পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / opinion

ইঞ্জিনিয়ারিং বিস্ময় ইয়ারলুং সাংপো বাঁধ পরিবেশগত ও কৌশলগত উদ্বেগ তৈরি করতে চলেছে - YARLUNG TSANGPO DAM

ইয়ারলুং সাংপো, ভারতে যা ব্রহ্মপুত্র নামে পরিচিত, সেই নদীর উপর চিন বাঁধ নির্মাণ করতে চলেছে ৷ যার প্রভাব পড়তে পারে ভারত ও বাংলাদেশের উপর ৷

Yarlung Tsangpo Dam
চিনের তিব্বতে স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের নিংচির মেদোগ কাউন্টিতে 2023 সালের 13 মে ইয়ারলুং সাংপো নদীর একটি অংশের আকাশ থেকে তোলা দৃশ্য। (চায়না নিউজ সার্ভিস/ভিসিজি ভায়া গেটি ইমেজেস)

By Brig Rakesh Bhatia

Published : Jan 23, 2025, 7:50 PM IST

চিনের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সিনহুয়া গত 25 ডিসেম্বর একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত করেছে ৷ সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, চিন ইয়ারলুং সাংপো (ব্রহ্মপুত্র) নদীর নিম্ন প্রান্তে বিশ্বের বৃহত্তম জলবিদ্যুৎ বাঁধ নির্মাণের পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে । নদীটি তিব্বতে উৎপন্ন হয়ে ভারত ও বাংলাদেশে প্রবাহিত হয়েছে ।

এই প্রকল্পের জন্য 137 বিলিয়ন মার্কিন ডলার খরচ হবে বলে অনুমান করা হয়েছে ৷ প্রস্তাবিত ইয়ারলুং সাংপো বাঁধটি হবে বিশ্ব ইতিহাসের সবচেয়ে ব্যয়বহুল পরিকাঠামো নির্মাণের প্রকল্প । অস্বীকার করার উপায় নেই যে এই বাঁধটি চিনের স্থায়ী শক্তির সন্ধানে সবচেয়ে উচ্চাভিলাষী পদক্ষেপ ৷ তাছাড়া এটা ইঞ্জিনিয়রিং ক্ষেত্রে একটি বিশাল কীর্তি হবে ।

চিনের তিব্বতের শান্নান (লোকা) প্রিফেকচারে গভীর গিরিখাতের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত বিশ্বের সর্বোচ্চ প্রধান নদী ইয়ারলুং সাংপোর ধারে একটি কাঁচা রাস্তা দিয়ে যাচ্ছে একটি গাড়ি। (গেটি ইমেজেস)

দুর্ভাগ্যবশত, এই বিস্ময়কর ইঞ্জিনিয়ারিং প্রকল্পের পরিবেশগত উদ্বেগ, সামাজিক প্রভাব ও কৌশলগত প্রভাব অত্যন্ত গুরুতর ৷ বিশেষ করে ভারত ও বাংলাদেশের জন্য । ভারতে এই নদী ব্রহ্মপুত্র এবং বাংলাদেশে যমুনা নামে পরিচিত ।

ইঞ্জিনিয়ারিং বিস্ময়

চিনের প্রস্তাবিত বাঁধটি থেকে বার্ষিক প্রায় 300 বিলিয়ন কিলোওয়াট প্রতি ঘণ্টা বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে ৷ এই উৎপাদন চিনের 'থ্রি জর্জেস ড্যাম'-এর তিনগুণেরও বেশি, যা বর্তমানে বিশ্বের বৃহত্তম বাঁধ । এই প্রকল্পটি পুনর্নবীকরণ শক্তির মাধ্যমে 2060 সালের মধ্যে চিনের পরিকল্পিত কার্বন নিরপেক্ষতা অর্জনে অনেকটা সাহায্য করবে ৷ ourworldindata.org এর মতে, চিন এখন বিশ্বের বৃহত্তম কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গমনকারী ৷ বিশ্বব্যাপী নির্গমনের এক-চতুর্থাংশেরও বেশি নির্গমন করে চিন ।

