চুঁচুড়া, 5 সেপ্টেম্বর: মহিলাকে কু-প্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূল বিধায়কের বিরুদ্ধে । কয়েকদিন আগেই চুঁচুড়া পৌরসভার কর্মী নয়নমণি মল্লিক বিধায়ক অসিত মজুমদারকে সরাসরি আক্রমণ করেন । অভিযোগ তার সঙ্গে খারাপ আচরণ করতেন, জুতো পরিষ্কার করাতেন, খারাপ উদ্দেশ্যে রাতে ভিডিয়ো কল করতেন বিধায়ক । পুরসভার কর্মী হওয়া সত্ত্বেও বিধায়কের বাড়িতে পিএর কাজ করানো হত তাকে । এমনকি পৌরসভার খাতা বিধায়কের বাড়িতে নিয়ে এসে সই করানো হত ।
কু-প্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগে বিধায়কের সহকর্মীদের বক্তব্য (ইটিভি ভারত) শুধু নয়নমণিই নয়, পৌরসভার আরও কর্মী ও অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীও মুখ খোলেন অসিত মজুমদারের বিরুদ্ধে । যদিও চুঁচুড়ার বিধায়ক ও তৃণমূলের পক্ষ থেকে কেউ কিছুই বলতে চাননি । এই বিষয়ে তৃণমূলের উচ্চ নেতৃত্ব ও মুখ্যমন্ত্রীকে লিখিতভাবে জানান মহিলারা । অবশ্য চুঁচুড়া থানায় লিখিতভাবে কু-প্রস্তাবের অভিযোগ জানানো হয়নি । এই নিয়ে পুরসভার চেয়ারম্যান অমিত রায়ের দাবি, বিধায়ক যা করেছেন পুরসভার কর্মী অভিযোগ করেছেন এখানে আমার কিছু করার নেই ।
কয়েকদিন ধরেই চুঁচুড়া পুর এলাকায় বিধায়ককে নিয়ে নানা গুঞ্জন শোনা যাচ্ছিল । বিজেপির পক্ষ থেকে সামাজিক মাধ্যমে বিভিন্ন রকম পোস্ট করা করা হয় । পোস্টার পরে চুঁচুড়াজুড়ে । বৃহস্পতিবার সমস্ত অপপ্রচারের বিরুদ্ধে জবাব দিতে আসরে নামেন বিধায়ক ঘনিষ্ঠ মহিলারা ৷ মহিলা তৃণমূল কর্মী জয়িতা বল চৌধুরী চুঁচুড়া খাদিনা মোড়ে বিধায়কের অফিসে সাংবাদিক বৈঠক করেন । সেখানেই মহিলাদের পক্ষ থেকে জয়িতার দাবি,
বিধায়কের বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করতেন নয়নমণি । তাঁর পুরসভার চাকরিও বিধায়কের দেওয়া । বিধায়কের বাড়িতে নয় বছর কাজ করেছেন ।নিজেকে বিধায়কের পিএ হিসাবে পরিচয় দিয়ে ব্যবসা করেছেন । বিধায়ককে ভাঙিয়ে অনেকরকম সুবিধা নিয়েছেন । এখন স্বার্থসিদ্ধি হয়ে গিয়েছে তাই বদনাম করছেন । ছয় মাস আগে টাকা চুরি করে ধরা পড়ে । বিধায়ক বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেন । এতদিন পরে তিনি কোথায় ছিলেন এখন অভিযোগ করছেন । অসিত মজুমদার কাউকে কোনওরকম বাজে কথা বলেন না । এসব মিথ্যা কথা ৷
এদিকে নয়নমণি মল্লিকের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন হুগলি জেলা মহিলা তৃণমূল কংগ্রেসের সম্পাদক দেবশ্রী বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ অন্যান্যরা ৷ তাঁরা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি লিখে অভিযোগ করেছেন বিধায়কের বিরুদ্ধে । তাঁদেরও দাবি, খারাপ ব্যবহার করা হত । রাতে ভিডিয়ো কল করা হত । পিয়ালী পোদ্দার নামে একজন বলেন, "বিধায়কের কাছে গেলে পুরসভায় একটা চাকরি হবে ভেবেছিলাম । কিন্তু দেখলাম উদ্দেশ্য সৎ না ।"
চুঁচুড়া পুরসভার চেয়ারম্যান অমিত রায় বলেন, "নয়নমণি চুঁচুড়া পৌরসভার কর্মী । একটি স্কুলে কাজ করেন । আগে বিধায়কের বাড়িতে কাজ করত না কি করত নয়নমণি বলবেন । আমার সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই । মহিলাদের সঙ্গে এই আচরণ খুবই লজ্জার । এখন আরজি কর নিয়ে যা চলছে ।এমন সময় এই ঘটনা দলকে বিড়ম্বনায় ফেলেছে নিঃসন্দেহে ।"