মালদা, 2 ফেব্রুয়ারি: মালদা শহরে 11 বছরের নাবালিকাকে অপহরণ করে গলা কেটে খুনের ঘটনায় তোলপাড় গোটা রাজ্য ৷ অভিযুক্ত জ্যাঠতুতো দাদার ফাঁসির দাবিতে সরব স্থানীয়রা ৷ আর এই ঘটনা ভাবাচ্ছে ঝুমা গোস্বামীকেও ৷ ছোট্ট মেয়ের কথা ভেবে চোখের জল ধরে রাখতে পারছেন না ৷ কারণ বেশ কয়েক দিন ধরে নিখোঁজ তাঁর তিন বছরের মেয়ে অংশিকা গোস্বামী ৷ কোনও খোঁজ নেই স্বামী ইন্দ্রজিৎ গোস্বামীরও ৷ এনিয়ে পুলিশে অভিযোগ জানালেও কোনও লাভ হয়নি ৷ ইংরেজবাজার থানার পুলিশের বিরুদ্ধে অসহযোগিতারও অভিযোগ তুলেছেন তিনি ৷ যদিও বিষয়টি জানার পরই দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন পুলিশ সুপার ৷
ঝুমাদেবী বলেন, "গোটা ঘটনা জানিয়ে 27 জানুয়ারি আমি ইংরেজবাজার থানায় অভিযোগ দায়ের করি ৷ কিন্তু আজ পর্যন্ত পুলিশ আমার স্বামী ইন্দ্রজিৎ আর মেয়ে অংশিকার কোনও খোঁজ দিতে পারেনি ৷ ওদের জন্য আমি একাধিকবার থানায় গিয়েছি ৷ পুলিশকর্মীদের অনুরোধ করেছি ৷ কিন্তু তাঁরা বিরক্ত হচ্ছেন ৷ আমাকে থানা থেকে বেরও করে দেওয়া হয়েছে ৷ আমাকে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, ফোনে তাঁদের বিরক্ত না করি ৷ ওদের খোঁজ পেলে তাঁরাই আমার সঙ্গে যোগাযোগ করবেন ৷ কিন্তু মালদা শহরে 11 বছরের বাচ্চা মেয়ের সঙ্গে যা হয়েছে তাতে ভয়ে আমার বুক কেঁপে উঠছে ৷ পুলিশ আমার স্বামী আর মেয়েকে দ্রুত উদ্ধার করে দিক ৷ এর বেশি আমি কিছু চাই না ৷"
জানা গিয়েছে, ইংরেজবাজার পৌরসভার 28 নম্বর ওয়ার্ডের সানি পার্ক এলাকার বাসিন্দা ঝুমা গোস্বামী ৷ স্বামী ইন্দ্রজিৎ সরকার একটি বেসরকারি সংস্থায় চাকরি করেন ৷ তাঁদের দুই মেয়ে ৷ অদ্রিজা ও অংশিকা ৷ অংশিকার বয়স মাত্র 3 বছর ৷ সানি পার্কের 6 নম্বর লেনের ভাড়াবাড়িতে তাঁরা সদ্য এসেছেন ৷ গত 14 জানুয়ারি থেকে তাঁরা সেখানে থাকছেন ৷ ঝুমাদেবী জানান, 26 জানুয়ারি প্রজাতন্ত্র দিবস উপলক্ষ্যে স্বামীর অফিসের ছুটি ছিল ৷ সকাল 10টা নাগাদ কোম্পানির পিকনিক আছে বলে ছোট মেয়েকে নিয়ে যান ৷ জানিয়েছিলেন, বাড়ির কাছেই একটি বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ সংলগ্ন রিসর্টে পিকনিক হচ্ছে ৷
ঝুমাদেবী আরও জানান, ঘণ্টা দুয়েক বাদে ইন্দ্রজিৎকে ফোন করলে জানা যায় সেটি বন্ধ আছে ৷ বেশ কয়েকবার চেষ্টা করেও স্বামীকে ফোনে না পেয়ে অফিসের ম্যানেজারকে ফোন করেন ৷ তিনি জানান, মেয়েকে নিয়ে ইন্দ্রজিৎ পিকনিকেই রয়েছে ৷ একটু বাদে তিনি কথা বলিয়ে দিচ্ছেন ৷ কিন্তু তিনি আর ফোনে কথা বলাননি ৷ শেষ পর্যন্ত বিকেলে অফিসের সহকর্মীরা জানান, ইন্দ্রজিৎ নাকি পিকনিকেই যাননি ৷ আর সেদিন থেকেই নিখোঁজ স্বামী ইন্দ্রজিৎ ও মেয়ে আংশিকা ৷ কেন অফিসের সহকর্মীরা মিথ্যা কথা বললেন সেই নিয়ে উঠছে প্রশ্ন ৷ এতগুলো দিন পেরিয়ে গেলেও এখনও মেলেনি তাঁদের কোনও খোঁজ, যা ভাবাচ্ছে ঝুমাদেবীকে ৷