কলকাতা, 21 জানুয়ারি: আর্দেন গ্যালারি। অর্থাৎ কংক্রিটের পরিবর্তে মাটির ঢালে গা এলিয়ে খেলার দেখার মজা। নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেট স্টেডিয়ামগুলোতে আর্দেন গ্যালারি বহুল পরিচিত। কাট টু কলকাতা।
এবার কলকাতাতেও তৈরি হচ্ছে বিদেশের ধাঁচে আর্দেন গ্যালারি। তবে ক্রিকেটে নয়, হকি স্টেডিয়ামে। যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন স্টেডিয়াম চত্বরে রয়েছে জোড়া ফুটবল প্র্যাকটিস গ্রাউন্ড। তারই উল্টোদিকে গড়ে তোলা হচ্ছে হকি বেঙ্গলের নিজস্ব অ্যাস্ট্র্যোটার্ফ স্টেডিয়াম। যা বাংলার হকির দীর্ঘদিনের চাহিদা পূরণ করবে। কেবল যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনেই নয়, আরও একটি হকি স্টেডিয়াম তৈরি হচ্ছে হাওড়ার ডুমুরজোলায়। নতুন বছরে বাংলার হকির জন্য রাজ্য সরকারের উদ্যোগে যা সবচেয়ে বড় উপহার।
উদ্যোগটা শুরু হয়েছিল বহুবছর আগে। বলা ভালো গুরুবক্স সিংবেঙ্গল হকি অ্যাসোসিয়েশনের শীর্ষপদে থাকার সময়। তারপর স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমলে পরিকল্পনা রূপায়ণ গতি পেয়েছিল। ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন, স্টেডিয়ামের জন্য স্থান নির্বাচন এবং কাজ শুরু হওয়া সবই হয়েছিল স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমলে। এরপর গতবছর দুর্গাপুজোর সময় বেঙ্গল হকির মসনদে পালাবদল ঘটে। স্বপন জমানায় ইতি টেনে সুজিত বসুর জমানা শুরু হয়। রাজ্য সরকারের মন্ত্রিসভায় দমকল বিভাগের মন্ত্রীর ক্রীড়াপ্রেমী হিসেবে নাম রয়েছে। ফুটবল দল চালান, ম্যারাথনের আয়োজন-সহ অন্যান্য খেলাতেও জড়িত তিনি। ফলে বাংলার হকিকে নতুন মাত্রা দেওয়ার কাজে উদ্যোগী হন সুজিত বসু।
অ্যাস্ট্রোটার্ফ নেই বলে বাংলার হকি শীতকালে কলকাতার ঘেরা মাঠে খেলা হয়। তিন প্রধান ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান, মহামেডান মাঠেই মূলত হয় খেলা ৷ ঘাসের মাঠে হকি খেলা মানে প্রাগৈতিহাসিক আমলে পড়ে থাকা। ফলে বাংলার হকি কার্যত ছিল আঁধারে। ঐতিহ্যবাহী বেটন কাপেও দেশের প্রথমসারির দলগুলো অংশ নিতে অনীহা প্রকাশ করত। সাম্প্রতিক অতীতে ছবিটা বদলেছে। কারণ সাইয়ের অ্যাস্ট্রোটার্ফের মাঠে বেটন কাপের আয়োজন হচ্ছে। কিন্তু বাংলার হকির নিজস্ব একটা অ্যাস্ট্রোটার্ফ সম্বলিত স্টেডিয়াম না-থাকার খামতি রয়েই গিয়েছিল। উদ্যোগ নিলেও তাঁর বাস্তবায়ন কোনওভাবেই হচ্ছিল না। বছরদু'য়েক আগে আটকে থাকা গাঁট আলগা হয়। অ্যাস্ট্রোটার্ফ সম্বলিত হকি স্টেডিয়ামের কাজ শুরু হয়। তবে একটি নয়, দু'টি স্টেডিয়াম তৈরির উদ্যোগ শুরু হয়। জায়গা হিসেবে বাছা হয় যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন চত্বর এবং ডুমুরজোলা স্টেডিয়াম।