লখনউ, 28মার্চ: পিলিভিট লোকসভা আসন থেকে টিকিট না পেয়ে, জনগণের উদ্দেশে আবেগে ভরা খোলা চিঠি লিখলেন বিজেপি সাংসদ বরুণ গান্ধি ৷ বৃহস্পতিবার সেই চিঠিতে বরুণ তাঁর নির্বাচনী এলাকার মানুষকে বলেছেন, তাঁদের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক তাঁর শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত অটুট থাকবে ।
নিজের এক্স হ্যান্ডেলে চিঠিটি শেয়ার করেছেন বৃহস্পতিবার বরুণ লিখেছেন, পিলিভিটের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক প্রেম এবং বিশ্বাসের, যা কোনও রাজনৈতিক হিসাবের অনেক উপরে । বিজেপি এ বার পিলিভিটে বরুণের বদলে টিকিট দিয়েছে উত্তরপ্রদেশের গণপূর্তমন্ত্রী জিতিন প্রসাদকে ৷ মুদ্রাস্ফীতি এবং বেকারত্বের ইস্যুতে একাধিকবার নিজের সরকারের বিরুদ্ধে সরব হওয়ায় বরুণের প্রতি দলের এমন কড়া মনোভাব বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল ৷ বুধবার এই আসনে মনোনয়নপত্র জমা দেন জিতিন প্রসাদ ৷
নির্বাচনী এলাকার সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে বরুণ তাঁর চিঠিতে লিখেছেন, "আজ যখন আমি এই চিঠিটি লিখছি, তখন অসংখ্য স্মৃতি আমাকে আবেগপ্রবণ করে তুলেছে । আমার মনে আছে সেই ছোট্ট তিন বছরের শিশুটির কথা, যে 1983 সালে প্রথমবার তাঁর মায়ের আঙুল ধরে পিলিভিটে এসেছিল । সে জানত যে এই জমি একদিন তার কর্মক্ষেত্রে পরিণত হবে এবং এখানকার মানুষ তার পরিবারে পরিণত হবে । পিলিভিটের থেকে যে আদর্শ পেয়েছি, তা শুধুমাত্র একজন সাংসদ হিসেবে নয়, একজন ব্যক্তি হিসেবেও আমার লালন-পালন এবং উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে । আপনাদের প্রতিনিধি হওয়া আমার জীবনের সবচেয়ে বড় সম্মান এবং আমি সবসময় আমার ক্ষমতা অনুযায়ী আপনাদের স্বার্থের জন্য আওয়াজ তুলেছি ।"
বরুণ গান্ধি লিখেছেন যে, একজন সাংসদ হিসাবে তাঁর মেয়াদ শেষ হতে পারে, কিন্তু পিলিভিটের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত শেষ হতে পারে না । তাঁর কথায়, "সাংসদ হিসেবে না হলেও, অন্তত একজন ছেলে হিসেবে আমি সারাজীবন আপনাদের সেবা করতে অঙ্গীকারবদ্ধ এবং আপনাদের জন্য আমার দরজা আগের মতোই খোলা থাকবে । আমি সাধারণ মানুষের আওয়াজ তুলতে রাজনীতিতে এসেছি এবং আজ আমি এই কাজটি সর্বদা চালিয়ে যেতে আপনাদের আশীর্বাদ চাই । এর জন্য আমাকে যে কোনও মূল্য দিতে হলেও আমি তা করব ৷"
তিন দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে এই প্রথমবার মানেকা এবং বরুণ গান্ধি - মা ও ছেলের জুটি নেপালের সীমান্তবর্তী তরাই বেল্টে অবস্থিত পিলিভিত কেন্দ্র থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন না । এ বার বরুণ গান্ধিকে টিকিট টিকিট দেয়নি বিজেপি ৷ তিনি কৃষক, স্বাস্থ্য এবং চাকরির ইস্যুতে বিজেপির সমালোচনা করেছেন । জিতিন প্রসাদ তাঁর স্থলাভিষিক্ত করায়, বরুণ গান্ধি এই আসন থেকে নির্দল প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন বলে খবর ছড়িয়ে পড়ে । বুধবার মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিনেও তিনি মনোনয়ন পেশ না করায় সাসপেন্সের অবসান ঘটে । তাঁর মা মানেকা গান্ধি সুলতানপুরের বর্তমান সাংসদ ৷ বিজেপি তাঁকে ওই আসন থেকেই আরও একবার টিকিট দিয়েছে ৷
পিলিভিট আসনটি 1996 সাল থেকে মানেকা গান্ধি বা তাঁর ছেলে বরুণ গান্ধির কাছে রয়েছে । মানেকা গান্ধি 1989 সালে জনতা দলের টিকিটে আসনটি জিতেছিলেন, 1991 সালে হেরেছিলেন এবং 1996 সালে আবার জিতেছিলেন । তিনি 1998 এবং 1999 সালে নির্দল প্রার্থী হিসাবে নির্বাচনী এলাকা থেকে জয়লাভ করেন। আর তিনি 2004 এবং 2014 সালে বিজেপি প্রার্থী হিসাবে আসনটি জিতেছিলেন । বরুণ গান্ধি 2009 এবং 2019 সালে বিজেপি প্রার্থী হিসাবে ওই আসনে জয়লাভ করেন । (পিটিআই)
আরও পড়ুন:
- বিজেপিতে যোগ দিয়েই কুরুক্ষেত্রে প্রার্থী নবীন জিন্দাল, পঞ্চম তালিকায় ঠাঁই হল না বরুণ গান্ধীর
- 14 আসনের প্রার্থী ঘোষণা কংগ্রেসের, আমেঠি-রায়বরেলি আসন নিয়ে সাসপেন্স অব্যাহত
- নেই অর্থ, ভোটে লড়ছেন না নির্মলা; ইলেক্টোরাল বন্ড নিয়ে তোপ বিরোধীদের