পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / opinion

স্বাস্থ্যই সম্পদ ! স্কুলই তার পাঠ দেয়, তৈরি হয় ভবিষ্যতের ভিত্তি - schooling for health

Schooling For Health: স্বাস্থ্যই সম্পদ- এই প্রবাদবাক্যটি প্রবাদ হয়েই রয়ে গিয়েছে ৷ স্বাস্থ্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ, তা না-জেনেই মানুষ বড় হয়ে ওঠে ৷ এই অভাব শৈশব তো বটেই, পরবর্তী জীবনকেও প্রভাবিত করে ৷ সেই নিয়েই লিখলেন অধ্যাপক কে শ্রীনাথ রেড্ডি ৷ জনস্বাস্থ্য বিষয়ে একজন বিশিষ্ট অধ্যাপক ৷ প্রতিবেদনে প্রকাশিত মতামতটি লেখকের ব্যক্তিগত ৷

ETV Bharat
স্কুলে স্বাস্থ্যের পাঠ

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Apr 12, 2024, 4:55 PM IST

হায়দরাবাদ, 12 এপ্রিল: স্বাস্থ্যই সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ ৷ মানসিক ও শারীরিক বৃদ্ধি, বেঁচে থাকায় স্বাস্থ্যের ভূমিকা, ভালো থাকা, মানসিক স্থিতি, নিজের প্রতি যত্ন নিতে পারা, পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে জীবনটাকে উপভোগ করার ক্ষমতা, নিত্যনতুন দক্ষতা অর্জন, খেলাধুলো, ঘুরে-বেড়ানোর ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যের ভূমিকা উল্লেখযোগ্য ৷ এছাড়া প্রাপ্তবয়স্ক হলে যৌন এবং প্রজননগত কাজকর্মগুলির জন্য স্বাস্থ্য দায়ী ৷

স্বাস্থ্যের জোরেই মানুষ লেখাপড়া করতে পারে, চাকরি ও রোজগার করে, বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক খেলাধুলো বা শিল্পে অংশগ্রহণ করতে পারে ৷ আর এর ফলেই একটা বৃহত্তর সমাজের অংশীদার হয়ে ওঠে একজন ৷ তাই এর একটা ব্যবহারিক মূল্যও আছে ৷ এতদসত্ত্বেও স্বাস্থ্যকে মূল্যবান সম্পদ হিসেবে দেখা হয় না ৷ কেউ তার স্বাস্থ্যের যত্ন না-নিলে সহজেই তার ক্ষতি হতে পারে ৷ আবার বাইরে থেকে একজনের শরীরবৃত্তীয় গঠন, বিশ্বাস এবং আচরণে প্রভাব ফেলতে পারে ৷ সারাজীবন ধরে কীভাবে স্বাস্থ্যকে কীভাবে রক্ষা করতে হবে, তার উন্নতি করা যায়, এসব না শিখেই সমাজে বেশির ভাগ মানুষই বড় হয়ে ওঠে ৷ এমনকী শরীরের উপর সামাজিক, অর্থনৈতিক, পরিবেশগত এবং বাণিজ্যিক প্রভাবের কারণে কত রকম রোগ হতে পারে, অক্ষমতা আসতে পারে এবং অকালেই মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে- এই সবও জানে না ৷ এতে স্বাস্থ্যের যত্ন কীভাবে নিতে হবে, নিজেদের ও পরিবারের সদস্যদের অথবা সমাজে অন্য কাউকে কীভাবে ভালো রাখা যায়, সেই ভাবনায় একটা সীমা টেনে দেয় ৷

