নয়াদিল্লি, 13 মে: সাম্প্রতিক সময়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের পাকিস্তানের প্রতি আচরণে বিস্তার পরিবর্তন লক্ষ্য করা গিয়েছে ৷ যা নিয়ে ভারতীয় কূটনৈতিকমহলে একটা চিন্তাভাবনা শুরু হয়েছে ৷ যেখানে মনে করা হচ্ছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দুই দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও তারও বেশি কোনও পদক্ষেপের মাধ্যমে সম্পর্ককে পুনরায় গোছাতে চাইছে ৷ পাকিস্তানের সংসদীয় নির্বাচন শেষ হওয়ার পরেই এই ইঙ্গিত মিলতে শুরু করেছে ৷ বিশেষত, 2024 সালের মার্চ মাসে জোট সরকার গঠন করে পাকিস্তান মুসলিম লিগ (এনএস)-এর নেতা শাহবাজ শারিফ প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর ৷
এই বদলের ক্ষেত্রে একটা কূটনৈতিক গুরুত্ব রয়েছে ৷ মনে রাখতে হবে যে, কয়েক দশক ধরে মার্কিন নিরাপত্তা মেট্রিক্সে, বিশেষ করে আফগানিস্তানে মার্কিন/ন্যাটোর স্বার্থের প্রেক্ষাপটে একটি গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে ছিল পাকিস্তান । আর সেই পরিস্থিতি খুব বাজেভাবে বদলে গিয়েছে 2021 সালের 15 অগস্ট ৷ যেদিন ওয়াশিংটন আফগানিস্তান থেকে তাদের সেনা প্রত্যাহার করে নেয় এবং মুহূর্তের মধ্যে সমগ্র আফগানিস্তানের দখল চলে যায় তালিবান জঙ্গিদের দখলে ৷ যা এশিয়ার কূটনীতিতে বড়সড় রদবদল নিয়ে আসে ৷
আর 2015 সালের জানুয়ারি মাসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর, আফগানিস্তান থেকে অপমানজনক সেনা প্রত্যাহারে জো বাইডেনের জনপ্রিয়তায় ধাক্কা খায় ৷ যদিওস ন্যাটোর প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত বাইডেনের পূর্বসূরি ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলে নেওয়া হয়েছিল ৷ যা পূর্ব প্রতিশ্রুতি হিসেবে বাইডেন প্রশাসন পালন করেছিল ৷ এখান থেকে প্রেসিডেন্ট বাইডেন পাকিস্তানি নেতৃত্বের সঙ্গে সম্পর্কের ইস্যুতে কিছুটা সমঝে পা-ফেলতে শুরু করেন ৷ তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বা শাহবাজ শরিফের সঙ্গে বাইডেনের যোগাযোগ প্রায় বন্ধ হয়ে যায় ৷ যা সবচেয়ে উল্লেখযোগ্যভাবে প্রতিফলিত হয়েছিল কূটনৈতিকমহলে ৷
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভূ-অর্থনীতি পুনঃস্থাপনের জন্য ইমরান খানের আবেদনে জো বাইডেন সাড়া দেননি ৷ 2022 সালের অক্টোবরে, বাইডেন, একটি 'অফ দ্য কাফ' মন্তব্যে, পাকিস্তানকে "সবচেয়ে বিপজ্জনক দেশগুলির মধ্যে একটি" হিসাবে বর্ণনা করেছিলেন ৷ সেই সঙ্গে পাকিস্তানের পারমাণবিক সুরক্ষা সংক্রান্ত প্রোটোকল নীতি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন ৷
এদিকে সীমান্ত/ডুরান্ড লাইন নিয়ে পাকিস্তান ও তালিবানের মধ্যে দ্বন্দ্ব বাড়তে শুরু করে ৷ আফগানিস্তানে তালিবান পাকিস্তান-বিরোধী সন্ত্রাসবাদী সংগঠন টিটিপি-র পৃষ্ঠপোষকতা এবং আফগান উদ্বাস্তুদের ফেরানোর দাবি জানাতে থাকে ৷ এর অর্থ হল, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নির্দেশে তালিবানদের উপর প্রভাব খাটাতে হবে, অন্যথায় পাকিস্তানের ক্ষমতা কেড়ে নেওয়া হবে ৷