মালদা, 22 জানুয়ারি: রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান জেলা ছাড়তেই ফের খুন মালদায় ৷ মঙ্গলবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে ইংরেজবাজার থানার মহদিপুর সংলগ্ন বেলবাড়ি ঘাট এলাকায় ৷ ঘটনার প্রেক্ষিতে বুধবার সকালে মৃতের পরিবারের তরফে ইংরেজবাজার থানায় কয়েকজনের নামে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে ৷ অভিযোগের ভিত্তিতে শুরু হয়েছে পুলিশি তদন্ত ৷ মূল অভিযুক্তরা পলাতক ৷ তাদের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ ৷
মৃতের নাম কাজল ঘোষ ৷ বয়স 62 বছর ৷ বাড়ি ইংরেজবাজারের রামকেলি সংলগ্ন বারদুয়ারি গ্রামে ৷ তিনি পেশায় ছিলেন টোটোচালক ৷ মঙ্গলবার রাতে যাত্রী নিয়ে তিনি বেলবাড়ি ঘাট শ্মশানে যান ৷ গন্তব্যে পৌঁছে ভাড়া চাইলে ওই যাত্রীদের সঙ্গে তাঁর ঝামেলা শুরু হয় ৷ ওই যাত্রীরা মদ্যপ অবস্থায় ছিল ৷ বচসার মধ্যেই তারা টোটোচালককে হাঁসুয়া দিয়ে কোপাতে শুরু করে ৷ রক্তাক্ত অবস্থায় তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়লে সেখান থেকে হামলাকারীরা চলে যায় ৷ খানিক পর স্থানীয় লোকজন তাঁকে ওই অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে কাজল ঘোষের বাড়িতে খবর দেন ৷ সেই খবর পেয়ে পরিবারের সদস্যরা তড়িঘড়ি তাঁকে মালদা মেডিক্যালে নিয়ে আসছিলেন ৷ কিন্তু মাঝ রাস্তাতেই মৃত্যু হয় তাঁর ৷
ফের মালদায় খুন, পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন (ইটিভি ভারত) গতকাল রাতে মালদা মেডিক্যালে উপস্থিত কাজল ঘোষের ভাই উজ্জ্বল ঘোষ জানান, “দাদা টোটো চালাত ৷ রাতে টোটোতে বেলবাড়ি ঘাট শ্মশানে যাত্রীদের নিয়ে গিয়েছিল ৷ গন্তব্যস্থলে পৌঁছে যাত্রীরা তাকে টোটোর ভাড়া দিতে অস্বীকার করে ৷ এনিয়ে তাদের মধ্যে তর্কাতর্কি হয় ৷ ওদের হাতে ধারালো হাঁসুয়া ছিল ৷ তারা দাদাকে হাঁসুয়া দিয়ে কুপিয়ে দেয় ৷ খবর পেয়ে আমরা ওকে মালদা মেডিক্যালে নিয়ে আসছিলাম ৷ পুলিশের গাড়িতেই ওকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হচ্ছিল ৷ কিন্তু রাস্তাতেই দাদা মারা যায় ৷ হামলাকারীদের দু’জনকে আমরা চিনতে পেরেছি ৷ ওদের নাম শ্যামল মণ্ডল আর বিমল মণ্ডল ৷ শবদাহ করতে ওরা শ্মশানে গিয়েছিল ৷ সবাই মদ্যপ অবস্থায় ছিল ৷”
ইংরেজবাজার থানার এক আধিকারিক জানিয়েছেন, “এই ঘটনায় মৃতের পরিবারের তরফে আজ ভোরে লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে ৷ অভিযুক্তরা কালিয়াচক থানার কদমতলা গ্রামের বাসিন্দা ৷ তারা এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে ৷ তাদের খোঁজে পুলিশি তল্লাশি শুরু হয়েছে ৷ আজ মৃতদেহের ময়নাতদন্ত করা হবে ৷ ঘটনা নিয়ে পুলিশি তদন্ত শুরু হয়েছে ৷”
বছরের শুরুতেই অর্থাৎ 2 জানুয়ারি তৃণমূল নেতা দুলাল সরকার খুন হয়েছিলেন ৷ মাত্র 20 দিনের ব্যবধানে মালদা জেলায় এ নিয়ে মোট পাঁচটি খুনের ঘটনা ঘটল ৷ স্বাভাবিকভাবেই এই পরিস্থিতিতে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে জেলাজুড়ে ৷