কলকাতা, 11 মে: গত বছরের শেষদিকে স্বামী ও বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে রূপান্তরকামী মহিলা এসেছিলেন বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ৷ পরেরদিন সকালে সেই মহিলাকে গুরুতর জখম ও রক্তাক্ত অবস্থায় পাওয়া গেল শহরের এক পাঁচতারা হোটেলের লবি থেকে ৷ থানায় অভিযোগ দায়ের হয় তাঁর স্বামী আদিল শেখ ও তাঁর বন্ধু টাইগারের বিরুদ্ধে ৷ দীর্ঘ খোঁজাখুঁজির পর অবশেষে পুলিশের জালে ধরা পড়ল দুই অভিযুক্ত ৷ শনিবার তাঁদের তোলা হয় আলিপুর আদালতে ৷
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, হোটেলের লবিতে রক্তাক্ত অবস্থায় মহিলাকে পরে থাকতে দেখে সেখানকার কর্মীরা পুলিশে খবর দেন ৷ সেখান থেকে মহিলাকে হাসপাতালে ভরতি করা হয় ৷ আক্রান্ত মহিলার অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তাঁর স্বামী ও বন্ধুর বিরুদ্ধে শুরু মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করে ৷ সামনে আসে নতুন তথ্য ৷ জানা যায়, ওই মহিলা, তাঁর স্বামী আদিল শেখ ও টাইগার অবৈধ কাগজপত্র নিয়ে বাংলাদেশ থেকে ভারতে এসেছেন ৷ শুধু তাই নয়, বিয়েতে যোগ দেওয়ার ঘটনাও সত্য ছিল না ৷
এরপরেই অভিযোগকারিনী মহিলার উপর নজরদারি শুরু করে পুলিশ ৷ জানা যায়, হাসপাতাল থেকে ওই মহিলা ছাড়া পাওয়ার পর আনন্দপুরে ভাড়াবাড়ি নিয়ে থাকতে শুরু করেন ৷ তারপর সেখান থেকেও একদিন হাওয়া হয়ে যায় ৷ এই ঘটনায় মহিলার হদিশ না পেয়ে মাঝে থমকে যায় তদন্ত ৷ বেশ কিছু সময় পর নিউমার্কেট চত্বরে রূপান্তরকামী ওই মহিলার খোঁজ পায় পুলিশ ৷ শুরু হয় ফের নজরদারি ৷ এমনকী, যোগাযোগ করা হয় কলকাতা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ৷
এই বিষয়ে কলকাতা পুলিশের ডিসি ইএসডি অরিস বিলাল ইটিভি ভারতকে বলেন, "প্রথমিক তদন্তে আমরা জানতে পেরেছি, অভিযুক্ত আদিল শেখ বিয়ের আগেই জানত যে, তাঁর স্ত্রী পুরুষ থেকে রূপান্তরিত হয়েছেন ৷ তার পরেও কেন তাঁকে খুনের চেষ্টা করা হল, সেটাই তদন্ত করে দেখা হচ্ছে ৷ এই ঘটনার পর আমরা কলকাতা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করি ৷ তারা বিষয়টি খতিয়ে দেখে আমাদের খবর দেয় ৷ অভিযুক্ত আদিল শেখ ও তাঁর বন্ধু টাইগারকে আমরা কলকাতা বিমানবন্দর থেকে শুক্রবার রাতে গ্রেফতার করেছি। এই ঘটনায় আমরা পৃথক দুটি মামলা রুজু করেছি ৷ প্রথমটি রূপান্তরকামীর গায়ে হাত দেওয়া এবং প্রাণে মেরে ফেলার অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে ৷ পাশাপাশি, নকল কাগজপত্র নিয়ে ভারতে আসার অন্য আরও একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।"