শিক্ষার মাধ্যমে একটি জনসংখ্যার স্বাস্থ্য উন্নত করা যায় ৷ প্রত্যেকের স্বাস্থ্য রক্ষা করা যায় ৷ রাষ্ট্রসঙ্ঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সাংস্কৃতিক বিষয়ক ইউনেসকো জোর দিয়ে জানাচ্ছে যে, উন্নয়নের ক্ষেত্রে শিক্ষা অনুঘটক হিসেবে কাজ করে ৷ আর স্বাস্থ্যের অধিকার বুঝে নেওয়াটা যে কোনও মানুষের অধিকারের মধ্যেই পড়ে ৷ এটাও বুঝিয়ে দেয় শিক্ষা ৷ দীর্ঘস্থায়ী উন্নয়নের লক্ষ্যে সাসটেনেবল ডেভেলপমেন্ট গোল 4-এর উপর 2015 সালের ইনচিয়ন ডিক্লারেশনে ঘোষণা করা হয়েছে, শিক্ষার মাধ্যমে কোনও ব্যক্তির দক্ষতা, মূল্যবোধ এবং শরীরী ভাষার আরও উন্নত হয় ৷ এতে সেই ব্যক্তি একটা সুস্থ, সম্পূর্ণ জীবন যাপন করতে পারে ৷ তার জন্য তথ্যসমৃদ্ধ সিদ্ধান্তও নিতে পারে ৷ এমনকী সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হলে সে শিক্ষাকে পাথেয় করে এগিয়ে যেতে পারে ৷ কিন্তু স্বাস্থ্য খারাপ হলে কোনও ছাত্রের পক্ষে শিক্ষার পুরো সুবিধেটুকুও নেওয়া সম্ভব হয়ে ওঠে না ৷ তাই স্বাস্থ্য এবং শিক্ষার মধ্যে একটি পারস্পারিক সম্পর্ক আছে ৷ আমাদের এই বিষয়টি সবাইকে জানাতে হবে ৷

স্কুল এমন একটা জায়গা, যেখানে একজন শিশু সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত হয় ৷ আর সেই প্রভাব আজীবন থেকে যায় ৷ জীবনের বহু ক্ষেত্রে জ্ঞান বৃদ্ধি, বেঁচে থাকার দক্ষতা, মূল্যবোধের জন্ম দেওয়া, পরবর্তী জীবনে রোজগারের জন্য প্রস্তুত করা ৷ এছাড়া ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যৎ জীবনের নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা, যারা একটা সুরক্ষিত সমাজ গড়ে তুলতে পারবে ৷ সুস্বাস্থ্যের প্রচার ও তাকে রক্ষা করতে এইসব বিষয়গুলিই অবশ্য প্রয়োজনীয় ৷

তরুণ প্রজন্ম ব্যক্তিগত জীবনে কীভাবে স্বাস্থ্য রক্ষা করবে, শৌচাগারকে কীভাবে পরিষ্কার রাখবে, স্বাস্থ্যকর খাবারদাবার খাওয়া, যথেষ্ট শারীরিক কাজকর্ম, আসক্তিজনক জিনিসকে এড়িয়ে চলা, মনের চাপ নিয়ন্ত্রণ করার প্রযুক্তি, সমাজে সুন্দরভাবে মিশে যাওয়া- এই সবকিছুই স্কুলজীবনে একেবারে শৈশব থেকে একটি শিশুর মাথায় ঢুকিয়ে দেওয়া হয় ৷ ট্রাফিকে নিরাপদে চলাফেরা করা এবং প্রাথমিক চিকিৎসা শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় ৷ অন্যদিকে হেনস্থার ফলে যে ক্ষতি হয়, শরীরিক অত্যাচার, ভেদাভেদ এবং লিঙ্গবৈষম্যের মতো বিষয়ে আলোচনার ফলে ভালো আচরণ গড়ে তুলতে পারে ৷

চারদিক পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন এবং সবুজায়ন করে, বাতাস চলাচলের সুবন্দোবস্ত এবং ক্লাসে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা, খেলাধুলোর জন্য় মাঠ, বিশেষভাবে সক্ষমদের জন্য বন্ধুত্বপূর্ণ পরিকাঠামো, স্বাস্থ্যকর খাবার এবং তামাক, মদ্য এবং মাদক জাতীয় দ্রব্য দূরে রাখার জন্য় কঠিন নিয়মকানুন প্রয়োগের মাধ্যমে স্কুলগুলিও স্বাস্থ্যের কথা তুলে ধরতে পারে ৷ তারা মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য কাউন্সেলিংয়ের বন্দোবস্ত করতে পারে, যোগাসন ও ধ্যান করার টেকনিক, নিয়মিত দৃষ্টিশক্তি ও শ্রবণশক্তির পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে পারে স্কুলগুলি ৷ এর ফলে শেখার পথে শারীরিক বাধাগুলি দূর হতে পারে ৷ মানসিক স্বাস্থ্যের চ্যালেঞ্জগুলিকে জয় করতে ছাত্রদের একে অপরকে সাহায্য করতে হবে ৷ অথবা শারীরিক বাধা থাকলে সেগুলিও বাধাগুলিও কাটিয়ে উঠতে বিশেষ দল তৈরি করতে হবে ৷ এইভাবে তারা একে অপরের প্রতি সহমর্মিতা দেখাতে শিখবে ৷ যুদ্ধবিধ্বস্ত দুনিয়ায় সম্পর্ক গড়ার ক্ষেত্রে এটি জীবনের একটি মূল্যবান গুণ হয়ে উঠবে ৷

