নয়াদিল্লি, 11 অগস্ট: আদানি গোষ্ঠীর পর এবার সেবি-কে সরাসরি আক্রমণ করল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বেসরকারি সংস্থা হিন্ডেনবার্গ ! হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে যে, আদানি স্টক কেলেঙ্কারিতে ব্যবহৃত বিতর্কিত সংস্থাগুলিতে SEBI চেয়ারপার্সনের অংশীদারিত্ব ছিল ।
গতবার হিন্ডেনবার্গের অভিযোগ ছিল আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ৷ এবার ওই মার্কিন সংস্থার রিপোর্টের সরাসরি নিশানায় ভারতের বাজার নিয়ন্ত্রক সেবি (SEBI)। হিন্ডেনবার্গ রিপোর্টে বলা হয়েছে যে, সেবি চেয়ারপার্সন মাধবী পুরি বুচও আদানি গ্রুপের সঙ্গে যুক্ত। এই কারণেই 18 মাসেও তারা আদানি গ্রুপের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি । হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ তাদের এক্স হ্যান্ডেলে এই দাবি করেছে ।
সব মিলিয়ে ফের একবার হিন্ডেনবার্গের নিশানায় আদানি গ্রুপ । গোপন নথির উল্লেখ করে হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ দাবি করেছে যে, আদানি কেলেঙ্কারিতে ব্যবহৃত অফশোর সংস্থাগুলিতে সেবি (SEBI) প্রধানের অংশীদারিত্ব ছিল। হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ তার অভিযোগে বলেছে যে, এপ্রিল 2017 থেকে মার্চ 2022 পর্যন্ত, মাধবী পুরি বুচ সেবির সদস্য এবং চেয়ারপার্সন ছিলেন। সিঙ্গাপুরে আগোরা পার্টনার্স নামে একটি পরামর্শক প্রতিষ্ঠানে তার 100 শতাংশ শেয়ার ছিল। 16 মার্চ, 2022-এ সেবি চেয়ারপার্সন হিসাবে তার নিয়োগের দুই সপ্তাহ আগে, মাধবী পুরি বুচ তাঁর স্বামী ধাওয়াল বুচের নামে ওই কোম্পানিতে তাঁর শেয়ার স্থানান্তর করেছিলেন ।
হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ তার অভিযোগে বলেছে যে হুইসেলব্লোয়ার-এর (The Whistleblower) নথি অনুযায়ী, বর্তমান সেবি প্রধান মাধবী পুরি বুচের স্বামী আদানির বিতর্কিত ফান্ডে অংশীদারিত্ব করেছেন। এই ফান্ড আদানির আর্থিক কেলেঙ্কারিতে (আদানি মানি সিফোনিং স্ক্যান্ডাল) ব্যবহার করা হয়েছে ।
হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের দাবি, 2019 সালে যখন মাধবী পুরী বুচকে সেবির ডিরেক্টর হিসেবে নিযুক্ত করা হয়, তখন তাঁর স্বামী ধবল বুচকে ব্ল্যাকস্টোনের উপদেষ্টা করা হয়েছিল। হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের অভিযোগে, ধবল বুচ এর আগে কোনও রিয়েল এস্টেট সম্পর্কিত তহবিল বা শেয়ারবাজারে কাজ করেননি বলে দাবি করলেও এ বিষয়ে তাঁর যথেষ্ট অভিজ্ঞতা রয়েছে । কারণ, তিনি ইউনিলিভারে চিফ প্রকিউরমেন্ট অফিসার হিসেবে দীর্ঘদিন ছিলেন ।
হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের অভিযোগ, গত বছর আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ওঠা সুনির্দিষ্ট অভিযোগ সত্ত্বেও কোনও ব্যবস্থা নেয়নি সেবি ৷ আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে অভিযোগ সামনে আসার পর 18 মাস পেরিয়ে গিয়েছে ৷ তবুও সেবি এ বিষয়ে পদক্ষেপ করতে কোনও আগ্রহ দেখায়নি । মরিশাসের আদানি গ্রুপের 'কালো টাকা'র নেটওয়ার্ক সম্পর্কে সম্পূর্ণ তথ্য দেওয়ার পরেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। উল্টে, 2024 সালের জুনে, সেবি হিন্ডেনবার্গ রিসার্চকেই শো কজ নোটিশ দেয়।
এই প্রসঙ্গে সেবি প্রধান মাধবী পুরি বুচ এবং তাঁর স্বামী ধবল বুচ একটি যৌথ বিবৃতি জারি করেছেন। রবিবার সকালে বিবৃতি দিয়ে, তাঁরা দুজনেই হিন্ডেনবার্গের করা এই সব অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন এবং এই সব অভিযোগের কোনও সত্যতা নেই বলে দাবি করেছেন । তাঁদের দাবি, প্রয়োজনে সমস্ত নথি যে কোনও কর্তৃপক্ষকে তাঁরা প্রমাণ হিসাবে দিতে প্রস্তুত ।