নন্দীগ্রাম, 9 নভেম্বর: 2007 সালের 14 মার্চ, বাম সরকারের আমলে জমি অধিগ্রহণ নিয়ে গোলমালের জেরে মৃত্যু হয় নন্দীগ্রামের একাধিক কৃষকের । পরে 10 নভেম্বর ফের নন্দীগ্রামে 'সূর্যোদয়' ও বামেদের ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াইয়ে অপহৃত ও খুন হন বহু ব্যক্তি । এরপর 2008 সাল থেকে নন্দীগ্রামে ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির ব্যানারে তৃণমূল নেতা তথা মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী নন্দীগ্রাম আন্দোলনের শহিদদের স্মরণসভা করে আসছেন । এবছরও সেই সভা নন্দীগ্রামের তেখালিতে ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির উদ্যোগে আগামীকাল মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত হবে ৷ সভাতে উপস্থিত থাকবেন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী । এদিকে সোমবার বিকেলে অধিকারী পরিবারের বিরোধী গোষ্ঠী হিসেবে পরিচিত রামনগরের বিধায়ক অখিল গিরির ছেলে তথা তৃণমূল যুবর সহ-সভাপতি সুপ্রকাশ গিরি ফেসবুক পোস্ট করে একই দিন বিকেলে শহিদ-স্মরণে তৃণমূলের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন । যে অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন রাজ্যের আরেক মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম ও একাধিক তৃণমূল নেতা । এই সংবাদ জানাজানি হতেই জেলাজুড়ে শুরু হয়েছে জোর রাজনৈতিক চর্চা । প্রশ্ন উঠছে, নন্দীগ্রাম আন্দোলনের পেটেন্ট কার হাতে থাকবে, শুভেন্দু অধিকারীর হাতে নাকি দল তৃণমূলের হাতে !
এদিকে, গত কয়েক মাসে তৃণমূলের রাজনৈতিক কর্মসূচিতে শুভেন্দু অধিকারীর অনুপস্থিতি মন্ত্রীর দলবদলের জল্পনা বাড়িয়েছে । দলের ব্যানারের পরিবর্তে শুভেন্দু অধিকারী 'অরাজনৈতিক' সভা করছেন ৷ সেই সভার আয়োজন করছেন দাদার অনুগামীরা ৷ এর মধ্যে কয়েকদিন আগে নন্দীগ্রামে বিজয়া সম্মিলনীর একটি অনুষ্ঠান থেকে 10 নভেম্বর নন্দীগ্রামের গোকুলনগর হাইস্কুল মাঠে 'রক্তাক্ত সূর্যোদয়ে'র বর্ষপূর্তিতে বিরাট জনসভার ডাক দেন শুভেন্দু অধিকারী । এবার একইদিনে নন্দীগ্রামের হাজরাকাটাতে শহিদস্মরণে জনসভা ঘোষণা করলেন সুপ্রকাশ গিরি ৷ তাঁর দাবি, অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম । সবচেয়ে বড় কথা, অনুষ্ঠানের আয়োজক সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস ৷ সুপ্রকাশ গিরির ঘোষণার পরেই রাজ্যে পালাবদলের হাতিয়ার 'নন্দীগ্রাম আন্দোলন' কার দখলে থাকবে তা নিয়েই টানাপোড়েন শুরু হয়েছে ৷
যদিও ফিরহাদ হাকিমের সভাকে গুরুত্ব দিচ্ছেন না অনেকেই। ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির সদস্য তথা তৃণমূল কংগ্রেসের নন্দীগ্রাম বিধানসভা কমিটির চেয়ারম্যান মেঘনাথ পাল ৷ তাঁর মতে, নন্দীগ্রাম আন্দোলন আর শুভেন্দু অধিকারী সমার্থক ৷