স্কুলের স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে প্রশিক্ষিত নার্স থাকলে তা একাধিক স্বাস্থ্য সমস্যার সমাধানে সাহায্য করবে ৷ এই সমস্যাগুলির মধ্যে সাধারণ জ্বর হতে পারে, আবার জীবনের প্রথম রজঃস্রাব সংক্রান্ত সমস্যা থাকতে পারে ৷ অন্যদিকে এপিলেপ্সি অথবা হাইপোগ্লাইসেমিয়ার চিকিৎসার মতো বিশেষ সমস্যাও থাকতে পারে ৷ এই রোগটিতে রক্তে শর্করার মাত্রা কমে যায় ৷ জুভেনাইল ডায়েটের কারণে এটি হয় ৷

পরিবারে স্বাস্থ্যকর আচারণবিধি প্রচারের ক্ষেত্রে ছাত্রছাত্রীরা খুব ভালো কাজ করতে পারে ৷ তারা স্বাস্থ্যকর নীতি চালুর ক্ষেত্রে চ্যাম্পিয়নও হয়ে উঠতে পারে ৷ তবে তাদের সঠিক তথ্য দিতে হবে এবং যোগাযোগের দক্ষতাকে আরও উন্নত করতে হবে ৷ যে পড়ুয়ারা তামাক সেবনের ক্ষতিকর দিকগুলির কথা জানতে পারবে, তারা তাদের বাবা-মা অথবা পরিবারের অন্য সদস্যদের এই ধূমপানের অভ্যাস ছাড়াতে পারে ৷ তারা দলগত খেলা বা সপরিবার বেড়াতে যেতে পারে ৷ এতে পরিবারের সদস্যদের শারীরিক কসরত আরও বৃদ্ধির জন্য উৎসাহিত করতে পারবে ৷

প্রাইমারি স্কুল থেকে শুরু করে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত বহু বছর ধরে জীবনে ধাপে ধাপে বিভিন্ন দক্ষতা অর্জন করতে পারে একজন পড়ুয়া ৷ ছাত্রছাত্রীর জ্ঞানেরও বিস্তার ঘটতে পারে ৷ একটি নির্দিষ্ট কাঠামোর মধ্যে থেকে শিক্ষা পাওয়া ছাড়াও একসঙ্গে শেখা এবং দলবদ্ধ প্রজেক্টও শেখার ক্ষেত্রে বেশ উপযোগী হয়ে উঠতে পারে ৷ এমনকী নিজে নিজেকে কীভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া যায়, তাও জানতে পারবে একজন ৷ তরুণরা স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বার্তাগুলি খুব একটা গ্রহণ করে না ৷ যদি না এর পিছনে কী কারণ রয়েছে, তা তাদের বোঝানো হয় ৷ তাদের শুধু এটা শোনালেই হবে না যে 'কী করতে হবে' ৷ কিন্তু 'কেন তা করব' তাও বোঝাতে হবে ৷ এই ধরনের শিক্ষাদীক্ষা স্কুলই সবচেয়ে ভালোভাবে দিতে পারে ৷ কারণ, স্কুলে একজন পড়ুয়া তার শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পাচ্ছে ৷ সমাজে জ্ঞানের বিশ্বস্ত উৎস শিক্ষক ৷ এমনকী যৌনশিক্ষার মতো সংবেদনশীল বিষয়গুলিকে 'দু'টি লিঙ্গের মধ্যে সুস্থ সম্পর্ক' হিসেবে চিহ্নিত করা যায় ৷ এতে লিঙ্গসাম্যের উপর জোর দেওয়া হবে এবং বিপরীত লিঙ্গকে শ্রদ্ধা করতে শিখবে ৷

বিভিন্ন প্রোগ্রামের নীতিগুলিও স্বাস্থ্যের উপর ভীষণ প্রভাব ফেলতে পারে ৷ পড়ুয়ারা নীতিপ্রণয়নকারীদের পরামর্শ দিতে পারে ৷ যাতে বর্তমানে স্বাস্থ্য রক্ষা থেকে শুরু করে ভবিষ্যতকেও নিরাপদ করে গড়ে তোলা যায় ৷ ভারতে স্কুলপড়ুয়ারা তামাক সেবন নিয়ন্ত্রণ নিয়ে প্রচার করেছে, বায়ুদূষণ হ্রাস এবং প্লাস্টিক ব্যাগ নির্মূল করার বিষয়ে প্রচার করেছে ৷ তারা নিশ্চিত করেছে যে স্কুলগুলি 'তামাক বর্জন' নীতি গ্রহণ করেছে ৷ তাই স্কুল চত্বরে কোনও স্কুল কর্মীই তামাক সেবন করতে পারবে না ৷ স্কুলে রান্নার জন্য একটা বাগান তৈরি করেছে পড়ুয়ারা ৷ এতে একদিকে যেমন সবুজায়ন হয়েছে, তেমনই তা সুস্বাস্থ্যের উপযোগীও হয়ে উঠেছে ৷

