মল্লিকবাজার, 7 অক্টোবর: জমিদারদের পদবি অনুসারে এলাকার নাম হয়েছে মল্লিকবাজার ৷ পশ্চিম মেদিনীপুরের সেই মল্লিকবাড়ির দুর্গাপুজো প্রায় 300 বছরের পুরনো ৷ প্রাচীন রীতি মেনে আজও প্রতিপদেই পুজো শুরু হয় এখানে ৷ তবে কামান দাগার ইতিহাস ও জমিদার বাড়ির আড়ম্বর বিলীন হলেও গোস্বামী মতে এখনও ফলমূল সহকারে মায়ের পুজো হয় ।
কথিত আছে, একসময় অবিভক্ত পশ্চিম মেদিনীপুরে মল্লিকদের জমিদারি প্রথা ছিল ৷ রাজা-মহারাজাদের সঙ্গে সখ্যতার খাতিরে মল্লিকদের প্রভাব প্রতিপত্তি ছিল প্রচুর । অনেকগুলো গ্রাম নিয়ে জমিদার এবং সেই জমিদারের মধ্যে অন্যতম ছিল মল্লিকবাড়ি । যার প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন জন্মেঞ্জয় মল্লিক । তাঁর আমল থেকে দুর্গাপুজোর সূচনা । শোনা যায়, এক সময় প্রতিপদের দিন কামান দেগে পুজোর সূচনা হত ৷ যা চলত দ্বিতীয়া থেকে দশমী পর্যন্ত ৷ সেই সময় রুপোর গয়না পরে বের হতেন মা । একচালার প্রতিমা ডাকের সাজে সাজানো হত ।
বর্তমান প্রজন্মের থেকে শোনা গিয়েছে, সেই সময় বেনারস থেকে পুরোহিত এনে জাঁকজমকভাবে পুজো হত । বংশধরেরা ছাড়াও দূর-দূরান্তের বহু রাজারা পুজোর আমন্ত্রণ পেতেন ৷ 9 জন পুরোহিত মিলে মল্লিকবাড়ির দুর্গাপুজো করতেন ৷ প্রতিদিন কুড়ি মণ চালের নৈবেদ্য সাজিয়ে দেওয়া হত দেবীর সামনে । পুজোর ক'দিন বসত কীর্তন, চণ্ডীপাঠ ও কৃষ্ণযাত্রার আসর । অষ্টমীর দিন হত কুমারীপুজো । সন্ধিপুজোর সময় কামান দাগার রেওয়াজ ছিল ৷ সেই আওয়াজ শুনে শহরের অন্যান্য মণ্ডপে সন্ধিপুজো শুরু হত ৷ মল্লিকবাড়িতে বলি প্রথা ছিল না ৷