাল জগদ্ধাত্রী প্রতিমার তৈরির ভার নিয়ে সাহসিকতা দেখিয়েছে। এতে বিতর্ক কীসের ?"
কিশোর শিল্পীর পাশে দাঁড়িয়ে তাঁর সাহসিকতার কথা বললেন পুজো উদ্যোক্তারা (ইটিভি ভারত) তিনি আরও বলেন, "বংশ পরম্পরায় তাঁরা আমাদের প্রতিমা তৈরি করেন। একমাত্র বাগবাজারেরই হিম্মত আছে এই ধরনের সাহসী পদক্ষেপ নেওয়ার। এত ছোট একটা ছেলের কাজের জন্য তাঁর পাশে দাঁড়ানো উচিত। তা না-করে সবাই তুমুল সমালোচনা করছে। খুদে শিল্পীকে উৎসাহ দিলে আগামিদিনে বাগবাজার বারোয়ারি প্রতিমার আলাদা মাত্রা পাবে মনে করি আমি ও আমাদের অন্যান্য সদস্যরা।"
চন্দননগর বাগবাজার সর্বজনীনের অন্যান্যবারের প্রতিমা (বাগবাজার বারোয়ারি ফেসবুক) খুদে শিল্পীর পরিচয়:
মা হৈমন্তিকার বিশাল প্রতিমা তৈরি করেছে চন্দননগর বঙ্গ বিদ্যালয়ের ক্লাস নাইনের ছাত্র অনিকেত পাল। আগে তার দাদু তৈরি করতেন এই প্রতিমা।মাত্র 15 বছর বয়সে বাবার সঙ্গে মিলে তার শিল্পীসত্তা ফুটিয়ে তুলেছে সে। চন্দননগর ডুপ্লেক্স পট্টির কুমোরপাড়ায় বাড়ি তার। বাবার থেকে মাটির মূর্তির কাজ শিখছে অনিকেত। দাদুর মৃত্যুর পরে সেই দায়িত্ব এসে পড়ে নাতির কাঁধে। প্রথম বছর এত বড় ঠাকুর বানানোর দায়ভার এসে পড়েছিল ক্লাস নাইনের এই পড়ুয়ার উপর।
চন্দননগর বাগবাজার সর্বজনীনের অন্যান্যবারের প্রতিমা (বাগবাজার বারোয়ারি ফেসবুক) সোশাল মিডিয়ার বিতর্ক নিয়ে কী বলছে কিশোর শিল্পী ?
মৃৎশিল্পী অনিকেত পাল জানান, এই প্রথম বছর এত বড় ঠাকুর বানিয়েছেন। বাগবাজারের ঠাকুরের মুখ ছাঁচে তৈরি হয় না। পুরো প্রতিমাই তার হাতে বানানো। প্রথম বছর উঁচু বাঁশের উপরে উঠে কাজ করতে গিয়ে ভয় লেগেছে তাঁর। তবে সমস্ত ভয় কাটিয়ে ঠাকুর বানিয়েছেন। সোশাল মিডিয়ায় যে সমালোচনা হচ্ছে সে বিষয়েও অবগত স্কুলপড়ুয়া প্রতিমা-শিল্পী। এ বিষয়ে তাঁর বক্তব্য, "প্রথম বছর যা ভুল ত্রুটি হয়েছে, মানুষ যা বলছে, আমি তার থেকে শিক্ষা নিয়েছি। এর থেকে শিক্ষা নিয়ে আগামিদিনে আমি আমার হাতের কাজ আরও দক্ষ করব।"