পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

By

Published : May 8, 2020, 9:06 PM IST

ETV Bharat / state

"মরলে বাড়িতেই মরব", হেঁটেই বাড়ির পথে হরিরামপুরের 60 জন

হরিরামপুরের বাসিন্দা শান্তা হাঁসদা বলেন, গতকাল রাত থেকে তাঁদের পেটে কিছু পড়েনি । এভাবেই না খেয়ে তাঁরা হেঁটেই চলেছেন । হাতে কিছু পয়সা থাকলেও দোকানপাট বন্ধ ৷ ফলে তাঁরা খাবারও কিনতে পারছেন না ।

60 people are returning home from andhrapradesh to north dinajpur, west bengal
অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে পায়ে হেঁটে দক্ষিণ দিনাজপুরে ফিরছেন 60 জনের দল

রায়গঞ্জ, 8 মে : " মরলে নিজের বাড়িতে এসেই মরব । ওখানে মরলে মৃতদেহের কেউ খোঁজ রাখবে না ।" আর তাই অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে হেঁটেই রওনা দিয়েছেন দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার হরিরামপুরের বিরাহার গ্রামের 60 জন । প্রায় অভুক্ত অবস্থাতেই তাঁরা বাড়ির উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন । বিহার ও অন্ধ্রপ্রদেশ সরকার তাঁদের কিছুটা সাহায্য করলেও রাজ্য সরকারের তরফে এখনও কোনও সাহায্য পায়নি বলে অভিযোগ ৷

মাস তিনেক আগে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার হরিরামপুর থানার পুণ্ডরী গ্রাম পঞ্চায়েতের 60 জন শ্রমিক অন্ধ্রপ্রদেশে রাজমিস্ত্রির কাজ করতে গিয়েছিলেন । স্ত্রী এবং সন্তানকে সঙ্গেই নিয়েই গিয়েছিলেন তাঁরা । কিন্তু লকডাউনের জেরে কাজ বন্ধ হয়ে যায় । কাজ হারিয়ে পরিবারকে নিয়ে অথৈই জলে পড়েন তাঁরা । কোনওদিন একবেলা আবার কোনওদিন না খেয়ে দিন কাটতে থাকে।

এরপর হেঁটেই বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন তাঁরা । অন্ধ্রপ্রদেশ পুলিশ তাঁদের দেখতে পেয়ে একটি গাড়িতে বিহার পর্যন্ত পৌঁছে দেয় । সেখান থেকে কিছুদূর হাঁটার পর বিহার পুলিশের নজরে আসে তাঁরা । বিহার পুলিশ তাঁদের পূর্ণিয়া মোড়ে নামিয়ে দেয় । সেখান থেকে হাঁটা শুরু করেছেন তাঁরা । আজ বেলা 12 টা নাগাদ রায়গঞ্জ থানার শিলিগুড়ি মোড়ে 34 নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে একটি গাছের তলায় বিশ্রাম নিতে দেখা গেল তাঁদের ।

হরিরামপুরের বাসিন্দা শান্তা হাঁসদা বলে, গতরাত থেকে তাদের পেটে কিছু পড়েনি । এভাবেই না খেয়ে তাঁরা হেঁটে চলেছেন । হাতে কিছু পয়সা থাকলেও দোকানপাট বন্ধ ৷ ফলে তাঁরা খাবারও কিনতে পারছেন না । 60 জন বুধবার রওনা হলেও এখন তাঁরা 11 জন একসঙ্গে আছেন ।

এক শ্রমিক দিল কুমার হাঁসদা বলেন, বাপ দাদারা কোনওদিন এত দূর হাঁটেননি । জীবন বাঁচাতে তাঁরা হাটছেন । অপরিচিত জায়গায় তাঁদের মৃত্যু হলে কেউ দেখতেও আসবে না । কিন্তু নিজের জায়গায় মারা গেলে পরিবারের লোকেদের সামনে মৃত্যু হবে । এই জন্যই তাঁরা হেঁটে বাড়ির উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন ।

ABOUT THE AUTHOR

...view details