কামারহাটি, 5 সেপ্টেম্বর: আরজি কর হাসপাতালের বর্বরোচিত ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় উত্তপ্ত রাজ্য তথা দেশ ৷ এর মধ্যে বৃহস্পতিবার সাগর দত্ত মেডিক্যালে হামলা ঘটনা ঘটল ৷ এদিন কলেজ কাউন্সিলের বৈঠক চলছিল ৷ তার মাঝে জোর করে একদল বহিরাগত হঠাৎই সাগরদত্ত মেডিক্যাল কলেজের কনফারেন্স রুমে ঢুকে হামলা চালায় বলে অভিযোগ ৷
কামারহাটির সাগর দত্ত হাসপাতালে ধুন্ধুমার কাণ্ড (ইটিভি ভারত) দরজার কাচ ভাঙা হয়েছে ৷ রেসিডেন্ট চিকিৎসকের কয়েকজনকে মারধরের অভিযোগ ঘিরে রীতিমতো ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হয় সেখানে ৷ এর পালটা হামলাকারী পড়ুয়াদের একাংশও অবস্থান-বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন হাসপাতালের অধ্যক্ষের রুমের বাইরে ৷ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে হিমশিম খেতে হয় পুলিশকে ৷
পরে,দু'পক্ষের সঙ্গে কথা আলোচনা করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা হয় ৷ যদিও দু'পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ তুলেছে ৷ বিক্ষুব্ধ পড়ুয়া চিকিৎসকদের অভিযোগ, হুমকি দেওয়া, হস্টেল না পাওয়া, হস্টেলে ঘর বণ্টন নিয়ে নানা সমস্যা ৷ এই বিষয়গুলি নিয়েই এদিন কলেজ কাউন্সিলের বৈঠকে আলোচনা চলছিল ৷
আক্রান্ত চিকিৎসক পড়ুয়াদের অভিযোগ, "হুমকি সংস্কৃতির বিরুদ্ধে তাঁরা যে আন্দোলন করছেন, তা দমানোর জন্যই এই হামলা ৷" যাঁরা হামলা চালিয়েছেন তাঁদের দুর্নীতির বিরুদ্ধেই আন্দোলন চলছে ৷ সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ সূত্রের খবর, হামলার ঘটনা পুলিশকে জানানো হয় ৷ পুলিশ আসার পর কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এলেও উত্তেজনা রয়েছে ৷ আক্রান্তদের অভিযোগ, "যাঁরা হামলা চালিয়েছেন, তাঁদের হাত ধরেই এতদিন হুমকির সংস্কৃতি চলেছে ৷ তাঁরা একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর মদতেই এমন অনৈতিক কাজ করছেন ৷" আন্ডার গ্র্যাজুয়েট পড়ুয়াদের একাংশ, ইন্টার্ন ও বহিরাগতদের বিরুদ্ধেই হামলার অভিযোগ এনেছেন রেসিডেন্ট চিকিৎসকরা ৷
এই বিষয়ে পোস্ট গ্রাজুয়েট ট্রেনি চিকিৎসক মনোজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, "আমরা প্রত্যেকেই এখানে রেসিডেন্ট ডাক্তার ৷ কেউ পিজি করছে, কেউ আবার সিনিয়র ডাক্তার অথবা হাউস স্টাফ ৷ আমরা কেউই বহিরাগত নই ৷ আমরা বলেছিলাম চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে এই টালমাটাল পরিস্থিতিতে আমাদের নিজেদের আগে ঘর পরিষ্কার করতে হবে ৷ এই নিয়ে বৈঠক চলছিল ৷ বাইরে যাঁরা বিক্ষোভ করছে তাঁদের বিরুদ্ধেই আমরা দুর্নীতি এবং টাকা তছরূপের অভিযোগ এনেছি ৷ সেই প্রমাণও আছে আমাদের কাছে ৷"
তিনি আরও বলেন, "বাইরে যাঁরা অবস্থান-বিক্ষোভে বসেছে ৷ স্লোগান দিচ্ছে, তাঁরা মূলত তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সঙ্গে যুক্ত ৷ ওদের হামলায় আমার চশমা ভেঙেছে ৷ ওঁরা আন্ডার গ্রাজুয়েট পড়ুয়া হলেও এঁদের পিছনে মাথা বিরুপাক্ষ বিশ্বাস, অভীক দে, সন্দীপ ঘোষের মতো দুর্নীতিগ্রস্তরা ৷"
এদিকে, বিষয়টি নিয়ে কলেজের প্রিন্সিপাল পার্থ প্রতিম প্রধান বলেন, "বাইরে কারা আছে, কতজন আছে জানি না ৷ যাঁরা আন্দোলন করেছে, তাঁরা এদিন আমাদের সঙ্গে বৈঠক করতে চেয়েছিল ৷ সেই হিসাবে জরুরিভিত্তিতে এদিন মিটিং ডাকা হয়েছিল ৷ সেই বৈঠক চলাকালীন হঠাৎ কয়েকজন জোর করে রুমে ঢোকার চেষ্টা করে ৷ তাঁদের উদ্দেশ্য মোটেই ভালো লাগেনি ৷ দরজায় ধাক্কাধাক্কি করা থেকে, কাচ ভেঙে দেওয়া হয়েছে ৷"