ভূ-প্রকৃতিগত চ্যালেঞ্জ

নামচা বড়ুয়া এলাকার গ্রেট বেন্ড নামে পরিচিত এলাকায় ইয়ারলুং সাংপো নদী প্রায় 2000 মিটার গভীরে নেমে এসেছে, যার দৈর্ঘ্য 50 কিলোমিটার । অল্প দূরত্বে খাড়া পতনের কারণে বিপুল জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে ৷ সেটাকে কাজে লাগানোর জন্য ইঞ্জিনিয়রদের নামচা বারওয়া পর্বতের মধ্য দিয়ে 20 কিলোমিটার পর্যন্ত দীর্ঘ চার থেকে ছয়টি সুড়ঙ্গ খনন করতে হবে । নামচা বারওয়া-গ্যালা পেরি পর্বতমালা পৃথিবীর সবচেয়ে সক্রিয় চলমান ভূতাত্ত্বিক প্রক্রিয়াগুলির একটা অংশ ৷

ইয়ারলুং সাঁপোর গ্রেট বেন্ডের আকাশ থেকে দেখা দৃশ্য, যেখানে চিন বিশ্বের বৃহত্তম বাঁধ নির্মাণের প্রস্তাব করছে। (চায়না নিউজ সার্ভিস/ভিসিজি ভায়া গেটি ইমেজেস)

খরচ ও ঝুঁকির কারণ

নির্মাণ স্থলটি ভারতীয় ও ইউরোপীয় টেকটোনিক প্লেটের সীমানার উপরে অবস্থিত । এই অঞ্চলে পরীক্ষা না করে ইঞ্জিনিয়ারিং কৌশল ব্যবহার করে বিশাল বাঁধ নির্মাণ ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে ৷ এতে পুরো অঞ্চলের ভূ-প্রাকৃতিক এবং বাস্তুতন্ত্রের অপরিবর্তনীয় ক্ষতি হতে পারে ।

পরিবেশগত উদ্বেগ

এই বাঁধ নির্মাণের ফলে তুলনীয় জীববৈচিত্র্যের একটি অঞ্চল তিব্বত মালভূমির ইতিমধ্যেই ভঙ্গুর বাস্তুতন্ত্র আরও ব্যাহত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে ৷ নদীর প্রবাহ ও পরিসরের ব্যাপক পরিবর্তনের ফলে স্থানীয় প্রজাতির আবাসস্থল ধ্বংস হতে পারে ৷ এই প্রজাতিগুলির মধ্যে অনেকগুলি ইতিমধ্যেই জলবায়ু পরিবর্তন ও মানুষের কার্যকলাপের কারণে অবলুপ্তির পথে ৷

ভারত ও বাংলাদেশের উপর প্রভাব

চিন ভারত ও বাংলাদেশকে আশ্বস্ত করার চেষ্টা করেছে যে ইয়ারলুং সাংপোতে প্রস্তাবিত বাঁধটি নিচের দিকের জলপ্রবাহকে প্রভাবিত করবে না । তারা জোর দিয়ে বলেছে যে প্রকল্পটি একটি ‘নদীর প্রবাহ’ উদ্যোগ । এটা নদীর জলের সম্ভাব্য শক্তি ব্যবহার করে টারবাইনগুলিকে চালিত করার জন্য এবং ব্রহ্মপুত্র নদীতে তার প্রাকৃতিক প্রবাহকে ব্যাহত না করে ফিরিয়ে আনার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে । চিনের মতে, এই পদ্ধতিতে পরিবেশগত বা জলবিদ্যুৎগত বিপর্যয় ন্যূনতম পরিমাণের বেশি হবে না ৷ এই যুক্তি অবশ্য ভারত ও বাংলাদেশের ভয় কাটাতে পারেনি ।

মেকং নদী থেকে শিক্ষা

মেকং নদীর উপর চিনের বাঁধ পরিচালনা একটি সতর্কতামূলক ঘটনা । পরিবেশগত ক্ষতি ও জলপ্রবাহ হ্রাস বাস্তুতন্ত্রের ক্ষতি করেছে ৷ নিচের দিকে লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবিকা কেড়ে নিয়েছে । অতীতের এই ঘটনা ইয়ারলুং সাংপো বাঁধের সম্ভাব্য সুবিধা সম্পর্কে সন্দেহ তৈরি করেছে ৷ নদীর নিচের অংশে যে দেশগুলি রয়েছে, সেখানে বিরূপ প্রভাব পড়বে না তো ! এই প্রশ্নই উঠছে ৷

