বস্তার, 28 জানুয়ারি: তার যাজক বাবার শেষ ইচ্ছা পূরণ করতে, রমেশ বাঘেল গ্রাম, প্রশাসন এমনকি বিচার বিভাগের বিরুদ্ধেও লড়াই করেছিলেন। কিন্তু, শেষ পর্যন্ত তিনি সব জায়গা থেকেই শুধু হতাশা পেলেন ৷ কারণ, রমেশ বাঘেল তাঁর বাবার শেষ ইচ্ছা পূরণ করতে পারলেন না।
খ্রিস্টান যাজক সুভাষ বাঘেল গত 7 জানুয়ারি তার নিজের গ্রাম ছিন্দওয়াড়ায় মারা যান। তাঁর ইচ্ছানুযায়ী পরিবার গ্রামেই তাঁকে সমাধিস্থ করতে যান। কিন্তু, তখন গ্রামবাসী এসে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। গ্রামের বাসিন্দাদের বিক্ষোভে এরপর পরিবারের লোকজন তাদের ব্যক্তিগত জমিতে বাবাকে সমাধিস্থ করতে যান। কিন্তু গ্রামবাসীরা তারও বিরোধিতা করেন। ফলে বাবার মরদেহ মেডিকেল কলেজে পড়ে থাকে।
বাবার ইচ্ছে পূরণে নিজের গ্রামেই শেষকৃত্য সম্পন্ন করার জন্য তাঁর ছেলে রমেশ বাঘেল জেলা প্রশাসনের কাছে আবেদন করেন। ফলে মেলেনি ৷ তাই এরপর বিষয়টি হাইকোর্টে পৌঁছায়। যেখানে ছত্তিশগড় সরকার আইনশৃঙ্খলার কথা উল্লেখ করে শেষকৃত্যের বিষয়ে একটি রিপোর্ট পেশ করে। হাইকোর্ট থেকে রমেশ বাঘেলের পরিবার কোনও সন্তোষজনক নির্দেশ না পাওয়ায় রমেশ সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন।
প্রিম কোর্টে মামলার শেষ শুনানি হয়েছিল 22 জানুয়ারি। বিচারপতি বিভি নাগারথনা ও বিচারপতি সতীশ চন্দ্র শর্মার সমন্বয়ে গঠিত দুই সদস্যের এসসি বেঞ্চ এ বিষয়ে ভিন্ন মত দিয়েছেন। বিচারপতি নাগারথনা আবেদনকারী রমেশ বাঘেলকে তাঁর ব্যক্তিগত কৃষি জমিতে বাবাকে সমাধিস্থ করার অনুমতি দেন। একই সঙ্গে বিচারপতি সতীশ চন্দ্র শর্মা বলেন, মৃতদেহকে শুধুমাত্র খ্রিস্টানদের জন্য নির্ধারিত জায়গায় সমাধিস্থ করতে হবে। সিদ্ধান্ত ওই দিনের জন্য সংরক্ষিত ছিল। এর পর 27 জানুয়ারি, সুপ্রিম কোর্ট তার রায়ে বলে, যাজক সুভাষ বাঘেলের মৃতদেহ শুধুমাত্র কারকাপাল গ্রামের খ্রিস্টানদের জন্য নির্ধারিত জায়গায় সমাধিস্থ করা উচিত।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ পাওয়ার পর সোমবার রাত 10টা নাগাদ পৈতৃক গ্রাম ছিন্দওয়াড়া থেকে প্রায় 30 কিলোমিটার দূরে কার্কাপালে সমাধিস্থ করা হয়। এই সামাজিক ও আইনি জটিলতায় মৃত যাজক সুভাষ বাঘেলের দেহ ডিমরাপাল হাসপাতালের মর্গে 20 দিন পড়েছিল। এই ঘটনায় সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতিরা দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ‘‘বাবাকে সমাধিস্থ করার জন্য সুপ্রিম কোর্টে আসতে হল? দেহ পড়ে রয়েছে? হাই কোর্ট, পঞ্চায়েত কেউ এর সমাধান দিতে পারল না? খুবই বেদনাদায়ক।’’