কলকাতা, 6 ফেব্রুয়ারি: প্রবাদপ্রতীম পরিচালক, সর্বকালের সেরা পরিচালক কিংবা কিংবদন্তি পরিচালক যে তকমাই দেওয়া হোক না কেন সেটা যেন কম মনে হয় ৷ তিনি ঋত্বিক ঘটক। আজ পরিচালকের মৃত্যুবার্ষিকীতে স্মরণ করলেন গৌতম ঘোষ ৷ তাঁকে খুব কাছ থেকে দেখার সুযোগ হয় জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত পরিচালকের।
ঋত্বিক ঘটককে নিয়ে স্মৃতিচারণায় তিনি ইটিভি ভারতকে বলেন, "ঋত্বিক দা'র এক্সপ্রেশনগুলো দারুণ মজার ছিল। আমাকে খুব স্নেহ করতেন। একটা মজার ঘটনা বলি। তখনও আমি ফিচার ফিল্ম বানাইনি। ডকুমেন্টারি ফিল্ম বানাই। আমি 'হাংরি অটাম' (Hungry Autumn) নামে একটা ডকু ফিল্ম বানিয়েছিলাম। অনেক পুরস্কার পেয়েছিল সেটা। দুর্ভিক্ষের বাস্তব চিত্র উঠে এসেছিল ডকুমেন্টরিতে। আর সেটা দেখে আমাকে পশ্চাৎদেশে লাথি মেরেছিলেন ঋত্বিক দা। ওটা ছিল ওনার আদর। ওভাবেই আদর করতেন। আমাকে লাথি মেরে বলেন, ফাটিয়ে দিয়েছিস একেবারে। আমি সবাইকে বলব, গৌতম একটা ডকুফিল্ম বানিয়েছে। ফাটিয়ে দিয়েছে একেবারে।"
গৌতম ঘোষের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল বর্তমান প্রজন্মের পরিচালক ঋত্বিক ঘটকের কাছ থেকে কি শেখার আছে? তিনি বলেন, "প্রথমে যেটা শেখার আছে সেটা হল কোনও কম্প্রোমাইজ না করা। এটা ঋত্বিকদা বলতেন। মৃণাল দাও তাই বলতেন। নিজে যেটা ভালো মনে করছ, নিজের বিশ্বাস থেকে সেটা করো। সিনেমার ভাষার প্রতি শ্রদ্ধা রেখে তাকে নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা করো। কিন্তু তাকে নীচের তলায় নামিও না। নিজের দেশ, মাইথোলজি, ইতিহাস নিয়ে চর্চা করতেন।"
পরিচালক গৌতম ঘোষ আরও বলেন, "ওনার 'যুক্তি তক্কো গপ্পো' ছবিটা থেকে অনেককিছু শেখার আছে। দেশভাগ নিয়ে ওর মনে অনেক বেদনা ছিল। দেশভাগের পর মধ্যবিত্ত জীবনের যে পরিণতি তা তিনি মরমে মরমে বুঝেছিলেন। ছবিতেও তা তুলে ধরেছিলেন নিপুণভাবে।" তিনি আরও বলেন, "ঋত্বিকদা পুণে ইনস্টিটিউট-এর ভাইস প্রিন্সিপাল ছিলেন ৷ তখন দারুণ দারুণ ছাত্র ছাত্রী উপহার দিয়েছেন ৷ ক্লাস রুম থেকে বেরিয়ে গাছের তলায় যেটাকে' উইসডম ট্রি' বলা হত সেখানে আড্ডা মারতে মারতে পড়াতেন।" গৌতম ঘোষ সবশেষে বলেন, "উনি বলতেন সিনেমাকে জীবনে ধারণ করতে হবে। সিনেমা একটি শিল্প। আর তাই ঋত্বিকদা সিনেমা মাধ্যমকেই বেছে নিয়েছিলেন। "