চিনের তিব্বতে স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের নিংচির মেদোগ কাউন্টিতে 2023 সালের 13 মে ইয়ারলুং সাংপো নদীর একটি অংশ৷ (চায়না নিউজ সার্ভিস/ভিসিজি ভায়া গেটি ইমেজেস)

ভারত ও বাংলাদেশের লক্ষ লক্ষ মানুষ কৃষি, পানীয় জল এবং মৎস্য চাষের জন্য নদীর উপর নির্ভর করে । নদীর প্রাকৃতিক প্রবাহ পরিবর্তনের ফলে খরা ও বন্যা আরও বাড়তে পারে, যা জীবিকা ও খাদ্য নিরাপত্তাকে প্রভাবিত করতে পারে ।

স্থানচ্যুতি ও পুনর্বাসন

তিব্বতের মেদোগ কাউন্টিতে ইয়ারলুং সাংপো বাঁধ নির্মাণের ফলে স্থানীয় সম্প্রদায়ের মানুষকে সরে যেতে হতে পারে । থ্রি জর্জেস বাঁধ নির্মাণের ফলে 13 লক্ষেরও বেশি লোককে বাস্তুচ্যুত হতে হয় ৷ তিব্বতেও একই রকম বা তার বেশি সংখ্যক মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে । তিব্বতি বাসিন্দারা দীর্ঘদিন ধরে বাঁধ প্রকল্পের বিরোধিতা করে আসছেন ৷ তাঁরা এটাকে শোষণমূলক উদ্যোগ হিসেবে দেখেছেন, যা তাঁদের মাতৃভূমির বিনিময়ে চিনকে লাভবান করতে চলেছে । বাঁধ নির্মাণের ফলে মঠ, প্রাচীন গ্রাম এবং পবিত্র এলাকা ডুবে যাওয়ার বা প্রভাবিত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে । এই সাংস্কৃতিক ক্ষতি তিব্বতিদের মধ্যে বিচ্ছিন্নতার অনুভূতিকে আরও গভীর করতে পারে ৷ কারণ, তাঁরা ইতিমধ্যেই চিনের মধ্যে নিজেদের কোণঠাসা বলে মনে করছেন ৷

ভূ-রাজনৈতিক ও কৌশলগত প্রভাব

চিনের সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে জলবণ্টন চুক্তি না থাকায় ভারত ও বাংলাদেশ এই বাঁধটিকে তাদের জল নিরাপত্তার জন্য সম্ভাব্য হুমকি হিসেবে দেখছে । ব্রহ্মপুত্র নদের প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করে এই নদের নিচের অংশে থাকা দেশগুলিতে কৃষি, পানীয় জল ও জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের উপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে চিন ।

কৌশলগত ঝুঁকি

ভারতের সঙ্গে বিতর্কিত সীমান্তের কাছে তিব্বতে বাঁধটির অবস্থান প্রকল্পটিকে একটি কৌশলগত মাত্রা যোগ করেছে । ইতিমধ্যেই বিশ্বের সবচেয়ে জল-সঙ্কটে থাকা দেশগুলির মধ্যে একটি ভারত৷ ব্রহ্মপুত্রের প্রবাহকে নিয়ন্ত্রণ করার চিনের ক্ষমতাকে ভারত একটি সম্ভাব্য ভূ-রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে দেখে । এই বাঁধের পরিকল্পনা এই অঞ্চলে উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে ৷ বিশেষ করে ভারত ও চিনের মধ্যে চলতে থাকা সীমান্ত বিরোধের প্রেক্ষিতে তা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ।

ইয়ারলুং সাংপো নদীর বিশাল উপত্যকা হিমালয়ের পূর্ব অংশের সর্বোচ্চ বিন্দু নামচা বারওয়ার নিচে অবস্থিত। এই অবস্থানে পৃথিবীর বৃহত্তম ভার্টিকাল ড্রপসগুলির মধ্যে একটি৷ এটা পাহাড়ের চূড়া 7782 মিটার থেকে নদীর তলদেশ 2000 মিটারের নীচে পর্যন্ত বিস্তৃত। (গেটি ইমেজেস)

