রিষড়া, 30 জুলাই: রেলের চরম উদাসীনতার কারণে মৃত্যু হল বহু পাখির । রেলের উন্নয়নের নামে রিষড়া স্টেশনে সোমবার থেকে যথেচ্ছভাবে গাছ কাটা চলছে । সেখানেই খুব পুরনো ছ'টি বট ও অশ্বত্থ গাছ ছিল ৷ সেগুলিকে নির্বিচারে কেটে দেয় রেলের ঠিকাদার । এর ফলে বাসা নষ্ট হয়ে আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছে অসংখ্য পাখি । মৃত্যু হয়েছে 30টি পানকৌড়ি ছানার ৷
যথেচ্ছভাবে গাছ কাটায় বহু পাখির মৃত্যুতে রেলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ পরিবেশ ও পশুপাখিপ্রেমীদের (ইটিভি ভারত) এই ঘটনার জেরে প্রতিবাদে নামে পরিবেশপ্রেমীরা ৷ তাদের অভিযোগ, যেভাবে গাছ কাটা চলছে তা বন্ধ না হলে বৃহত্তর আন্দোলনে যাবেন তাঁরা ৷ যদিও পূর্বরেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র জানিয়েছেন, যে ঠিকাদার কাজ করছে, সে কেন এমনটা করল, তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে ৷
হাওড়া-বর্ধমান লাইনের একাধিক প্ল্যাটফর্মে অসংখ্য গাছ রয়েছে । তেমনই রিষড়া রেলস্টেশনের প্ল্যাটফর্মে প্রাচীন বট-অশ্বত্থ গাছ কাটা শুরু করে রেলের ঠিকাদার । আর তাতেই আশ্রয়হীন হয়ে পড়ে বহু পাখি । মূলত শামুকখোল, পানকৌড়ি, বক ও কাকের দল স্টেশনের এই গাছগুলিতে বাসা বেঁধে থাকত ৷ সেই গাছের ডালে কোপ পড়তেই বাসা ভেঙে নীচে পড়ে যায় অনেক পাখি । সদ্য ডিম ফুটে বেরিয়েছে, চোখ ফোটেনি, এখনও উড়তে শেখেনি এমন অনেক পাখির ছানারা মারা যায় । এতেই স্থানীয় পরিবেশ ও পশুপাখিপ্রেমীরা এসে পাখিদের বাঁচানোর চেষ্টা করেও কিছু লাভ হয়নি ৷ বাধ্য হয়ে খবর দেওয়া হয় বন বিভাগে ৷হুগলির বনবিভাগের দায়িত্বে থাকা আধিকারিক দীপক কুমার মণ্ডল বলেন, "আমি বিষয়টি শুনেছি । কিছু পাখির মৃত্যু হয়েছে । আমি তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছি অফিসারদের ।"
রিষড়ার এক পরিবেশ কর্মী সাবির আলি বলেন, "রেলের এই পদক্ষেপের নিন্দা জানাচ্ছি । গাছের ডাল কেটে ফেলার ফলে প্রচুর পাখি মারা গিয়েছে । এভাবে গাছ কেটে পরিবেশকে ধ্বংস করার প্রতিবাদ জানাচ্ছি । আমরা চাইছি রেল যেমন গাছ কেটেছে, আরও গাছ এখানে লাগাক । রিষড়ায় আরও অনেক সমস্যা আছে ৷ আন্ডারপাস ও লেবেল ক্রসিংয়ের সমস্যা আছে সেগুলো নিয়ে ভাবনা নেই রেলের । এই ঘটনা নিয়ে এলাকার পরিবেশপ্রেমী এবং পশুপ্রেমী সংগঠন সরব হয়েছে ৷ মঙ্গলবার বিকেলে রিষড়া স্টেশন মাস্টারকে তারা স্মারকলিপি জমা দেবে ।"
পশুপক্ষী প্রেমী চন্দন ক্লেমেন্ট সিংয়ের কথায়, "রিষড়া স্টেশনে কতগুলি গাছ কাটা হয়েছে ৷ সেই গাছে যেসব পাখির বাসা ছিল, সেগুলি নষ্ট হয়েছে অনেক পাখির ডিম নষ্ট হয়ে ছানারা মারা গিয়েছে ৷ প্রশাসনের কাছে অনুরোধ করব এটা তদন্ত হওয়া দরকার । কারণ পরিবেশে গাছপালা যেমন থাকবে পশুপাখি থাকবে আবার মানুষও থাকবে ৷ তবেই ভারসাম্য রক্ষা হবে ।"