কলকাতা, 2 ফেব্রুয়ারি: ক্যাগ রিপোর্ট নিয়ে বাংলার বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করা হচ্ছে। ধর্মতলার ধরনা মঞ্চ থেকে শুক্রবার এই অভিযোগ করলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একই সঙ্গে, এই মিথ্যাচারের প্রতিবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠিও দিলেন তিনি। প্রসঙ্গত, শুক্রবার থেকেই রেড রোডে 48 ঘন্টার ধারণা কর্মসূচি শুরু করেছেন মমতা। সেখানে বক্তব্য পেশ করতে উঠে তিনি বলেন, "জেলা সফর থেকে ফেরার সময় কয়েকজন সাংবাদিক ক্যাগ রিপোর্ট নিয়ে প্রশ্ন করছিলেন। রিপোর্টে নাকি কয়েকটি বেনিয়মের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। টাকা খরচ করা হয়নি, উঠে এসেছ এমন কথাও। আমি এই নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে কড়া চিঠি,কে লিখেছি।"
বুধবার দিল্লিতে দলের সদর কার্যালয়ে সাংবাদিক বৈঠক করেন পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির সভাপতি তথা বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত মজুমদার ও সর্বভারতীয় মুখপাত্র গৌরব ভাটিয়া। তাঁদের দাবি, সিএজি রিপোর্টের ছত্রে ছত্রে বাংলার আর্থিক দুর্নীতির উল্লেখ রয়েছে। সুকান্ত জানান, প্রায় দু’লক্ষ কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে রাজ্যের বিরুদ্ধে। তার আগে লোকসভায় খোদ প্রধানমন্ত্রীকে বাংলার বকেয়া টাকা নিয়ে প্রশ্ন করেছিলেন তৃণমূলের লোকসভার দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রধানমন্ত্রী তাঁকে বলেছিলেন, "সিএজি রিপোর্টটি আমি এখন পড়ছি। আপনারাও দেখে নিন।"
এদিন তার জবাব দিয়েছেন মমতা। তিনি বলেন, "ক্যাগ যে কথা জানে না সেটাই বলেছে। কোনওদিন এমন ঘটনা ঘটেনি। ওরা বলছে 2003 সাল থেকে অনিয়ম হয়েছে। তখন থোরাই আমরা ছিলাম ! 2003 সালে কিছু হলে সেই দায়িত্ব আমরা কেন নেব ! 2011 সালের পরে কিছু হলে সেই দায়িত্ব আমরা নেব।" এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট করে দিয়েছেন, প্রত্যেকটা কাজের পর ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট কেন্দ্রকে পাঠানো হয়েছে। অতএব এক্ষেত্রে যা বলা হচ্ছে তা সত্য নয়। সম্পূর্ণটাই মিথ্যা। মমতা বলেন, "সত্য কখনও চাপা থাকে না ৷ আপনারা চিঠিটা পড়ে নেবেন। যেখানে স্পষ্টভাবে লেখা আছে আমরা প্রত্যেকটা ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট সময় মতই দিয়েছি। দু'লক্ষ কোটি টাকার যে দুর্নীতির কথা ক্যাগ রিপোর্ট বলছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ক্যাগের কী লেখা উচিত, কী নয়, এমন কোনও তথ্য তাদের কাছে ছিলই না। মমতার অভিযোগ সম্পূর্ণটাই বিকৃত তথ্য যা বিজেপির দ্বারা সম্পন্ন হয়েছে।"
এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চিঠির একটা অংশ সভায় পড়েও শোনান। সেখানে তিনি বলেন, "রাজ্যের অডিট রিপোর্ট 2021 অনুসারে বলা হয়েছে 2003 থেকে 2021 সাল পর্যন্ত বিভিন্ন ক্ষেত্রে ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট দাখিল করতে দেরি হয়েছে।" মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "আমরা তদন্ত করে দেখেছি যে নির্দিষ্ট দফতরের ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেটের কথা বলা হচ্ছে তারা নির্দিষ্ট সময়েই তা দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রকে দাখিল করেছে। এক্ষেত্রে পরামর্শ মত তা দাখিল করা হয়েছে। এই ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট-এর ভিত্তিতেই পরবর্তী গ্র্যান্ড ভারত সরকার বিভিন্ন সময় রাজ্যের জন্য বরাদ্দ করেছে। এখানে ওই নির্দিষ্ট সময় কালের কোন ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট পেন্ডিং নেই। একটা দায়িত্বপূর্ণ সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে এ ধরনের অভিযোগ অত্যন্ত অবাক করার মতো। এক্ষেত্রে ক্যাগের মতো একটা সংস্থার বক্তব্য পুরোপুরি অসত্য। শুধু এই ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট সংশ্লিষ্ট মন্ত্রকে জমা করা হয়েছে তাই নয়, এগুলিকে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রক থেকে ভেরিফাইও করা হয়েছে।" মুখ্যমন্ত্রী এদিন এই তথ্য প্রকাশ্যে আনার পর বলেছেন। সমস্ত সরকারি অফিসকে এখন দলীয় পার্টি অফিস বানানোর চেষ্টা করেছে।