আঞ্চলিক সহযোগিতার প্রয়োজন

চিনে পরিচালিত অন্তত একটি সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে যে ইয়ারলুং সাংপো নদীর উপর একটি বৃহৎ বাঁধ সকল উপকূলীয় রাজ্যের জন্য উপকারী হতে পারে, যদি তা সহযোগিতামূলকভাবে পরিচালিত হয় ৷ এর ফলে শুষ্ক মরসুমে জলপ্রবাহ বৃদ্ধি পাবে । তবে, দেশগুলির মধ্যে অবিশ্বাসের কারণে এই ধরনের সহযোগিতা অসম্ভব । ভারত ও বাংলাদেশের চিনের সঙ্গে কূটনৈতিক সংলাপ ও ঝুঁকি কমানোর জন্য পরিস্থিতি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার প্রয়োজন পড়তে পারে ৷

চিনের কৌশলগত লক্ষ্যে পরিকাঠামোর ভূমিকা

ইয়ারলুং সাংপো বাঁধটি প্রকৌশল ও পুনর্নবীকরণযোগ্য জ্বালানিতে বিশ্বনেতা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার চিনের উচ্চাকাঙ্ক্ষাকে তুলে ধরে । যদিও বাঁধটির প্রাথমিক উদ্দেশ্য হল বিদ্যুৎ উৎপাদন ৷ এই বাঁধের নির্মাণ তিব্বতে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকেও উদ্দীপিত করবে ৷ যদিও উল্লেখযোগ্য সামাজিক ও পরিবেশগত পরিবর্তনও হবে । এই প্রকল্প চিনের বৃহত্তর কৌশলের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ৷ যার মাধ্যমে তিব্বতকে জাতীয় অর্থনীতিতে আরও ঘনিষ্ঠভাবে সংহত করা সম্ভব হবে ৷ কেন্দ্রীয় ভর্তুকির উপর নির্ভরতা হ্রাস করা সম্ভব হবে ।

অস্ত্র হিসেবে জলের ব্যবহার

কৌশলগতভাবে সংবেদনশীল অঞ্চলে বাঁধটির অবস্থান দ্বৈত উদ্দেশ্যকে তুলে ধরে: জলবিদ্যুৎ উৎপাদন এবং ভূ-রাজনৈতিক প্রভাব । এর প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করে চিন উল্লেখযোগ্য সুবিধা অর্জন করবে । সংঘাতের সময় চিন জলকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করতে পারে ৷ এটা গুরুতর উদ্বেগের বিষয় ৷ প্রচুর পরিমাণে জল ছেড়ে দেওয়ার মাধ্যমে চিন ভয়াবহ বন্যার সৃষ্টি করতে পারে ৷ অসামরিক জীবন ব্যাহত করতে পারে এবং ভারতে গুরুত্বপূর্ণ পরিকাঠামোগত ক্ষতি করতে পারে । উপরন্তু, এই ধরনের পদক্ষেপ সরবরাহ শৃঙ্খল অস্থিতিশীল করবে, লজিস্টিক চ্যালেঞ্জ তৈরি করবে ও অরুণাচল প্রদেশের মতো সংবেদনশীল অঞ্চলে দুর্বলতা বৃদ্ধি করবে ৷ ফলে সীমান্ত এলাকায় ভারতের সামরিক অভিযানকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে । এই দ্বৈত ক্ষমতা বাঁধটিকে চিনের জন্য কৌশলগত সম্পদে পরিণত করবে ।

উপসংহার

ইয়ার্লুং সাংপো বাঁধ আধুনিক পরিকাঠামোর বৈপরীত্যের প্রতীক হতে চলেছে: মানুষের দক্ষতা ও উচ্চাকাঙ্ক্ষার প্রমাণ, তবে গভীর পরিবেশগত, সামাজিক ও ভূ-রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জের উৎসও । যদিও এটা চিনের জ্বালানির পরিসরকে রূপান্তরিত করার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে ৷ তবে এটা তৈরিতে আর্থিক খরচ, পরিবেশগত ও কৌশলগত লাভ অপরিসীম । ভারত ও বাংলাদেশের জন্য প্রকল্পটি জল নিরাপত্তা এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য একটি সম্ভাব্য হুমকি । নির্মাণের অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে বাঁধের সুদূরপ্রসারী প্রভাবগুলি হ্রাস করার জন্য সহযোগিতা ও স্থায়িত্বকে অগ্রাধিকার দেওয়া সকল অংশীদারদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হবে ।

(এই নিবন্ধে প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব । এখানে প্রকাশিত তথ্য এবং মতামত ইটিভি ভারত-এর মতামতকে প্রতিফলিত করে না ৷)

ABOUT THE AUTHOR

...view details