কলকাতা: স্বাস্থ্যের জন্য ভীষণ উপকারী টক দই। এর মধ্যে থাকে ক্যালশিয়াম, প্রোটিন ও প্রো-বায়োটিক। এটি অন্ত্রের স্বাস্থ্যকে ভালো রাখতে সাহায্য করে । প্রচণ্ড গরমে টক দই ভীষণ উপকারী ৷ তবে বর্ষার স্যাঁতসেঁতে মরশুমে টকদই খাওয়া উপকারী কি না, তা নিয়ে অনেকের মনে সন্দেহ রয়েছে ৷ অনেকে ভেবে থাকেন দই বর্ষাকালে খেলে ঠান্ডা লেগে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে বা হজমেও সসম্যা হয় ৷ জেনে নিন, বর্ষাকালে দই খাওয়া উচিত কি না ?
দই পুষ্টিগুণে ভরপুর । সেজন্য বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দেন যারা দুধ পছন্দ করেন না তাদের খাদ্যতালিকায় দই রাখা উচিত। যা পেটের জন্য খুবই উপকারী। এছাড়াও দই পেশি বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় প্রোটিন সমৃদ্ধ ৷ হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ক্যালসিয়াম ৷ এতে রয়েছে ভিটামিন বি-12 যা স্নায়ুতন্ত্রের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ ৷ এছাড়াও দইয়ে রয়েছে পটাসিয়াম, ল্যাকটিক অ্যাসিড এবং প্রো-বায়োটিক, যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে ৷
কিন্তু বর্ষাকালে দই খেলে সর্দি-কাশি নিয়ে অনেকের ভুল ধারণা থাকে । তবে বিশেষজ্ঞরা জানান, এটা নিছকই একটি মিথ । তবে এখানে মনে রাখতে হবে ঠান্ডা দইয়ের বদলে ঘরের তাপমাত্রায় দই খাওয়া ভালো । দইয়ে থাকা উপযোগী ব্যাকটেরিয়া হজমে সাহায্য করে । তাছাড়া বর্ষাকালে দই খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য কমে ৷ এছাড়াও এটি রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে ।
2014 সালে 'জার্নাল অফ নিউট্রিশন' (Journal of Nutrition)-এ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে জানা যায়, বর্ষাকালে দিনে দু'বার 200 গ্রাম দই খাওয়া মানুষের কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্য়া কমে যাওয়ার প্রবণতা লক্ষ্য করা গিয়েছিল। এই গবেষণায় অংশ নিয়েছিলেন, আমেরিকান সোসাইটি ফর নিউট্রিশনের ড্যান ব্র্যান্ডের পুষ্টিবিদ ৷ তিনি জানান, বর্ষাকালে দই খেলে হজমশক্তি ভালো হয় এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা কমে ।
এছাড়াও বিশেষজ্ঞরা জানান, বর্ষাকালে পরিমিত পরিমাণে দই খাওয়া ডায়রিয়া প্রতিরোধে সাহায্য করতে পারে । একইভাবে দইয়ে উপস্থিত প্রোটিন, ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন ডি-এর মতো পুষ্টি উপাদান বর্ষাকালে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে । তবে দই খাওয়ার অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা থাকা সত্ত্বেও বর্ষাকালে এটি খাওয়ার সময় কিছু সতর্কতা মেনে চলাই ভালো ।
দই হজম হতে বেশি সময় নেয় । এই কারণেই রাতের দিকে রাইতা বা বাটারমিল্ক হিসাবে দই সেবন করা যেতে পারে ৷ তবে পরিমাণের তুলনায় বেশি দই খেলে হজমের সমস্যা হতে পারে ৷
বিশেষ দ্রষ্টব্য: এই প্রতিবেদনে উল্লেখিত তথ্য নির্দিষ্ট গবেষণা থেকে প্রাপ্ত এবং এর মতামতও ওই গবেষণার সঙ্গে যুক্ত গবেষক-বিশেষজ্ঞের ব্যক্তিগত ৷ শুধুমাত্র ধারণা আর সাধারণ জ্ঞানের জন্যই এই প্রতিবেদনটি লেখা হয়েছে ৷ এখানে উল্লেখিত কোনও পরামর্শ অনুসরণের আগে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন ৷ যাদি আগে থেকেই কোনও স্বাস্থ্য সমস্যা থেকে থাকে, তা আগেই চিকিৎসককে জানাতে হবে ৷