কৌশল বদলেও যাওয়া হল না সন্দেশখালি, রাস্তায় অবস্থান-বিক্ষোভ শুভেন্দু-সহ তিন বিজেপি বিধায়কের সন্দেশখালি, 15 ফেব্রুয়ারি: কৌশল বদল করে বৃহস্পতিবারও সন্দেশখালিতে ঢুকতে পারলেন না বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী । তার আগেই বাসন্তী হাইওয়ের রামপুরে আটকে দেওয়া হল শুভেন্দুদের গাড়ি । এই নিয়ে পুলিশের সঙ্গে একপ্রস্থ বচসা ও তর্কাতর্কি চলে বিরোধী দলনেতার । তিনি উত্তর 24 পরগনার মিনাখাঁর এসডিও আমিনুল ইসলামকে বোঝানোর চেষ্টা করেন যে তিনি নিয়ম মেনে তাঁর সঙ্গে থাকা দলের তিন বিধায়ককে নিয়েই গ্রামের ভিতরে যাবেন । কথা বলবেন গ্রামবাসীদের সঙ্গে । সেখানে কোনও গন্ডগোল করতে যাচ্ছেন না তিনি ।
কিন্তু তাতেও বরফ গলেনি । ওই পুলিশ আধিকারিক স্পষ্টত জানিয়ে দেন, 144 ধারা জারির মধ্যে শুভেন্দু-সহ চার বিধায়ককে কোনও মতেই সন্দেশখালির ভিতরে ঢুকতে দেওয়া হবে না । এতেই আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন শুভেন্দু । প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি বাসন্তী হাইওয়ের রাস্তাতেই বসে পড়েন । তাঁর পথেই রাস্তাতে বসে পড়েন শুভেন্দুর সঙ্গে থাকা বিজেপির আরও তিন বিধায়ক ।
উল্লেখ্য, সন্দেশখালির পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে বৃহস্পতিবার যে তিনি পরিষদীয় দলকে নিয়ে সেখানে যাবেন, তা আগেই ঘোষণা করেছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী । তবে, প্রথমে গোটা পরিষদীয় দলকে নিয়ে তাঁর সন্দেশখালি যাওয়ার কথা থাকলেও পরে সেই অবস্থান থেকে সরে এসে কৌশল বদল করেন বিরোধী দলনেতা । বুঝতে পারেন, সব বিধায়ককে সঙ্গে নিয়ে গেলে আগের দিনের মতো মাঝপথেই তাঁকে আটকে দেওয়া হতে পারে ।
সন্দেশখালি যেতে না পেরে রাস্তায় অবস্থান-বিক্ষোভ শুভেন্দু অধিকারীর৷ বৃহস্পতিবার৷ তাই, সব বিধায়ককে সঙ্গে না নিয়ে গিয়ে মাত্র তিনজন বিধায়ককে নিয়ে সন্দেশখালি যাওয়ার মনস্থির করেন শুভেন্দু । সেই মতো বৃহস্পতিবার বিধানসভা থেকে শংকর ঘোষ, চন্দনা বাউড়ি, তাপসী মণ্ডলকে সঙ্গে নিয়ে ছোট একটি বাসে করে সন্দেশখালির উদ্দেশ্যে রওনা দেন শুভেন্দু অধিকারী । কিন্তু, বাসন্তী হাইওয়ে ঢোকার মুখে এ দিন ফের শুভেন্দুদের বাস আটকায় পুলিশ । গাড়িতে উঠে পুলিশের তল্লাশি করে বলেও অভিযোগ । এরপর পুলিশ অনুমতি দিলে শুভেন্দুদের বাস এগোয় সন্দেশখালির দিকে ।
এদিকে, সন্দেশখালি ঢোকার ছ'কিলোমিটার আগেই বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীদের বাসের গতি স্তব্ধ হয়ে যায় । কারণ, এরপরে আর তাঁদের এগোতে দেওয়া হয়নি । রামপুর ও লস্করপাড়া মোড়ের সংযোগস্থলে পুলিশ বাসের গতি স্তব্ধ করে দেওয়ায় এই নিয়ে ক্ষোভ উগরে দেন শুভেন্দু । চলে পুলিশের সঙ্গে তর্কাতর্কি ও বাদানুবাদ । যা ঘিরে সরগরম হয়ে ওঠে ধামাখালি চত্বর । অন্যদিকে, বাধা পাওয়ায় এ দিন পুলিশকে দেখে নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিরোধী দলনেতা । এই নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হওয়ার ইঙ্গিতও দিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী ।
প্রসঙ্গত, রাজ্যের বিরোধী দলনেতার সন্দেশখালি সফর ঘিরে বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই তেতে ছিল রামপুর ও লস্করপাড়া মোড় এলাকা । কারণ, এটিই সন্দেশখালি যাওয়ার প্রবেশদ্বার । সেই কারণে এই দু’টি মোড়ের সংযোগস্থলে পুলিশের তরফে ত্রিস্তরীয় ব্যারিকেডের বন্দোবস্ত করা হয়েছিল । অশান্তি ঠেকাতে গোটা চত্বর মুড়ে ফেলা হয়েছিল নিরাপত্তা চাদরে । ঢাল, লাঠি ও কাঁদানো গ্যাসের শেল নিয়ে প্রস্তুত ছিল পুলিশের বিশেষ বাহিনী । পরিস্থিতির তদারকি করতে হাজির ছিলেন স্বয়ং বারাসত রেঞ্জের ডিআইজি সুমিত কুমার ও রাজ্য পুলিশের পদস্থ কর্তা সিদ্ধিনাথ গুপ্তা ।
আরও পড়ুন:
- সন্দেশখালিতে মহিলাদের উপর নির্যাতন, তদন্তে বিজেপি'র উচ্চস্তরীয় কমিটি
- সন্দেশখালির ঘটনায় এসপি অফিস ঘেরাও বিজেপির, ধুন্ধুমার সুন্দরবনে
- আপাতত স্থিতিশীল, চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে রয়েছেন সুকান্ত মজুমদার