পড়ুয়ারা কীভাবে তাদের স্বাস্থ্য রক্ষা এবং তা নিয়ে প্রচার করতে পারবে- স্কুলের অবশ্যই এই বিষয়গুলি পড়ুয়াদের জানানো উচিত ৷ এর ফলে পড়ুয়ারা নিজেরাই প্রতিদিন কী করা উচিত আর কী উচিত নয়, তা বেছে নিতে পারবে ৷ এর পাশাপাশি জনগণের নীতিগুলিকেও প্রভাবিত করতে পারবে ৷ এবং সামাজিক রীতিনীতি, যেগুলি তাদের স্বাস্থ্য ও ভালো থাকার উপর প্রভাব ফেলে ৷

জলবায়ু পরিবর্তন একটা চ্যালেঞ্জ, যা দিনে দিনে সমূহ বিপদ হয়ে উঠছে ৷ আর এই বিপদ বর্তমান স্বাস্থ্যের উপর গুরুতর প্রভাব ফেলছে ৷ পাশাপাশি দশকের পর দশক ধরে ভবিষ্যত জীবনকেও প্রভাবিত করতে থাকবে ৷ বায়ুদূষণ, জল এবং মাটি নিরন্তর মানুষের শরীরের ক্ষতি করছে ৷ মেরুকরণজনিত সংঘর্ষ এবং সংঘাত মানুষের মধ্যে সম্প্রীতির সম্পর্ককে নষ্ট করছে ৷ এর ফলে মানুষের মনের প্রভূত ক্ষতি হচ্ছে ৷ এমনকী শারীরিক ক্ষতিও হচ্ছে ৷ তরুণদের অবশ্যই শেখা উচিত যে, কীভাবে যৌন প্রভাব থেকে তারা রেহাই পেতে পারে, যা তাদের স্বাস্থ্যের উপর কুপ্রভাব ফেলবে ৷ স্কুলগুলি পড়ুয়াদের নাগরিকের ভূমিকা নিয়ে প্রশিক্ষণ দিতে পারে- ব্যক্তিগত ভূমিকা এবং সামগ্রিক ভূমিকা ৷

মানুষের শরীর কীভাবে কাজ করে ? শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ একে অপরের সঙ্গে সহযোগিতা করে কাজ করে ৷ এবিষয়ে স্কুলগুলির সঠিক তথ্য এবং স্বচ্ছ জ্ঞান দেওয়া উচিত ৷ খাদ্যাভ্যাস থেকে শুরু করে পরিবেশগত ঝুঁকি, যে কারণে অঙ্গপ্রত্যঙ্গগুলির মধ্যে সহযোগিতার সম্পর্ক নষ্ট হয়- এমন একাধিক বিষয়ে সচেতনতা বিষয়ক জ্ঞান দিতে পারে স্কুল ৷ তখনই কেবল পড়ুয়ারা নিজেদের ব্যক্তিগত পছন্দ কী, তা ঠিক করতে পারবে ৷ পাশাপাশি সমাজে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন করতে পারবে ৷ সম্প্রতি আমার একটি বই 'পালস টু প্ল্যানেট: দ্য লং লাইফলাইন অফ হিউম্যান লাইফ'-এ তরুণদের জন্য সামগ্রিকভাবে বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে ৷ তবে স্কুলগুলি নিশ্চয় এর থেকে আরও ভালো করবে!

(মতামত লেখকের একান্ত ব্যক্তিগত)

আরও পড়ুন:

  1. হাতিয়ার শিক্ষা-সচেতনতা, পথশিশুদের ‘শৈশব’ ফেরাতে পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক দিবস
  2. বিভিন্ন শারীরিক সমস্যার সমাধান প্রোটিন খাবার, পাতে রাখতে পারেন এইগুলি
  3. 'হোমিও পরিবার! এক স্বাস্থ্য, এক পরিবার' প্রতিপাদ্যে পালিত হচ্ছে বিশ্ব হোমিওপ্যাথি দিবস

ABOUT THE AUTHOR

...view details