ছত্রপতি সাম্ভাজিনগর (মহারাষ্ট্র), 6 এপ্রিল: 13 বছরের কিশোর রুদ্র পাণ্ডে ৷ তবে আর দশজন কিশোরের মতো ছুটে খেলে বেড়াতে পারে না সে ৷ কারণ রুদ্র মস্তিষ্কের জটিল সেরিব্রাল পালসি রোগে আক্রান্ত ৷ কিন্তু, মানসিক দিক থেকে সে আর দশটা সুস্থ-স্বাভাবিক বাচ্চার থেকে অনেক বেশি শক্তিশালী ৷ আর সেই শক্তিকে সঞ্চয় করে, সেরিব্রাল পালসি আক্রান্ত বাচ্চাদের নিয়ে আয়োজিত জাতীয় তাইকোন্ডো চ্যাম্পিয়নশিপে সোনা জিতলেন মহারাষ্ট্রের সাম্ভাজিনগরের রুদ্র পাণ্ডে ৷
সেরিব্রাল পালসি ফেডারেশন অব ইন্ডিয়া প্রতিবছর এই টুর্নামেন্টের আয়োজন করে ৷ এবছর এই টুর্নামেন্ট আয়োজিত হয়েছিল চণ্ডিগড়ে ৷ গত সপ্তাহে মার্চ মাসে সেরিব্রাল পালসি আক্রান্তদের নিয়ে হওয়া তেরো রাজ্যের এই টুর্নামেন্টে মহারাষ্ট্রকে নেতৃত্ব দিয়েছিল রুদ্র পান্ডে ৷ যেখানে ব্যক্তিগত ইভেন্টে সোনা জিতেছে সে ৷ ক্যারাটের একটি প্রকার এই তাইকোন্ডো গত কয়েকবছর ধরে শিখছে রুদ্র ৷ এমনকি আর দশজনের মতো রোজ স্কুলে যায় সে ৷ সেখানে দু’ঘণ্টা তাইকোন্ডোর অনুশীলন চলে তার ৷
সেরিব্রাল পালসি আক্রান্ত হওয়া সত্ত্বেও, বাকি বাচ্চাদের মতো স্কুলে যাওয়া এবং তাইকোন্ডো শেখার এই জোর রুদ্র পায় তার বাবা-মায়ের থেকে ৷ সঙ্গে রয়েছে অ্যামেচার তাইকোন্ডো অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট কেডি শার্দূল, সচিব নীরজ বোরসে, লতা কালওয়াররা ৷ যাঁরা প্রতিনিয়ত রুদ্রর মতো বাচ্চাদের উৎসাহ প্রদান করে চলেছেন ৷ আর ছেলের এই সাফল্যের পর তার বাবা সুশান্ত পাণ্ডে বলেন, "রুদ্রকে সুযোগ দিলে, ও জাতীয় দলের হয়েও খেলতে পারবে ৷"
রুদ্র অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়া ৷ জন্ম থেকেই সে সেরিব্রাল পালসিতে আক্রান্ত ৷ জন্মের সময় থেকেই তাঁর মস্তিষ্কের বিকাশ পূর্ণরূপে হয়নি ৷ ফলে শারীরিক দুর্বলতা এবং নানান রোগ লেগেই থাকত ৷ রুদ্র 70 শতাংশ সেরিব্রাল পালসিতে আক্রান্ত ৷ মাঝে মধ্যেই মাথা ঘোরা ও খিঁচুনি ওঠার সমস্যা দেখা দেয় ৷ এমনকি শরীরের বাঁ-দিকে পক্ষাঘাতেও আক্রান্ত হয়েছিল রুদ্র ৷ ফলে একচোখের দৃষ্টি শক্তি খুবই ক্ষীণ ৷ এত প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও রুদ্রর এই সাফল্য সত্যিই অনুপ্রেরণা সকলের জন্য ৷
আরও পড়ুন:
- জন্ম একসঙ্গে, জাতীয় তাইকোন্ডো প্রতিযোগিতায় একসঙ্গেই রুপো জিতল আসানসোলের তিন বোন
- জন্ম একইদিনে, তাইকোন্ডোর জাতীয় সাব-জুনিয়রেও একসঙ্গে ব্রোঞ্জ জয় 3 বোনের
- তাইকোন্ডো চ্যাম্পিয়ানশিপে ব্রোঞ্জ জয় মুর্শিদাবাদের মেয়ের